নুসরাত হত্যায় আ’লীগ নেতা রুহুল আমিন পাঁচ দিনের রিমাণ্ডে

মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে মারার হত্যা মামলায় ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিনের পাঁচ দিনের রিমাণ্ডে নেয়ার অনুমতি দিয়েছে আদালত। শনিবার রুহুল আমিনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদলতে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এতে আদালত পাঁচ দিনের রিমাণ্ড আবেদন মঞ্জুর করে।

রুহুল আমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে ফেনীর সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারাফ উদ্দিনের আদালতে এই রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল।

এ বিষয়ে পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, ‘রুহুল আমিনকে বিজ্ঞ আদালতের সামনে হাজির করি। নুসরাত হত্যা মামলায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদলের কাছে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করি। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পাঁচ দিনের রিমাণ্ড এর আদেশ দেন।’

গত রোববার ফেনীর জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শরাফ উদ্দিন আহমদের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন নুসরাত হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম। জবানবন্দিতে শাহাদাত বলেন, নুসরাতের শরীরের আগুন দেওয়ার পর তিনি রুহুল আমিনকে বিষয়টি মোবাইলে জানান। তখন রুহুল আমিন তাঁকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি তোমরা চলে যাও।’ মূলত, শাহাদাতের জবানবন্দির পর থেকে নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রুহুলের যোগসাজশ আছে, এমন অভিযোগ জোরালো হতে থাকে বিভিন্ন মহল থেকে। তবে নুসরাত হত্যা মামলার এজাহারে রুহুল আমিনের নাম নেই।

তথ্যসূত্র বলছে, শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বিকাল পৌনে ৫টার দিকে রুহুল আমিনকে আটক করে পিবিআই।

পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, রুহুল আমিন নুসরাতের প্রতিষ্ঠান সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি। শুক্রবার মাদরাসাটির কমিটি বাতিল করা হয়।

উল্লেখ্য, মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজদ্দৌলার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন মাদরাসাটির আলিম পরিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি। এই ঘটনায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা ৬ এপ্রিল নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন।

পরে ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নুসরাতের মৃত্যু হয়। এর আগে গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় যান নুসরাত। তার বান্ধবীকে ছাদের ওপর কেউ মারধর করছে- এমন সংবাদ পেয়ে ছাদে যান নুসরাত।

সেখানে মুখোশ পরা চার থেকে পাঁচ জন নুসরাতকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়। অস্বীকৃতি জানালে তারা তার গায়ে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে ফেনী থেকে ঢামেকের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।

নুসরাতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২৭ মার্চ মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ উদদৌলা নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করেন। এই ঘটনায় তার মায়ের করা মামলায় অধ্যক্ষ এখন কারাগারে আছেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment