আসন্ন বাজেটে প্রত্যেক পরিবারে একজনের চাকরি: অর্থমন্ত্রী

https://youtu.be/k17GUADf2m4

আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটে দেশের প্রত্যেক পরিবারে একজন ব্যক্তির চাকরির উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেছেন, আগামী বাজেট হবে ছোট, তবে তা হবে দারিদ্র্য ও কর্মসংস্থানবান্ধব। একই সঙ্গে একবারে না করে জুলাই থেকে ভ্যাট আইনও স্বল্পপরিসরে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে।

রোববার নগরীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রাক বাজেট আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব জানান অর্থমন্ত্রী।

আগামী (২০১৯-২০) অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নে নীতিগত বিষয়ের ওপর মতবিনিময়ের জন্য দেশের ‘থিংকট্যাংক’ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এটি ছিল প্রথম প্রাক-বাজেট আলোচনা।

দীর্ঘ তিন ঘণ্টা আলোচনায় গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই), ইকোনোমিক রিসার্চ গ্রুপ (ইআরজি), বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (বিআইডিএস) ও বাংলাদেশ জুট গুডস এক্সপোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের মুস্তফা কামাল বলেন, আগামী বাজেট হবে সংক্ষিপ্ত, কিন্তু টাকার অঙ্কে বড় হবে। বাজেট সবার জন্য হবে। সংক্ষিপ্ত বাজেট হলেও সবার কথা ঠাঁই পাবে বাজেটে। সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি বাজেটে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। দেশের প্রত্যেক পরিবারের একজন সদস্য যেন একটা করে চাকরি পায় সেই ব্যবস্থা থাকবে ।

তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যেভাবে চলছে এটি অর্থনীতির জন্য সঠিক পথ নয়। এবার কাঠামোগতভাবে প্রত্যেক পরিবারের আয়ের পথ তৈরি হবে। এ জন্য প্রত্যেক পরিবার থেকে একজনের চাকরির ব্যবস্থা করতে পারি। এতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসুচির ওপর চাপ কমে আসবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রতিটা পরিবারে কীভাবে চাকরির ব্যবস্থা করা হবে, সেটা সময় হলেই আপনারা দেখবেন, এখনই এই বিষয়ে কিছু বলব না।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী বাজেটে দুটি বিষয় মূল এজেন্ডা ধরা হয়েছে। একটি গ্রামে শহরের সুবিধা, অন্যটি যুবগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান। আমরা যুব সমাজকে প্রকৃত অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে তৈরি করতে চাই। এ জন্য সারা দেশে ১০০ অর্থনৈতিক জোন করা হচ্ছে। বাস্তবে ইকোনমিক জোনের সংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। এগুলোর কাজ শেষ হলে গ্রামীণ অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙা হবে এবং লাখ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন ছাড়াও এখন গ্রামে ফোরজি চালু আছে, কিছুদিন পরে দরকার হয় ফাইভ জি চলে যাবে। গ্রামে বিদ্যুৎ চলে গেছে, আমরা অন্যান্য উন্নয়ন করব। বিচার পেতে গ্রামের মানুষকে ঢাকায় আসতে হবে না সেই বিষয়ে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ছাড়া আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি, শিল্প ও প্রবৃদ্ধিকে।

ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পয়লা জুলাই থেকে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন হবে ঠিকই। কিন্তু সেটা স্বল্প পরিসরে হবে। বিশ্বের কোথাও এমনকি ভারতে একসঙ্গে বাস্তবায়ন হয়নি। এ জন্য আমরা ধীরে ধীরে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করব।

এ সময় তিনি বলেন, ভ্যাট আইনে বাস্তবায়নে যদি সারা দেশে ৫০ হাজার মেশিন বসানো হয়, তাহলে সেই মেশিন পরিচালনা করতে গিয়ে জনবল দরকার হবে। এভাবেই কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হবে।

আসন্ন বাজেট বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সিঙ্গাপুর ১৮ পাতার বাজেট দেয়, আমরাও ছোট কথার বাজেট পেশ করব। বাজেটের কথা হবে সহজ, যাতে করে দেশের সব মানুষ বুঝতে পারে। বাজেট হবে প্রবৃদ্ধিবান্ধব, কর্মসংস্থানবান্ধব, প্রাধান্য পাবে রপ্তানি ও দারিদ্র্য বিমোচন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. ফজলে কবির, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment