‘ট্যালেন্ট বয়’ সন্দীপ!

তিন বছর আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে জয়ী হল হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অদম্য ক্ষুদে শিক্ষার্থী সন্দীপ সুত্রধর। হাইকোর্টের আদেশে পরীক্ষার খাতা পুনঃ নিরীক্ষনের পর লাভ করলো ট্যালেন্টপুল বৃত্তি। শুধু তাই নয়, তার আইনি লড়াইয়ের কারনেই পাল্টে গেল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি অমানবিক নীতি। এ যেন দূর্গম হিমালয় জয়! হবিগঞ্জের সন্দীপ এখন সারাদেশের ‘ট্যালেন্ট বয়’।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সনের পিইসি পরীক্ষায় এ পাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয় মেধাবী শিক্ষার্থী সন্দীপ সূত্রধর। কিন্তু বৃত্তি প্রাপ্তদের তালিকায় তার নাম না থাকায় সন্দেহ প্রবণ হয়ে উঠেন তার অভিভাবক। পরীক্ষার খাতা পুনঃ নিরীক্ষনের দাবি জানিয়ে সংশিষ্ট দপ্তরে আবেদন করেন সন্দীপের পিতা এডভোকেট সুধাংশু সূত্রধর। কিন্তু নীতিমালার দোহাই দিয়ে তার আবেদনটি অগ্রাহ্য করে সংশিষ্ট দপ্তর। এরপর উপায়ন্তর না দেখে ২০১৭ সালের ১০ জুলাই সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন (নং-৮৮৩২/২০১৭) দায়ের করেন সন্দীপের পিতা। পিটিশনের প্রেক্ষিতে হবিগঞ্জ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০১৬ সনের সকল পিইসি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতা ও নম্বরপত্র তলব করা হয়।

খাতা ও নম্বরপত্র পর্যালোচনার পর আদালত নিশ্চিত হন সন্দীপ সুত্রধরকে তুলনামূলক কম নম্বর দেয়া হয়েছে। পরে নম্বরপত্র সংশোধন করে তার নাম বৃত্তিপ্রাপ্ততের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতের নির্দেশে ২০১৯ সালের ২৬ ডিসেম্বর সন্দীপকে ট্যালেন্টপুল বৃত্তিপ্রাপ্তদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয় এবং বিষয়টির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে পত্র প্রেরণ করা হয়। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর একই তারিখে এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি ও গ্রেজেড প্রকাশ করে। শুধু তাই নয়, রীট পিটিশনের আলোকে নীতিমালারও আংশিক পরিবর্তন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ফলে পরিবর্তিত নীতিমালা অনুযায়ী ২০২০ সাল থেকে ইচ্ছে করলেই যে কোন এ পাস প্রাপ্ত পিইসি শিক্ষার্থী পরীক্ষার খাতা পুনঃ নিরীক্ষনের সুযোগ পাবে এবং সকল পরীক্ষার্থীর ফলাফল বিবরনীতে গ্রেডের সঙ্গে ‘প্রাপ্ত নম্বর’ উল্লেখ থাকবে। এডভোকেট সুধাংশু সূত্রধরের পক্ষে রীট পিটিশন মামলা পরিচালনা করেন এডভোকেট জয়া ভট্টাচার্য্য।

আপনি আরও পড়তে পারেন