নওগাঁয় অধিক ফলনশীল পেঁয়াজ চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষক

দেশে পেঁয়াজের সংকট চলছেই। বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজের যে দাম সেটাও সাধারণ মানুষদের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে চলে আসছে। খুবই কষ্টসাধ্য বিষয়। তাই পেঁয়াজের এই সংকট থেকে উত্তোরনের আশায় নওগাঁর রাণীনগর কৃষকরা অধিক ফলনশীল পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে পেঁয়াজের আবাদ। বর্তমান বাজারে পেঁয়াজের দাম ভালো থাকায় আগামীতেও পেঁয়াজ চাষে লাভবান হবেন কৃষক আর পেঁয়াজ সংকট থেকে মুক্তি পাবেন সাধারণ মানুষরা এমনটাই আশা।

পেঁয়াজ দৈনন্দিন জীবনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পণ্য। পেঁয়াজ ছাড়া স্বাদ হয় না কোন খাবার। দীর্ঘ সময় ধরে চলা পেঁয়াজ কেলেঙ্কারীর পর বর্তমানে দেশিয় পেঁয়াজের দাম কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে এলেও এখনো উর্দ্ধমুখি পেঁয়াজের বাজার। তাই এই পেঁয়াজ সংকট থেকে মুক্তির জন্য জেলার রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার কৃষকরা চাষ করছেন অধিক ফলনশীল জাতের পেঁয়াজ বারি-১৫। এই পেঁয়াজটি বছরে ৩বার চাষ করা যাবে।

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের সার্বিক সহযোগিতায় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বাস্তবায়নে কৃষকদের মাঝে অধিক ফলনশীল পেঁয়াজ বীজ বিতরণ করে তাদেরকে পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। এছাড়াও দেশিয় পেঁয়াজের বাজার ভালো থাকায় ধানের বার বার লোকসান পুষিয়ে নিতে কৃষকরা এই পেঁয়াজ চাষের দিকে বেশি ঝুঁকছেন। সোমবার এই পেঁয়াজ বোপন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ মো. ইসরাফিল আলম।

কাশিমপুর গ্রামের কৃষক মো. লিয়াকত আলী পূর্বপশ্চিমের এই প্রতিবেদককে বলেন, ধান চাষ করে বার বার লোকসান দিয়ে আসছি। আর বর্তমান সময়ে পেঁয়াজের সংকট চলছে। তাই এই সংকট থেকে উত্তোরণের জন্য আমি এবার ২বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করছি। আমাকে বিনামূল্যে এমপি সাহেব ও কৃষি কর্মকর্তারা পেঁয়াজ বীজ দিয়েছেন। আগামীতে আরোও বেশি করে পেঁয়াজ চাষ করবো।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, পেঁয়াজ সংকট দূর করার লক্ষ্যে কৃষকদেরকে অধিক ফলনশীল পেঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে ও বিনামূল্যে অধিক ফলনশীল পেঁয়াজ বীজও বিতরণ করা হচ্ছে। এই জাতের পেঁয়াজের আবাদ এই অ লের কৃষকরা কখনোও করেননি। স্থানীয় সাংসদের পাশাপাশি কৃষি বিভাগও অধিক লাভজনক এই পেঁয়াজ চাষে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে। আশা রাখছি এভাবে পেঁয়াজ চাষ বৃদ্ধি পেলে আগামীতে এই অ লে উৎপাদিত পেঁয়াজে স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে দেশের অন্যান্য স্থানেও চালান করা সম্ভব হবে। আর লাভবান হবেন এই অঞ্চলের কৃষকরা।

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলম বলেন, এবার বাংলাদেশের সীমিত আয়ের মানুষ, কৃষক এবং শ্রমিক ৩৫০ টাকা কেজি পেঁয়াজ খেতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের এই ক্ষোভ-বিক্ষোভের মানবিক শক্তিকে একটা ইতিবাচক উৎপাদনশীল শক্তিতে রূপান্তরিত করাই হলো দেশের রাজনৈতিক ও চিন্তাশীল মানুষদের দায়িত্ব হওয়া উচিত। সারাদেশে সর্বস্তরে জনপ্রতিনিধি, কৃষক এবং প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা একসাথে এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে যদি কাজ করে তবেই আমরা পেঁয়াজ আমদানি করে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করার হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমি বিদেশ থেকে আনা অধিক ফলনশীল ৩৯ কেজি পেঁয়াজের বীজ বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছি এবং নিজে ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করছি। সারাদেশে এই কার্যক্রম ছড়িয়ে পড়ুক তবেই আমরা ধানের মত, মাছের মত, পশুপালনের মত পেঁয়াজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবো ইন শা আল্লাহ।

আপনি আরও পড়তে পারেন