গোপালগঞ্জ হাসপাতালে খোলা আকাশের নিচে রোগী

গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে দিনকে দিন বেড়েই চলছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা।
গত ৭ দিনে ৩শ’র বেশি রোগী ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়েছেন। ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩৫-৪০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। এ হাসপাতালটিতে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য রয়েছে মাত্র ১২টি বেড। হাম-টিটেনাস-একলামশিয়া ও চিকেন ফস্কের জন্য রয়েছে ৪টি বেড। এ নিয়ে মোট ১৬টি বেডই ব্যবহার করা হয় ডায়রিয়া রোগীদের জন্য। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম।

ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত তাছলিমা বেগমের মেয়ে কলেজছাত্রী মীম অভিযোগ করেছেন, গত ৩দিন আগে আমার মাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, একমাত্র খাওয়ার স্যালাইন ছাড়া সরকারি হাসপাতাল থেকে আর কোনো ওষুধ দেয়নি। সব ওষুধই বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে। তারপরে আবার মাকে নিয়ে রাতযাপন করতে হচ্ছে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি ড্রেনের পাশে খোলা আকাশের নিচে।

নিয়মিত কোনো চিকিৎসক রোগীদের দেখতে না আসায় এবং সরকার থেকে বরাদ্দকৃত ওষুধ না পাওয়ায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। সরকারি হাসপাতাল থেকে ফ্রি ওষুধ পাওয়ার আশা বুকে বেঁধে অনেক অসহায় দরিদ্র রোগী ভর্তি হওয়ার পর ওষুধ না পেয়ে চিকিৎসা ছাড়াই ঘরে ফিরে যাচ্ছে এমন রেকর্ডও রয়েছে এই হাসপাতালে।
অভিযোগ করে রোগীর স্বজনরা বলছে, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা ও খোলা ম্যানহোলের ভেতরে পচা-বাসি খাবারের দুর্গন্ধে নানান রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছে তারা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বীকার করে বলছেন, গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চাহিদার চেয়ে বেড সংখ্যা কম থাকা এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসক না থাকায় রোগীদের ওয়ার্ডের ভিতরে ও বাইরে বিভিন্ন খোলা জায়গায় থাকতে হচ্ছে।

হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের সম্পূর্ণ অভিযোগ ঠিক না। গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৬১ জন চিকিৎসকের পোস্ট থাকলেও বর্তমানে চিকিৎসক আছে মাত্র ২৫ জন। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম।

ছোট পরিসরের ডায়রিয়া ওয়ার্ডটি বড় করে এবং বেড সংখ্যা বাড়িয়ে চিকিৎসকদের শূন্য স্থান পূরণ করে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করবেন এমন প্রত্যাশা করেন ভুক্তভোগীরা।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment