কবি শফিকুল ইসলামের “তবুও বৃষ্টি আসুক”একটি কালোত্তীর্ণ কাব্যগ্রন্থ –পরিমল ভৌমিক শিক্ষক, রম্য লেখক।

 

একদিন হঠাৎ করে আমার ছাত্রের পড়ার টেবিলের এক পাশে সংরক্ষিত একটি বই
এর দিকে হঠাৎ আমার দৃষ্টি চলে গেল। বইটির কভার পৃষ্ঠায় লিখা রয়েছে ;তবুও বৃষ্টি
আসুকশফিকুল ইসলাম। বইটি হাতে নিলাম। কয়েকটা কবিতা পাঠ করলাম, আমার
লিখার উপকরণ পেয়ে গেলাম। আমার মন ছিল কবিতার দিকে। কবিকে নিয়ে অর্থাৎ
কবির পরিচয় জানার কৌতুহল আমার মনে ঘুণাক্ষরে ও জাগেনি।
কয়েকটি কবিতা আমি বারবার পড়তে লাগলাম। আমার মন থেকে কে যেন বলে
উঠল এগুলো কালোত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা রাখে। আমি আমার লেখার মধ্যে
কবিতাগুলোর সম্মানজনক স্থান করে নিলাম । "শক্তিরূপিনী নারী" প্রবন্ধে আমি কবি
শফিকুল ইসলামের যে কবিতাগুলো তুলে ধরে ছিলাম, সেগুলো নিম্নে চয়ন করা হলো।
কবিতার নাম "মায়ের কথা মনে হলেই"।
"মায়ের কথা মনে হলেই
ছায়া শীতল শাখা প্রশাখা বিস্তৃত
একটি ছায়া বৃক্ষের কথা মনে পড়ে,
মায়ের কথা মনে হলেই
আমার মায়াবী জোছনার কথা মনে পড়ে,
যার আছে আধার নিবারক হিমেল আলো
অথচ উত্তাপ নেই।
……………………
আমার চলার পথে নিরন্তর
আমায় ক্লান্তিহীন প্রেরণা যোগায়-
আমি একটু একটু করে এগিয়ে চলি
আরো এগিয়ে চলি,
এক সময় গন্তব্যে পৌঁছে যাই।(মায়ের কথা মনে হলেই)

কবি শফিকুল ইসলামের অন্য কবিতা হল “এই গান এই সুর”
এই গান এই সুর
এই ফুল এই পাখি
নদী আর নিসর্গ
সবই সুন্দর– শুধু তুমি আছ বলে।
এই দুঃখ এই হতাশা
এই বঞ্চনা, এই মৃত্যু
আজ ও সুমধুর–তুমি ভালবাসো বলে।
(এই গান, এই সুর)
আমার দৃষ্টিতে কবি তার কবিতাগুলোর মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করতে পেরেছেন । এ
কাজটি সম্পন্ন করতে হলে লেখকের উপর স্রষ্টার কৃপা থাকতে হয়। যে লেখকের উপর
স্রষ্টার কৃপা বর্ষিত হয় তিনিই লেখাতে প্রাণ সঞ্চার করতে পারেন। আর ঐ ধরণের
লেখকের লেখাই পাঠক তৃপ্তি সহকারে পাঠ করে নিজেকে ধন্য মনে করে থাকেন।
প্রসঙ্গঃ- কবি শফিকুল ইসলামের “তবুও বৃষ্টি আসুক” কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশ করেছে
আগামী প্রকাশনী, ঢাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছে, ধ্রুব এষ। প্রথম প্রকাশ, ফাল্গুন ১৪১৩
ফেবুয়ারী ২০০৭ । বইটিতে মোট ৪১টি কবিতা রয়েছে। উৎসর্গে কবি লিখেছেনঃ–
সুলতা,
তোমার অনিঃশেষ স্মৃতির উদ্দেশ্যে
নিবেদিত-
যে দিন আমি থাকবনা
সেদিন ও আমার কবিতার পংক্তিমালা
তোমার জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুণবে
অনন্তকাল ধরে।
আমার কথাঃ- “শক্তিরূপিনী নারী”প্রবন্ধে যখন আমি কবি শফিকুল ইসলামের
দুটো কবিতা তুলে ধরি তখন কবির সাথে আমার পরিচয় ছিল না। একজন লেখকের
দৃষ্টিকোণ থেকে আমি কবিতাগুলো পাঠ করেছি এবং মুগ্ধ হয়েছি। আমার মনে হয়েছে

“তবুও বৃষ্টি আসুক” কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলো কালোত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা রাখে, বিশেষ
করে ঃ—
 তবুও বৃষ্টি আসুক
 বাবা, একদিন তোমার যে খোকাটি
 বাবা কেমন করে তুমি চলে গেলে
 একজন বীর মুক্তি যোদ্ধা
 মনে পড়ে মা
 মায়ের কথা মনে হলেই
 এই গান, এই সুর
বাকী কবিতাগুলো বেশীর ভাগই প্রেমধর্মী। প্রেমের স্রোতধারা অনন্ত। বলা চলে-
স্বর্গ থেকে আসে প্রেম, স্বর্গে চলে যায়। প্রেমের বিরহই লেখাগুলোর উপজীব্য বিষয় ।
এক্ষেত্রে রাধা কৃষ্ণের প্রেম পাঠকের হৃদয়ে জাগ্রত হয়। সঠিক বিবেচনায় বলা চলে কবি
শফিকুল ইসলাম রচিত কাব্যগ্রন্থ “তবুও বৃষ্টি আসুক” কালোত্তীর্ণ হওয়ার যোগ্যতা রাখে।
[প্রাপ্তিস্থান– আগামী প্রকাশনী, ৩৬ বাংলাবাজার, ঢাকা–১১০০। ফোন– ৯৫৯১১৮৫, ৭১১০০২১।
মোবাইল– ০১৮১৯২১৯০২৪] এছাড়া www.rokomari.com থেকে অনলাইনে (Help: 16297
অথবা 01519521971 ফোন নাম্বারে) সরাসরি বইটি সংগ্রহ করা যাবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment