দুই অভিষেক সেঞ্চুরির লড়াইয়ে শেষ হাসি আভিশকার

ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস- ক্রিকেটে কথাটি বহুবার সত্যি প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু উইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে একাধিক ক্যাচ ছাড়ার পরও দলকে হারতে দিলেন না মালিঙ্গা-মাথ্যুসরা। উইন্ডিজকে তারা হারালো ২৩ রানে।

৪৬তম ওভারে মালিঙ্কার বলে লং অফে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন ১১২ রানে রানে ব্যাট করতে থাকা নিকোলাস পুরান। কিন্তু বাউন্ডারি লাইন থেকে কি মনে করে এগিয়ে এসেছিলেন তা কেবল থিসারা পেরেরাই জানেন। যে বলটি রসগোল্লার মতো তার হাতে পড়ার কথা সেটিই কিনা মাথার উপর দিয়ে চলে গিয়ে চার হয়ে গেলো! ৪৮তম ওভারে সহজ ক্যাচ ছাড়েন উদানা। ম্যাথুসের বলে লং অনে কটরেলকে ছাড়েন তিনি। কিন্তু তার আগে পুরানকে ফিরিয়ে দলে স্বস্তি এনে দেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। পুরো ম্যাচে বলই করলেন না। ম্যাচের অন্তিম সময়ে তার হাতে বল তুলে দিলেন অধিনায়ক। বল হাতে নিয়ে দলের প্রয়োজন শতভাগই পূরণ করে দিলেন অভিজ্ঞ ম্যাথুস। শেষে এসে দুই ওভারে দিলেন ৬ রান। আর তাতেই তার দল জয় পেয়ে গেলো ২৩ রানের।


ম্যাচে দুই একটি করে সেঞ্চুরি হয়েছে। দুজন ব্যাটসম্যানেরই এটা অভিষেক সেঞ্চুরি। কিন্তু আভিষকা ফার্ন্ডান্ডোর কাছে হার মানতেই হলো নিকোলাস পুরানকে।

বিশাল লক্ষ্য মাথায় নিয়ে ব্যাটে নেমেই বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২২ রান তুলতেই চলে যান ওপেনার সুনীল আম্রিস এবং দারুণ ফর্মে থাকা শেই হোপ। প্রথম ২ উইকেট তুলে নেয়ার সঙ্গে উইন্ডিজদের রানের চাকাও টেনে ধরেন মালিঙ্গা।

এরপর শিমরন হিটমেয়ারের সঙ্গে জুটি গড়েন ক্রিস গেইল। নিজের খোলস ছেড়ে বের হতে হতেই রাজিথার শিকার হয়ে ফেরেন গেইল। হিটমেয়ারও তাকে অনুসরণ করেন ২৯ রানে। এরপর শুরু হয় নিকোলাস পুরানের প্রতিরোধ। শেষ দিকে এসে তার সঙ্গে মিলে দ্রুত রান তোলেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। দলকে জয়ের স্বপ্নও দেখাচ্ছিলেন দুজন। কিন্তু তাদের ভুলবুঝাবুঝিতে রান আউটের ফাঁদের পড়েন অর্ধশতক করা অ্যালেন। বিপদে পড়া দলকে টানতে টানতে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করে ফেলেন পুরান।

এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে কঠিন লক্ষ্য দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কা। আগে ব্যাট করতে নেমে আভিশকা ফার্নান্ডোর সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩৮ রান তোলে তারা।

চেস্টার লে স্ট্রিটে টস জিতে আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। শুরুটা দুরুণ করে দিয়ে যান দুই ওপেনার কুশাল পেরেরা এবং দিমুথ করুনারত্মে। তাদের জুটি থেকে আসে ৯৩ রান। অধিনায়ক করুনারত্মে ৩২ রানে ফিরলে ক্রিজে আসেন আভিশকা ফারনান্ডো।  ৬৪ রানে রান আউটে কাটা পড়েন কুশাল পেরেরা। এরপর কুশাল মেন্ডিস ৩৯, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ২৬ করে ফিরে গেলেও লড়াই চালিয়ে যান আভিশকা। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে তিনি ফেরেন কটরেলে শিকার হয়ে।। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন লাহিরু থিরিমান্নে। তিনি অপরাজিত থাকেন ৪৫ রানে। আর শ্রীলঙ্কা তাদের ইনিংশ শেষ করে ৩৩৮ রানে।

বল হাতে ২টি উইকেট তুলে নেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন কটরেল, থমাস এবং অ্যালেন।

স্কোর:
শ্রীলঙ্কা ৩৩৮/৬ (৫০)

দিমুথ করুনারত্নে ৩২ (৪৮)
কুশাল পেরেরা ৬৪ (৫১)
অভিশকা ফারনান্ডো ১০৪ (১০৩)
কুশাল মেন্ডিস ৩৯ (৪১)
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ২৬ (২০)
লাহিরু থিরিমান্নে ৪৫* (৩৩)
ইসুরু উদানা ৩ (৬)
ধনঞ্জয় ডি সিলভা ৩* (৬)

বোলার
শেলডন কটরেল ১০-০-৬৯-১
ওশানে থমাস ১০-১-৫৮-১
শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ৫-০-৪৬-০
জেসন হোল্ডার ১০-০-৫৯-২
কার্লস ব্রাথওয়েট ৭-০-৫৩-০
ফ্যাবিয়ান আ্যলেন ৮-০-৪৪-১

টার্গেট ৩৩৯।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩১৫/৯ (৫০)
ক্রিস গেইল ৩৫ (৪৮)
সুনীল আম্রিস ৫ (৬)
শেই হোপ ৫ (১১)
শিমরন হিটমেয়ার ২৯ (৩৮)
নিকোলাস পুরান ১১৮ (১০৩)
জেসন হোল্ডার ২৬ (২৬)
কার্লস ব্রাথওয়েট ৮ (১৫)
ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ৫১ (৩২)
শেলডন কটরেল ৭* (১০)
ওশানে থমাস ১ (৬)
শ্যানন গ্যাব্রিয়েল ৩* (৭)

বোলার
লাসিথ মালিঙ্গা ১০-০-৫৫-৩
ধনঞ্জয় ডি সিলভা ১০-০-৪৯-০
ইসুরু উদানা ১০-০-৬৭-০
কুশান রঞ্জিথা ১০-০-৭৬-০
জেফরি ভ্যান্ডারসে ৭-০-৫০-১
দিমুথ করুনারত্নে ১-০-৭-০
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ২-০-৬-১

আপনি আরও পড়তে পারেন