আপনার রাতের ঘুম নষ্ট হচ্ছে যে দশটি কারণে!

ঘুম আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও অপরিহার্য একটি বিষয়। সারা দিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর যদি রাতে শান্তিমতো ঘুম না হয় তবে পুরো ব্যাপারটিই অভিশাপের শামিল মনে হয়। এতে করে ঘুম থেকে জাগার পরেও আপনি অনেকক্ষণ ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত বোধ করেন।

কিন্তু আপনি কী জানেন, আমাদের সাধারণ কয়েকটি অভ্যাসের জন্যই রাতের পর রাত ঘুমহীন অবস্থায় থাকছি আমরা? চলুন তবে সে অভ্যাসগুলোর ব্যাপারে জেনে আসা যাক, তবেই সেগুলো এড়িয়ে চলা সহজ হবে-

ঘরের ভুল তাপমাত্রা

উষ্ণতার মধ্যে ঘুমোতে খুব ভালো লাগে কিন্তু তাপমাত্রা অবশ্যই ১৫ থেকে ২৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা উচিত। আপনি হালকা একটি চাদর মুড়িয়ে ঘুমোতে পারেন, তাহলে অসুস্থ হবার সম্ভাবনা থাকবে না এবং আপনি আরামে ঘুমোতে পারবেন।

ব্যায়াম করা

শারীরিক ব্যায়াম আমাদের রক্ত চলাচল প্রক্রিয়াকে সচল রাখে এজন্যই ব্যায়াম করার পর পরই ঘুমানো বেশ কঠিন এবং সমস্যাপূর্ণ হয়ে থাকে। এ সমস্যা দূর করার জন্য ঘুমানোর অন্তত তিন ঘণ্টা আগে ব্যায়াম করুন।

নিয়মানুবর্তিতার অভাব

সম্পূর্ণরুপে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য আপনার শরীরের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সময়ের দরকার আছে। প্রতিদিনই একটি সময়সীমা ধরে ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে। ছুটির দিনে একটু বেশি ঘুমিয়ে নিলে সারা সপ্তাহের চাহিদা পূরণ হবেনা কোনভাবেই। সেজন্যে প্রতি রাতে ১০টা থেকে ১টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়ুন।

আলো

আপনি জানেন, ঘরের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম আলো কিংবা এলইডি লাইট ও আপনার ঘুমের ক্ষতি করতে পারে। ঘর যত অন্ধকার হবে ততো ঘুম প্রগাড় হবে। আপনি চাইলে চোখে ‘স্লিপিং মাস্ক’ ও ব্যবহার করতে পারেন।

কোলাহল

যেকোন ধরনের কোলাহল আপনার ঘুমের ক্ষেত্রে বড় ধরনের শত্রুর ভূমিকা পালন করে। সেজন্য চেষ্টা করুন শোবার ঘর যেন একদম নীরব ও কোলাহলমুক্ত থাকে।

বিছানায় কাজ টেনে আনা

কিছু মানুষ বিছানায় ঘুমানোর পরিবর্তে ল্যাপটপ, মোবাইল ও বই দিয়ে একদম ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখেন। রাতে ভালো ও পরিপূর্ণ ঘুম পেতে চাইলে এ অভ্যাস একদম বাদ দিতে হবে। শোবার ঘরের বাইরে সকল কাজ রেখে আসুন।

ক্যাফেইন

আমরা সকলেই সত্য জানি যে ক্যাফেইন আমাদের ঘুম থেকে দূরে রাখে। শুধু কফিতে নয়, চা এবং চকলেটেও কিন্তু ক্যাফেইন থাকে। সুতরাং, সন্ধ্যার পর থেকে ক্যাফেইন গ্রহনের পরিমাণ কমিয়ে দিন যতটুকু সম্ভব।  

জোর করে ঘুমোতে যাওয়া

অনেকেই ইচ্ছার বিরুদ্ধে এই ভেবে ঘুমোতে যান যে, ঘুম আপনাআপনিই চলে আসবে। কিন্তু এমনটা কিন্তু হয়না। আপনার যদি টানা বিশ মিনিটেও ঘুম না আসে তবে বিছানা থেকে উঠে পড়ুন এবং একটি বই পড়া শুরু করুন। এতে করে ধীরে ধীরে ঘুম চলে আসবে।

অ্যালকোহল

যদিও অ্যালকোহল পানে ঘুমের গতি ত্বরান্বিত হয় কিন্তু এটি খুব নেতিবাচকভাবে চোখের গতির উপর প্রভাব ফেলে এবং আপনি ক্লান্ত হয়ে জাগ্রত হোন। ঘুমানোর অন্তত দু’ঘণ্টা আগে পান করুন খুব দরকার পড়লে। সবচেয়ে ভালো হয় অ্যালকোহল পান একেবারে বন্ধ করে দিলে।

মানসিক ধকল

আমরা প্রতিনিয়ত অসম্ভব মানসিক ধকলে থাকি এবং প্রায়শই বিশ্রাম নেওয়ার কথা ভুলে যাই। এতে করে আমাদের ঘুমের পরিমাণ খুব কমে যায় এবং দিনের পর দিন মানসিকভাবে আমরা প্রচণ্ড দুর্বল অনুভব করতে থাকি।

ঘুমের আগে সব ধরনের চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখুন। সংখ্যা গুনতে থাকুন কিংবা প্রিয় কোন স্মৃতি মনে করতে করতে ঘুমাতে পারেন।

রাতে ঘুমোতে গেলেই আপনি অনিদ্রা কিংবা দেরিতে ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন? এ ছোট্ট উপায়গুলো অনুসরণ করে দেখুন। ভাল ফল পাবেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment