নির্বাচন হবেই, ঠেকানোর শক্তি কারও নেই: প্রধানমন্ত্রী

নির্বাচন হবেই, ঠেকানোর শক্তি কারও নেই: প্রধানমন্ত্রী

রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা -ফোকাস বাংলা

আগামী জাতীয় নির্বাচন যথাসময়ে হবেই- এমন দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, নির্বাচন ইনশাআল্লাহ হবে। জনগণ সঙ্গে থাকলে কেউ ঠেকাতে পারবে না। এ নির্বাচন ঠেকানোর শক্তি কারও নেই। যারা ঠেকাতে চেয়েছিল, আগেরবার তাদের মোকাবেলা করেছিল জনগণ, এবারও মোকাবেলা করবে।

নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলের মৃত্যুর পর সান্ত্বনা দিতে গেলে তার (প্রধানমন্ত্রী) মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তারও আত্মসম্মানবোধ আছে। এখন যে যা-ই বলুন না কেন এবং তিনি ক্ষমতায় থাকেন বা না থাকেন, তিনি অন্তত তাদের (বিএনপি) সঙ্গে বসবেন না।

বিএনপিকে নির্বাচনে আনার জন্য সরকারের কোনো উদ্যোগ কিংবা বাধা কোনোটাই থাকবে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নির্বাচনে আসবে কি আসবে না, সেটি তাদের দলীয় সিদ্ধান্ত। তারা এলে আসবে, না এলে নাই। আর এখানে তো সরকারের বাধা দেওয়া কিংবা দাওয়াত দেওয়ারও কিছু নেই। আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পদ্ধতির ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা ও এতে বিএনপির বিরোধিতা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেছেন, ইভিএমে বিএনপির আপত্তি কোথায়? ইভিএম হলে নির্বাচনে কারচুপি করতে পারবে না বলেই তারা এর বিরোধিতা করছে।

রোববার তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন শেখ হাসিনা। তবে সেখানে বরাবরের মতো এবারও চলমান রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ই প্রাধান্য পেয়েছে।

আগামী একশ’ বছরের জন্য ‘ডেল্টা প্ল্যান’ ঘোষণার সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১০০ সালে বাংলাদেশকে কীভাবে দেখতে চাই, এই বদ্বীপকে বাঁচিয়ে রাখা, জলবায়ু পরিবর্তনসহ অন্যান্য অভিঘাত থেকে বাঁচাতে এ পরিকল্পনা। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতেই ডেল্টা প্ল্যান- ২১০০ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে কাজ চলছে। মঙ্গলবার একনেকের বৈঠকে আলোচনাসহ আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনের ইশতেহারে এটি অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

সংবাদ সম্মেলনের মঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আরও ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা ছাড়াও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গে : শনিবার দলের এক জনসভায় বিএনপি নেতারা কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তি ছাড়া আগামী নির্বাচনে যাবেন না এবং বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হবেও না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। এ-সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়াকে তিনি গ্রেফতার করেননি। রাজনৈতিকভাবেও তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়েছেন এতিমের টাকা চুরি করে, দুর্নীতির মামলায় আদালতের রায়ে। এখন তার মুক্তি আদালতের মাধ্যমেই হতে হবে। দ্রুত মুক্তি চাইলে রাষ্ট্রপতির কাছে অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা চাইতে হবে। আর এ মামলাও সরকার দেয়নি। দিয়েছে তার পছন্দের ইয়াজউদ্দিন, ফখরুদ্দিন ও মইনুদ্দিনরা। সরকারের ওপর দোষ দিয়ে লাভ নেই।

নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসার জন্য বিভিন্ন মহলের তাগিদ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিএনপি থেকেও দাবি জানানো হচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চেয়েছিলাম। ফোনও করেছিলাম, আপনারা জানেন ফোন ধরেননি (খালেদা জিয়া)। তারপর খালেদা জিয়ার ছেলে মারা যাওয়ার পর আমি গেলাম। আমার মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়ে আমাকে ঢুকতে দিল না। সেদিন থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর ওদের সঙ্গে আমি অন্তত বসব না। আর কোনো আলোচনা হবে না। প্রশ্নই ওঠে না। আপনারা যে যাই বলেন। ক্ষমতাই থাকি বা না থাকি, আমার কিছু আসে যায় না।’

তিনি বলেন, ‘আমারও তো আত্মসম্মানবোধ রয়েছে। যারা দিনের পর দিন আমার বাড়িতে এসে পড়ে থেকেছে- তারাই মুখের ওপর দরজা লাগিয়ে দিয়েছে। কত বড় সাহস দেখিয়েছে! সেদিনই তো তাকে (খালেদা জিয়া) গ্রেফতার করতে পারতাম। যখন আগুন দিয়ে পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারল, তখনও তো গ্রেফতার করা উচিত ছিল। আমি তো করিনি, তখন আমি সহনশীলতা দেখিয়েছি।’

‘সীমিত পরিসরে হলেও ইভিএমের ব্যবহার হওয়া উচিত’ :
নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে বিএনপির সমালোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইভিএম হচ্ছে প্রযুক্তির একটা অংশ। এটার সুফল উন্নত বিশ্ব নিচ্ছে। এখন বিএনপির ভোট কারচুপির কিছু কৌশল রয়েছে, বহু কৌশল তারা জানে। যেগুলো আমরা এখনও পুরোটা ধরতে পারিনি। এখন ইভিএম হলে তো ভোট কারচুপির ওই কৌশল প্রয়োগ করতে পারবে না বলেই ইভিএমের বিরোধিতা করছে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা তার সরকারের ছিল। নির্বাচন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে ইভিএমের ব্যবহার এরই একটি অংশ। এটা একটি নতুন প্রযুক্তি। তবে তাড়াহুড়া করে এটাকে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। সীমিত পরিসরে হলেও আধুনিক বিশ্বের সর্বাধুনিক ভোট গ্রহণের এই প্রযুক্তি শুরু করা উচিত। তবে কোথাও কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেখানে এটি বাতিল করে দেওয়া যাবে।

‘মিয়ানমার জঘন্য কাজ করেছে’ : বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তারা ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে। বিমসটেক সম্মেলনে গিয়ে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় তিনি বিষয়টি স্বীকারও করেছেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, যখনই আলোচনা হয় তখন তারা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে নানাভাবে বিষয়টিতে বাধা সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশের একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের গণহত্যার ছবি দিয়ে মিয়ানমার সশস্ত্র বাহিনীর প্রপাগান্ডামূলক একটি বই প্রকাশ বিষয়ে তিনি বলেন, তারা এভাবে ভুয়া ছবি দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে জঘন্য কাজ করেছে। কিন্তু এটা তারা কার কাছ থেকে শিখল? আমাদের দেশেও তো হয়েছে। একেবারে কাবাঘরের সামনে ব্যানার ধরার ছবির মিথ্যাচারও আমরা দেখেছি। বিএনপি-জামায়াত বারবারই এমন অপপ্রচার করেছে। পরে এগুলো মানুষের কাছে ধরাও পড়ে যায়। মিয়ানমার সরকারও ধরা পড়ে গেছে।

বিমসটেকের মতো আঞ্চলিক বড় প্ল্যাটফর্মের আলোচনায় মিয়ানমারের সৃষ্ট রোহিঙ্গা সংকট বিষয়টি এসেছে কি-না- এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিমসটেক সম্মেলনের বাইরের অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় উঠেছে রোহিঙ্গা ইস্যুটি। এ ছাড়া সম্মেলনের ফাঁকে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকেও এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিক কথা হয়েছে।

ড. কামালের জোট প্রসঙ্গে : ড. কামাল হোসেন ও অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীদের নতুন জোট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন- খুব নামিদামি, অনেক ভয়েস, তাদের আওয়াজটা একটু বেশি শোনা যায়। কারণ খালি কলসি বাজে বেশি, এটাই হলো বাস্তবতা। তবু আমি চাই যে, রাজনৈতিক জোট হোক, নির্বাচনে সবাই আসুক। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক। আর নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ জনগণের ভোট চুরি করতে আসিনি। জনগণকে দিতে এসেছি। আর জনগণের জন্য কাজ করেছি। জনগণ ভোট দিলে আছি, না দিলে নাই, একথা তো আমি বারবার বলি। আর আমি যেটা বলি, সেটা বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, দেশে দুটি দল আছে। একটি আওয়ামী লীগ, আরেকটি আওয়ামী লীগ বিরোধী। এখন আওয়ামী লীগ বিরোধীদের তো একটা ঐক্য দরকার। ড. কামালরা সেটি করছেন, এটি ভালো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. কামাল বলেছেন আদৌ নির্বাচন হবে না। তার মানে তারা বসেই আছেন। উত্তরপাড়ার দিকে তাকিয়ে বসে থাকতে পারেন। আমাদের দেশে তো অনেকেই আছে, দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তাদের পছন্দ নয়। একটি অসাংবিধানিক সরকার এলে তারা পতাকা পাবেন, সুযোগ-সুবিধা পাবেন। সেদিকেই তো তারা চেয়ে থাকেন।

‘মৃত্যুভয়ে ভীত নই’: প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দেশের মানুষ এখন জানে, একটা গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে দেশের উন্নতি হয়। এটা মানুষ খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছে। সেই সচেতনতাটাও আছে। তারপরও ষড়যন্ত্র আছে, ষড়যন্ত্র থাকবে। যারা আমার বাবাকেই (জাতির পিতা) খুন করতে পারে, আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করে সফল হয়নি। হয়তো একদিন সফল হতেও পারে। এটা আমি সব সময় জানি। আর এটা জেনেই আমি বাংলাদেশে এসেছি। এটা জেনেই আমি রাজনীতি করে যাচ্ছি। আর এটা জেনেই কিন্তু আজকের এই উন্নয়নটা করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, ভয়ে ভীত হয়ে ঘরে বসে থাকলে হবে না। আমাকে কাজ করতে হবে। আর মৃত্যু এটা তো উপরে আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যখন লিখবে তখন মৃত্যু হবে। প্লেনের নাটবল্টু তো খুলে গিয়েছিল, তাও তো বেঁচে গেছি। আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে দিচ্ছেন বারবার। নিশ্চয়ই একটা কাজ দেন, সেটুকু শেষ না হওয়া পর্যন্ত বেঁচে থাকতে হবে। তাই যতক্ষণ শ্বাস আছে ততক্ষণ দেশের জন্য কাজ করে যাব। আমি কোনো সময় নষ্ট করতে চাই না। কারণ সময়টা খুব মূল্যবান আমার দেশের মানুষের জন্য।

দেশকে উন্নতির শিকড়ে নিয়ে যাওয়া-সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার হাতে কোনো ম্যাজিক নেই। দেশের প্রতি ভালোবাসা, মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর কর্তব্যবোধ থেকেই দেশের জনগণ কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করব, দেশের উন্নতি করব- এটাই হচ্ছে ম্যাজিক, আর কিছু নয়। আমি শ্রম দিতে পারি আর দেশের মানুষের জন্য কী করলে ভালো হবে, সেটুকু জানি। বাবার (বঙ্গবন্ধু) কাছ থেকে শিক্ষা নিয়েছি। নিজের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়েছি। সারাদেশ ঘুরে ঘুরে দেখেছি, মানুষের মূল সমস্যাগুলো কী কী।

গণমাধ্যমগুলো তার প্রতি বৈরী আচরণ করছে বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, যারা চুরি-ডাকাতি-খুনি-দুর্নীতিবাজ তারাই যেন বেশি ফেভার পায়। আর আমাদের পান থেকে চুন খসলেই সবাই চেপে ধরে। যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, বাংলাদেশের স্বাধীনতাই চায়নি, সেই পাকিপ্রেমীদের বংশপরম্পরাই যেন সংক্রমিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ দেশকে স্বাধীন করেছে, দেশকে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোলমডেলে পরিণত করেছে- এটাই যেন আমাদের অপরাধ।

বিমসটেক সম্মেলন প্রসঙ্গে : বিমসটেক সম্মেলনে তার অংশগ্রহণের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমসটেক সম্মেলনে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বলেছি, বাংলাদেশ বিমসটেকের মতো সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্মের সঙ্গে কাজ করে যাবে।

গত বৃহস্পতিবার দু’দিনের সফরে নেপালে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে অনুষ্ঠিত চতুর্থ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নেন তিনি। এ ছাড়া বিমসটেকভুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন তিনি। শুক্রবার দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment