মাদারীপুরে ডিবি পুলিশের এসআই মোবারকের আতঙ্কে সাধারণ মানুষ!

 মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ

মাদারীপুর জেলার গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের এসআই মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে দুই যুবককে বাড়ীথেকে তুলে এনে ডিবি অফিসে আটক রেখে নির্মম অত্যাচার ও একটি অজ্ঞাত চুরির মামলায় স্বীকারউক্তি আদায় করার চেষ্টা ও স্বীকার না করলে পরে ক্রোস ফায়ারে মেরে ফেলার হুমিকি দিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। আদলত সুত্রে জানা যায়, মামলার তদন্ত অফিসার বিজ্ঞ আদলতে রিমান্ড আবেদন করেন আজ বুধবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য ছিলো। বিজ্ঞ চিপজুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট জাকির হোসেনের আদলতে ১০দিন রিমান্ড না মঞ্জুর করে শুধু তিন দিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন। এদিকে এসআই মোবারককে মাদারীপুর বিজ্ঞ চিপজুডিশিয়াল আদলত মফিজুল ও শহিদুলকে নির্যাতন কেন করা হয়েছে জানতে চেয়ে কারন দর্শানো নোটিশ দিয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাদারীপুর ডিবি পুলিশের এস আই মোবারক হোসেন ও তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে, গত বুধবার দিবাগত রাতে ২টার পরে সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের কালাইমারা এলাকার মৃত রাজ্জাক বেপারীর ছেলে ভ্যন চালক মফিজুল বেপারী (৩৫) ও দিনমজুর শহিদুল বেপারী (৩২)কে তাদের নিজ বাড়ী থেকে আটক করে। তাদের স্ত্রীসহ বাড়ীর অন্যান্ন লোকজন আটকের কারন জানতে চাইলে, এসআই মোবারক বলেন ডিবি অফিসে নিয়ে যাচ্ছি সকালে আসলে জানতে পারবেন। মফিজুল ও শহিদুলকে ডিবি অফিসে এনেই ভোররাতে দুই পায়ের হাটুর মধ্যে এসএস লোহার পাইপ ভরে হাত পা বেধে রশির সাথে টাংঙ্গিয়ে বেধরক মারপিট করতে থাকে আর এসআই মোবারক বলতে থাকে তোর বাড়ীর পাশের সরোয়ার হাওলাদারের বাড়ীতে তুই চুরি করেছিস, এ কথা তোরা দুই ভাই স্বীকার করবি আর যদি স্বীকার না করছ, তাহলে আমি মোবারক তোগো দুই ভাইকে ক্রোস ফায়ারে মাইরা ফেলাবো। অসি স্যার আমারে পাওয়ার দিসে, কারো কাছে আমার কইফত দিতে হবে না। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, নির্যাতনের মাত্রা এতো বেশি ছিলো যে কয়েক পুলিশ সদস্য বলেছে স্যার ওদের আর মাইরেন না, ওরা কিন্তু মরে যাবে। এর পরও এসআই মোবারক তার নির্মম অত্যাচার বন্ধ করেনি বরং মাত্রা আরো অনেক গুন বাড়িয়ে দিয়েছেন, আমাদের দেশের বাংলা সিনেমাকেও হারমানিয়ে দিয়েছে। হাত, পা, মুখ বাধা অবস্থায় যা শুনলে সকলের গা শিহরে উঠবে। কতটা অত্যাচারের স্বীকার হয়েছে অসহয় গরীব মফিজুল ও শহিদুল, তাদের হাতের প্রতিটা নখের মাথায় সুই ঢুকানো হয়েছে, প্লাস দিয়ে নখ উঠানো হয়েছে, দুপায়ের হাটুর উপরে পিটিয়ে ফ্যাকসার ও দুপায়ের পাতার উপর পিটিয়ে গুরুতর হারকাটা ও শারা শরিলে মারাত্তক জখম করা হয়েছে। নির্মম অত্যাচার সইতে না পেরে এক পর্যায় মফিজুল ও শহিদুল চুরি করেছি বলে স্বীকার নেয়। এদিকে পরে দিন বৃহস্পতিবার সকালে মফিজুল ও শহিদুরের স্ত্রীরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের কাছে গেলে চেয়ারম্যান তাদের দুজনের স্ত্রী শিল্পি ও রুমা এবং এলাকার গন্যমান্যদের সাথে নিয়ে ডিবি অফিসে আসে। ডিবি অফিসে আসলে এসআই মোবারক বলে চেয়ারম্যান সাব মফিজুল ও শহিদুল চুরি করেছে বলে আমাদের কাছে স্বীকার করেছে। ইউপি চেয়ারম্যান দুজনের স্ত্রীসহ অন্যদের বললেন, আদালতের মাধ্যমে ছারা ওদেরকে ছারানো যাবেনা আমি চলে যাই বলে চলে গেলেন। তবে ওই দিন দুপুর ১২টার দিকে ঘটনা শুনে সংবাদ কর্মিরা ছুটে আসেন ডিবি অফিসে, এসে দেখেন মফিজুলের দু হাতের আঙ্গুলের মাথার থেকে রক্ত ঝরছে এবং পরনে থাকা লুঙ্গি ও গামছা রক্তে জরজরিত রয়েছে। তথ্যের জন্য ফুটেজ নিতে চাইলে সংবাদ কর্মিদের বাধা দেন এসআই মোবারকের পোষা পুলিশ কনষ্টেবল গোপিনাথ ও হিটলার। সংবাদ কর্মিগন ডিবি অফিস থেকে বের হয়ে মফিজুল ও শহিদুলের স্ত্রীদের থেকে আটক ও এসআই মোবারকের নির্মম নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা ও তাদের নিরঅপরাধ স্বামীদের চুরির মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই সরকার ও প্রশাসনের কাছে সঠিক তদন্ত ও ন্যায় বিচারের দাবি জানান। অনুসন্ধানে আরো বেরিয়ে আসে, সংবাদ কর্মিদের কাছে বক্তব্য দেওয়ার কারেনে আক্রশ বসত ডিবি পুলিশের এসআই মোবারক ওই দিন দুপুর ২টার পরে ডিবি অফিসে মফিজুল ও শহিদুলের স্ত্রী শিল্পী বেগমও রুমা বেগম দেখতে আসলে তাদেরকেও আটক করে। কিন্তু এসআই মোবারক আসামী চালান ও পুলিশ ফরডিং মাধ্যমে তার নিজের সেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়ে বুধবার দিবাগত রাত ০৪.৩০ঘটিকার সময় মফিজুল ও শহিদুলের সাথে তাদের দুজনের স্ত্রীকেও একই সময় গ্রেফতার দেখায়। উল্যেখ্য ঃ মাদারীপুর সদর উপজেলার উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়রে কালাইমারা এলাকার গত ১৯শে জুন ২০১৮ইং রাতে একটি চুরির ঘটনায় ২০শে জুন মাদারীপুর সদর থানায় মৃত আলাউদ্দিন হাওলাদারের ছেলে সরোয়ার হাওলাদার বাদী হয়ে, নিজ ঘরের রুমে ড্রেসিং টেবিলের ডয়ার ভেঙ্গে সাড়ে ২৯ ভরি স্বর্ণ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং ওয়ালটন মোবাইল মডেল নাম্বার লেখা বিহিন উল্যেখ করে একটি মামলা দায়ে করে। সদর থানা মামলা নং ৪১। তবে ঘটনার একদিন পর বৃহঃবার সকালে ভাই কুদ্দুস হাওলাদার, তার বিবাহিত মেয়ে তানিয়া ও ছেলে ইমনকে চুরির সন্ধেহের অভিযোগ দিয়ে পুলিশে ধরে নিয়ে আসে। নিজেদের মধ্যে চুরির ঘটনা হওয়ায় ও নিজ বাড়ীতে ৫/৬ দিন পরে বিয়ে থাকায় মুচকেখা দিয়ে পুলিশের থেকে আটক তিনজনকে ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। এদিকে ডিবির এসআই মোবারক ১লা জুলাই বুধবার দিবাগত রাতে আটককৃত মফিজুল শহিদুল ও পরের দিন ২রা জুলাই দুপুরের পরে স্বামীদের দেখতে এসে আটক হওয়া শিল্পী বেগম ও রুমা বেগমকে এ মামলায় একইদিন একই সময় গ্রেফতার দেখিয়ে আদলতে চালান দেওয়া হয়। ভুক্তভুগি পরিবার ও অত্র এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা জানান, চুরির ঘটনায় গত বুধবার রাতে একই এলাকার মৃত রাজ্জাক বেপারীর ছেলে, ভ্যান চালক মফিজুল বেপারী ও দিনমুজুর শহিদুল বেপারীকে এস আই মোবারক হোসেন আটক করে ডিবি অফিসে আনে। আমরা দেখতে আসার কারনে দারোগা সাহেব আমাদের ভয়ভিতি দেখিয়েছে, এমনকি ঘটনার বিষয় বেশি যোগাযোগ করলে আমাদেরও মামলায় আসামী করার হুমকি দিয়ে বলে আমি মোবারক আমাকে সবাই চেনে আমি কি করতে পারি সবাই জানে। তোমরা যারযার বাচার চিন্তা করো। তবে কালাইমারা এলাকাসহ আসেপাশের কোন এলাকার লোক বলতে পারবেনা যে মফিজুল ও শহিদুল খারাব কাজের সাথে জরিত আছে। এসব দু একজন অত্যাচারি পুলিশের জন্য আমরা সকল পুলিশকে দোষ দিতে চাইনা তবে সরকার ও প্রশাসনের কাছে আমাদের জোর দাবি এই অত্যাচারি দারোগার শাস্তি চাই। ভুক্তিভুগি পরিবার দাবি করে আরো জানায়, পরিকল্পিত ভাবে মিথ্যা অভিযোগে মফিজুল ও সহিদুলকে ফাঁসানো হয়েছে, আর দারোগা মোবারক সেচ্ছাচারি ভাবে শিল্প ও রুমাকে আটক করেছে। আমরা সবাই এই সেচ্ছাচারি দারোগার কবল থেকে এলাকাবাসি রক্ষা পেতে চাই। মাদারীপুর জেলার পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার এর কাছে চুরির ঘটনায় আটক কৃত ব্যক্তির পরিবারের দাবি মিথ্যা অভিযোগে মফিজুল ও সহিদুলকে ফাঁসানো হচ্ছে। আর এসআই মোবারক নির্মম অত্যাচার ও ভয় দেখিয়ে চুরির ঘটনায় জরিত বলে স্বীকার করানো চেষ্টা চালাচ্ছে এবং এসআই মোবারককে আদালত নির্যাতনের অভিযোগে শোকস করেছে এবিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি ঘটনাটি জেনে শুনে যদি কেহ আইন বহিঃভুত কাজ করে, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment