অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন। অসততা আমাকে স্পর্শ করেনি, করবেও না। আমি অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছি। সাধারণ মানুষের প্রতি আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে। আমি অনুরোধ করব, এই দেশটা আমাদের। দেশের ক্ষতি হয়, দেশের মানুষের চলার পথে যেন প্রতিবন্ধকতা না হয়, সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে। সবাই সবার জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) প্রাক-বাজেট আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদের হার বেশি।এত বেশি সুদ দিয়ে কখনোই ব্যবসা করা যাবে না। সুদের ওপর নতুন করে সুদ আরোপ করা হচ্ছে।আগামীতে সুদের হার অনেক কমিয়ে নিয়ে আসা হবে, যেন ঋণখেলাপি না হয়।
এসময় বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে বলে জানান তিনি।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা খুব ভালো আছে, এটা বলব না। তবে খুব খারাপও নেই। এ খাতের উন্নয়নে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি হচ্ছে। অনেকেই খেলাপি ঋণের বিপরীতে কোনো উদ্যোগ নিতে পারছে না। মামলা করতে পারছে না। এসব বিষয়ে আসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি উদ্যোগ নেবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের এনজিও নেতা, ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও সাংবাদিক এবং ইকোনমিক রিপোর্টাস ফোরামের (ইআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা এতে অংশ নেন।
আলোচনার শুরুতেই আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যবসা করলে লাভ বা লোকসান হতে পারে। যারা লোকসান দেয়, তাদের জন্য কোনো ব্যবস্থা থাকে না। ঋণখেলাপি হওয়ার পরও সব ব্যবসায়ীদের জেলে পাঠালে তো হবে না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ যেসব পণ্য বিদেশ থেকে আসবে সেগুলো শতভাগ স্ক্যানিং হয়ে আসবে। আবার যেসব পণ্য রফতানি হবে সেগুলোও শতভাগ স্ক্যানিং করা হবে। তাছাড়া র্যান্ডম স্যাম্পলিংয়ের মাধ্যমে পরিদর্শন করার ব্যবস্থা করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, দেশের ৪ কোটি মানুষ কর দেওয়ার যোগ্য হলেও কর দেন মাত্র ২৯ লাখ মানুষ। এজন্য ভ্যালু অ্যাডেড ট্যাক্স নির্ধারণ করা হবে।
আলোচনায় প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, সংবাদপত্রের পাঠক সংখ্যা ক্রমেই কমে আসছে। এর ফলে আয়ও কমে যাচ্ছে। অনলাইনেও আয় তেমন নেই। সংবাদপত্র প্রকাশে বিভিন্ন খাতে ব্যয় বাড়ছে। ভ্যাট আইনে সংবাদপত্রে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া আছে। এরপরও এ খাতে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আদায় করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এ কর প্রত্যাহার করতে হবে। এসময় করপোরেট ট্যাক্স কমানোর প্রস্তাব করেন তিনি।
সাংবাদিকদের বাড়িভাড়া হিসেবে পরিশোধিত অর্থকেও শতভাগ করমুক্ত রাখার দাবি জানিয়ে মতিউর রহমান বলেন, মূল বেতনের ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ি ভাড়ায় করমুক্ত রয়েছে। বর্তমান বেতন কাঠামোতে সাংবাদিকদের বাড়ি ভাড়া দেওয়া হয় ৭০ শতাংশ। অবশিষ্ট ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়ায় কর প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।