‘সংসদ না ভেঙে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না’

গণফোরাম সভাপতি ও যুক্তফ্রন্ট নেতা ড. কামাল হোসেন সরকারের সমালোচনা করেন বলেছেন, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হয়েছে। সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লুট করা হয়েছে এ টাকা। লুট হওয়া টাকার কোনো তদন্ত হয়েছে কি-না সে বিষয়ে সরকারের কাছে প্রশ্ন রাখেন তিনি। নাগরিকদের জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকার সংবিধান নিয়ে খেলা করছে। প্রজাতন্ত্রের মালিক জনগণ, প্রধানমন্ত্রী নয়। আমাদের সংবিধান আছে, আইন আছে, যেটা নেই সেটা হলো সরকারের দায়িত্ববোধ। আমরা এ দেশের নাগরিক, দাস নই। পুলিশের সমালোচনা করে কামাল হোসেন বলেন, আটক ছাত্রদের ওপর পুলিশ যেভাবে নির্যাতন চালিয়েছে, তার কোনো অধিকার সংবিধানে উল্লেখ নেই।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি নগরীর শহীদ হাদিস পার্কে যুক্তফ্রন্টের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

আইনের শাসন, ন্যায় বিচার, অবাধ গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেএসডির খুলনা জেলার সভাপতি আ ফ ম মহসীন।

জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, রাষ্ট্রের আজ দুর্দিন। দিনে অপহরণ, রাতে খুন ও সকালে লাশ পাওয়া যাচ্ছে মানুষের। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন আর আসবে না বাংলাদেশে। স্বৈরাচারীরা পালানোর পথ খুঁজে পাবে না। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে সংসদ ও মন্ত্রিসভা ভেঙে দিতে হবে। শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। ভোট চুরির সুযোগ জনগণ আর দেবে না। ভোটের সময় ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী নিয়োগ করতে হবে। সব রাজবন্দিকে মুক্তি দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকার জানে, তারা জনগণের ভোটে জিততে পারবে না। জুলুমবাজ, ভোটচোর ও দখলবাজ সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফর উল্লাহ চৌধুরী বলেন, সরকারের উন্নয়নের নৌকা ফুটো হয়ে গেছে। সরকার যে উন্নয়নের কথা বলছে তার সুফল জনগণ পাচ্ছে না। তিনি সরকারকে ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে বলেন, তারা জনগণের মনোভাব বুঝতে পারছেন না। যদি বুঝতে পারত, তা হলে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনে কোনো টালবাহানা করত না।

সভায় আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জেএসডির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, বিকল্প ধারা বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওমর ফারুক, জেএসডির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আবদুস সালাম, জমির উদ্দিন জোয়াদ্দার, তৌহিদ হোসেন ও শহীদুল্লাহ কায়সার, সোনার বাংলা পার্টির সভাপতি শেখ আবদুর নূর, জেএসডি নেতা এমএ আউয়াল, খুলনার জেলা সাধারণ সম্পাদক কওছার আলী সানা, খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুল খালেক, জেএসডি নেতা সুধাংশু সরকার, জিল্লুর রহমান, আবদুল লতিফ প্রমুখ।

জনসভায় অন্য বক্তারা বলেন, নির্বাচনের দিন সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনে এসে দেখেন আপনাদের জনপ্রিয়তা কেমন? বক্তারা বলেন, দেশের মানুষ আজ জিম্মি। কারও মুখ খোলার সাহস নেই।

জনসভায় জেএসডির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউল গণি সানি খুলনা বিভাগের ২০টি আসনে জেএসডির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment