প্রতীক বরাদ্দের আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: ইসি সচিব

প্রতীক বরাদ্দের আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড: ইসি সচিব

প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া আগেই সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ। আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে বুধবার দুপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমন আশা প্রকাশ করেন তিনি।

ইসি সচিব বলেন, বৃহস্পতিবার আমরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিশেষ বৈঠকে বসছি। সভা থেকে নির্বাচনের আগে-পরে ও ভোটের দিনের পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাখতে বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হবে।

এ ছাড়া অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নারী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নির্বিঘ্ন করা, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নিরাপত্তা, নির্বাচন সামগ্রীর কেন্দ্রে পৌঁছানোর নিরাপত্তা, নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তায় পুলিশ পাহারা দেয়া, নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়গুলো নিয়েও ওই বিশেষ সভায় নির্দেশনা থাকবে বলে জানান সচিব।

সচিব বলেন, বিশেষ সভা থেকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে, নির্বাচনপূর্ব শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টিতে করণীয় স্থির করা, নির্বাচনী আইনের বিধান প্রতিপালনের পরিবেশ তৈরি করা, নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করা- যাতে সকল প্রার্থী প্রচার-প্রচারণায় সমান সুযোগ পান। এ ছাড়া নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা যাতে নির্বিঘ্নে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে পারেন- সেজন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ সদস্য নিয়োগ করা হবে।

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অপর ৪ কমিশনার উপস্থিত থাকবেন। এ ছাড়া এই সভায় পুলিশের আইজি, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সকল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক ও পুলিশ সুপাররা (এসপি) উপস্থিত থাকবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, সীমান্তবর্তী ও দুর্গম এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ নজর থাকবে। জঙ্গি চক্র যাতে মাথা চাড়া দিয়ে না উঠতে পারে- এ বিষয়গুলোতেও আলাদা নির্দেশনা থাকবে। এ ছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিশেষ সভায় সেনা সদরের কোনো প্রতিনিধি থাকবে না বলেও জানান ইসি সচিব।

বলেন, সেনা প্রতিনিধিদের প্রতীক বরাদ্দের পর আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে ডাকা হবে। যে সভাটি আগামী ১০ ডিসেম্বরের পর অনুষ্ঠিত হবে।

বিএনপির তরফে দাখিল করা অভিযোগগুলো কি খতিয়ে দেখা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে সচিব বলেন, আমরা সবই কমিশনের নজরে আনছি। বিএনপি আজ যে চিঠি দিয়েছে সেটি নিয়ে কালকের কমিশন সভায় আলোচনা হবে। এ বিষয়ে পরবর্তীতে জানানো হবে।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নতুন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার বা হয়রানি না করার নির্দেশ দেবেন কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে সচিব বলেন, এ ধরনের কিছু নির্দেশনা দেয়া হবে।

ধর্মীয় সভা আয়োজনে বাধ্যবাধকতা আরোপের বিষয়ে সচিব বলেন, ধর্মীয় সভা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়নি। আবেদন পাওয়া সাপেক্ষে রিটার্নিং অফিসার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে সভার অনুমোদন দিতে পারেন। তবে ধর্মীয় সভায় কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য রাখা যাবে না। এ ধরনের সভায় ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকবেন।

তবে আমরা রিটার্নিং অফিসারদের নির্দেশনা দিয়েছি, কোনোভাবেই কোনো দলীয় ব্যক্তিকে যেন তারা প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না দেন।

প্রসঙ্গত, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোট হবে। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ২৮ নভেম্বর, ২ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাই ও মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারিত রয়েছে ৯ ডিসেম্বর।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment