৯ বছর ধরে অপেক্ষায় আশুলিয়া উড়াল সড়ক

২০১১ সালে নেওয়া হয় ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের উদ্যোগ। এখন ২০১৯ সালের জুন পেরিয়ে যাচ্ছে। ৯ বছরেও উড়াল সড়কটির নির্মাণকাজ শুরু করা যায়নি। চীনের মাধ্যমে জিটুজি পদ্ধতিতে উড়াল সড়কটি নির্মাণের কথা।

নির্মাণকাজ দূরের কথা, ঋণচুক্তিই সম্পন্ন হয়নি এখনো। এ প্রকল্প নেওয়ার আগে চীনাদের গতি ছিল অত্যধিক, কিন্তু অর্থায়নের বেলা খোঁজ কম। বরং ইআরডি মনে করিয়ে দেওয়ার পরও দৃশ্যত কানে শুনছে কম দেশটি। তবে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন জুলাইয়ের চীন সফরে এ প্রকল্পের বিষয়টি এজেন্ডাভুক্ত হতে পারে বলে আশা করছেন সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা।

চীন সরকারের এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তির জন্য ইতোমধ্যে ৭ দফা চিঠি দিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। গত ২০ মে চীনা দূতাবাসের কাছে পাঠানো সর্বশেষ চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রকল্পের ঋণচুক্তি স্বাক্ষর না হওয়ায় ডিজাইন প্রণয়নের জন্য পরামর্শককে সাইটে মোবিলাইজ করতে পারছে না ঠিকাদার। এর ফলে কাজটি শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।

এ বিষয়ে ঢাকা-আশুলিয়া উড়াল সড়কের প্রকল্প পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন খান আমাদের সময়কে বলেন, ঋণচুক্তির অভাবে কাজটি শুরু করা যাচ্ছে না। আশা করছি প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। সে ক্ষেত্রে দেশটির এক্সিম ব্যাংকের প্রতিনিধিরা ঢাকা সফরে এসে তাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার পর পথ ত্বরান্বিত হতে পারে। জানা গেছে, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি শাহজালাল বিমান থেকে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল হয়ে নবীনগর মোড় এবং ইপিজেড হয়ে চন্দ্রা পর্যন্ত থাকবে।

২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর একনেকের অনুমোদন পাওয়া এ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এটি নির্মাণে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশনের (সিএমসি) সঙ্গে ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর ১৩৫৯.০৩ মিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যিক চুক্তি হয়েছে। পরবর্তীতে চীন সরকারের নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী চুক্তিমূল্যের ৮৫ শতাংশ হিসেবে ১১৫৫.১৮ মিলিয়ন ডলারের ঋণ প্রস্তাব গত বছরের ২১ অক্টোবর পাঠানো হয় ইআরডিতে। এর পর ইআরডি থেকে চীনা দূতাবাসে পাঠানো হয় ওই বছরের ২৫ অক্টোবর। এর পর এক্সিম ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ডকুমেন্ট নেওয়া হয়। কিন্তু অগ্রগতি নেই। ঝুলে আছে ঋণচুক্তির প্রক্রিয়া।

অবশ্য চুক্তি হলেও অর্থছাড়ের আগে শর্তপূরণের (ইফেকটিভনেস) ধাপ পার হতে বেশ সময় লাগে। সব মিলে আগামী বছরের আগে নির্মাণকাজ শুরুর সুযোগ কম। সূত্রমতে, আশুলিয়া উড়াল সড়ক প্রকল্পের শুরুতে বিতর্ক হয় চীনা প্রতিষ্ঠান সিএমসিকে নিয়ে। প্রথমে সমীক্ষা ছাড়াই অত্যধিক ব্যয় নির্ধারণ দিয়ে বিতর্কের শুরু। তা ছাড়া এমওইউ সইয়ের পর চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানিকে সাবকন্ট্রাক্ট দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এসব করতে গিয়ে হংকংয়ে অর্থ লেনদেনসহ নানা খবর আসে সে সময়। এর আগে পিপিপির ভিত্তিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। দ্বিতীয় দফা দরপত্র আহ্বান করে সাড়া না পেয়ে বিদেশি অর্থায়নের পথে হাঁটে সেতু বিভাগ।

আপনি আরও পড়তে পারেন