রাজধানীতে হরতালের প্রভাব নেই

ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে হরতাল ডেকেছে বিএনপি। রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টায় হরতাল শুরু হলেও রাজধানীতে এর প্রভাব নেই। তবে হরতালের কারণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে।

সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দোকান-পাট, অফিস-আদালত সবকিছুই খোলা থাকতে দেখা গেছে। ভোর থেকেই চলছে সব ধরনের যানবাহন।

শিডিউল অনুযায়ী কমলাপুর থেকে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে ট্রেন সার্ভিস। দূর পাল্লার যানবাহন, লঞ্চও চলছে যথারীতি। ভোর থেকেই বিএনপির ডাকা হরতালে জনজীবনে তেমন প্রভাব পড়েনি। রাস্তাঘাটে পিকেটারদেরও দেখা মিলেনি।

রোববার ভোর থেকেই রাজধানীর প্রায় সব রুটেই গণপরিবহনের পাশাপাশি সব ধরনের যান চলাচল করছে। তবে প্রাইভেট যানবাহনের সংখ্যা কিছুটা কম। সকাল থেকে কাজে ছুটছেন নগরবাসী।

ভোর থেকেই কমলাপুর, যাত্রাবাড়ি, মতিঝিল, পল্টন- প্রেসক্লাব, শাহবাগ-কাকরাইল, মালিবাগ, মগবাজার, রামপুরা, খিলক্ষেত, বিশ্বরোড, এয়ারপোর্ট, মহাখালী, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, নিউমার্কেট, জিগাতলাসহ রাজধানীর সবকটি রুটেই স্বাভাবিক যান চলাচল করছে। তবে অন্যদিনের চেয়ে কিছুটা কম।

জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আশরাফ সিদ্দিকী বলেন, বিএনপির হরতাল চোখে পড়েনি। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তেমন কোন প্রভাব নেই বললেই চলে। আমি সকাল ৮টার দিকে শান্তিনগর থেকে গণপরিবহনে গুলশানে এসেছি।

সকাল থেকেই পল্টন মোড়, প্রেসক্লাব ও সচিবালয় এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। দোকান পাট সবকিছুই খোলা রয়েছে। প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সচিবালয়ে কাজ চলছে স্বাভাবিক।

পল্টন মোড়ে মাঝে মাঝে যানজট দেখা যাচ্ছে। বিএনপি কার্যালয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন।

সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী এলাকা থেকে হরতালে ছেড়ে যাচ্ছে দূরপাল্লার যানবাহন। সায়েদাবাদ বাস মালিক সমিতির দপ্তর সম্পাদক গোলাম সামদানী জানান, সকাল থেকেই পরিবহন চলছে। তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না।

মহাখালী বাস টার্মিনালের মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম জানান, ময়মনসিংহ, জামালপুরসহ আন্তঃজেলাগামী সকল পরিবহন মহাখালী থেকে ছেড়ে যাচ্ছে। এখনো কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

হরতালকে কেন্দ্র করে পল্টন মোড়, বিএনপি কার্যালয়সহ নগরজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সামাল দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্থাপনায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে প্রিজন ভ্যান, জলকামান, রায়টকার।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় জানান, দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে পুলিশ এমনিতেই কড়া নিরাপত্তার চাদরে ঘিরে রেখেছে রাজধানী । বিএনপি হরতাল ডাকায় নিরাপত্তার বিষয়টি আরো জোরদার করবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তায় পুলিশ সতর্ক অবস্থানে থাকবে। সাধারণ মানুষের কোনো ক্ষতি হতে দেবে না। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

রোববার সকালে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করে বলেন, প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে হরতাল কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে আর নগরীতে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

শনিবার রাতে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে ঢাকায় সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয় জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন