ওয়েম্বলির সুখস্মৃতি থাকবে মেসির?

ওয়েম্বলির সুখস্মৃতি থাকবে মেসির?

২০১১ চ্যাম্পিয়নস লিগ, ইউনাইটেডের বিপক্ষে ফাইনাল, ৩-১ গোলে জয়…আজ যখন টটেনহামের বিপক্ষে আরেকবার ওয়েম্বলিতে চ্যাম্পিয়নস লিগে নামবেন লিওনেল মেসি, নিশ্চিত ভেসে উঠবে স্মৃতিগুলো।

সেটি ছিল ছয় বছরে মেসি ও বার্সেলোনার তৃতীয় চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা। আর বার্সেলোনার তখনকার যে দাপট ছিল, তাতে আরও চ্যাম্পিয়নস লিগ মনে হচ্ছিল হাতের মোয়া। সেই ম্যাচের পর ইউনাইটেড কোচ স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনই বলেছিলেন, ‘আর কেউ আমাদের এভাবে হারায়নি! বার্সেলোনা আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ, আমাদের সবার জন্য।’ কিন্তু এরপরের সাত বছরে কী হলো? ২০১৫ সাল ছাড়া এরপর আর চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা হয়নি মেসির। সর্বশেষ তিন বছরে তো বাদ পড়েছে কোয়ার্টার ফাইনালেই। আরও বড় হতাশা, সর্বশেষ তিনবারই শিরোপাটা গেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের ঘরে, যেখানে চ্যাম্পিয়নস লিগ যুগে টানা দুই শিরোপার রেকর্ডই কারও ছিল না।

আজ চ্যাম্পিয়নস লিগে বড় ম্যাচ আছে আরও। কার্লো আনচেলত্তির নাপোলির মাঠে যাবে টুর্নামেন্টে আগের ম্যাচেই নেইমারের পিএসজিকে হারানো লিভারপুল। মৌসুমে দারুণ শুরু করেছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। লিগে এখনো হারেনি, সর্বশেষ ম্যাচেই ড্র করেছে চেলসির সঙ্গে। অন্যদিকে জুভেন্টাসের কাছে লিগে সর্বশেষ ম্যাচে ৩-১ গোলে হেরে গেছে নাপোলি। একে নাপোলির সমর্থকেরা তাঁদের মাঠ স্তাদিও সানপাওলোকে স্লোগানে-উল্লাসে প্রতিপক্ষের জন্য আরও কঠিন বানিয়ে রাখেন। তার মধ্যে দারুণ আক্রমণাত্মক ফুটবলকে দর্শন মেনে চলা দুটি দল জমজমাট ম্যাচেরই প্রতিশ্রুতি দেয়।

কিন্তু মেসির ওয়েম্বলি প্রত্যাবর্তনের কারণেই হয়তো, আলোচনা বেশি এই ম্যাচ নিয়েই। সেদিনের ২৩ বছরের মেসি এখন ৩০ পেরিয়েছেন। এবার মৌসুম শুরুই করেছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ দুঃস্বপ্ন ভোলানোর ব্রত নিয়ে। মৌসুম শুরুর দিনে অধিনায়কের বক্তৃতায় যা জানিয়েছিলেন। মাসখানেক আগে কাতালোনিয়া রেডিওতে সাক্ষাৎকারেও বলেছেন, ‘সময় এসেছে আমাদের চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতার।’

যদিও বার্সেলোনার এই দলের সেই সামর্থ্য নিয়ে সংশয় আছে। সাত বছর আগের জাভি-ইনিয়েস্তারা নেই, দলটা কয়েক মৌসুম ধরেই মেসিতে অতিনির্ভর। এই তো, লিগে সর্বশেষ ম্যাচেই বিলবাওয়ের সঙ্গে ড্রয়ের পর মাদ্রিদভিত্তিক দৈনিক এএস শিরোনামে লিখেছে, ‘লা মেসি দিপেনদেন্সিয়া’—মেসিনির্ভরতা। তার ওপর সর্বশেষ তিন ম্যাচেই পয়েন্ট হারানো বার্সেলোনার এই সংকটময় সময়ে মেসি আর জেরার্ড পিকের মধ্যে ঝামেলার গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে।

শুধু মেসির ওপরই নির্ভর করলে কী হয়, আর্জেন্টিনা সেটি কড়া মূল্য দিয়ে বুঝেছে। তা বার্সেলোনাকেও সেটি বোঝাতে টটেনহামের প্রস্তুতি কী? মেসিকে আটকাবে ভাবছেন তো? টটেনহামের আর্জেন্টাইন কোচ মরিসিও পচেত্তিনো সে পথেই হাঁটছেন না। অন্তত মুখে তা বলছেন না, ‘আমি মেসিকে আটকানোর সমাধানই খুঁজব না। সেটা অসম্ভব। বরং (মেসির বিপক্ষে খেলা) উপভোগ করা উচিত। দুশ্চিন্তার বদলে এটা আপনাকে রোমাঞ্চিত করার কথা। আমি নিজে ম্যারাডোনা ও (ব্রাজিলিয়ান) রোনালদোর বিপক্ষে খেলেছি। ছেলেমেয়ে, নাতিনাতনিদের বলার মতো গল্প এগুলো। তাই (দলের ডিফেন্ডারদের) বলব, উপভোগ করো। ওর কাছাকাছি থাকো, চেষ্টা করো প্রতিপক্ষের অর্ধেই খেলতে, লিওকে নিজেদের গোল থেকে যত দূরে রাখার চেষ্টা করো। কারণ সেটি না করলে ভয়ংকর হবে।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment