‘মন্ত্রী, ডিসি, এসপি সব নিয়ন্ত্রণে’, সেই সাজুকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ

শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে এক কর্মী সমাবেশে ‘আশার আলো প্রভাতি সংস্থা’র চেয়ারম্যান ডা. মো. শফিকুল ইসলাম সাজু দাবি করেন, ‘মন্ত্রী, এমপি, ডিসি, এসপি সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে। তার এ বক্তব্য সারাদেশে ব্যাপক আলোচিত হয়। এর পর থেকে সাজুকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে ।তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ!

রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গণমাধ্যমকে এ কথা জানান সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল হোসেন।

ওসি জানান, ‘আশার আলো প্রভাতি সংস্থা’র চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সাজুকে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে। এ কারণে তার সংস্থার অফিসে অভিযান চালানো হয়। সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে সাজুকে গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

শফিকুল ইসলাম সাজু ও তার সংস্থা সম্পর্কে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক আবদুল মতিন জানান, সংগঠনটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে সংস্থাটির চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম সাজুকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ডাকবাংলা বাজারে এক কর্মী সমাবেশে বক্তব্য দেন শফিকুল ইসলাম সাজু। সেখানে তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধা ডিস্ট্রিকের ডিবি (পুলিশ) কন, ওসি কন, এসপি কন, ডিসিসহ যতো কিছুই কন, সব আমাদের নিয়ন্ত্রণে চলে। সাত উপজেলায় এমপি, মন্ত্রী, চেয়ারম্যান যতো কিছুই থাক না কেন, আমার চেয়ে বড় মাইকেল কেউ নেই। আমি চ্যালেঞ্জ দিলাম, কোনো এমপি, মন্ত্রী যদি আমার সঙ্গে টিকে থাকতে পারে তাহলে সংস্থা থেকে বহিষ্কার হয়ে যাবো।’

কর্মী সমাবেশে সাজু আরও বলেন, ‘আমার মতো ৬৪ জেলায় ৬৪ জন ছেলে জন্ম নিলে দেশে এমপি-মন্ত্রী বা সরকার লাগতো না। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার সাঘাটা-ফুলছড়ির এমপি। আর আমি গোটা জেলার দায়িত্বে, কাজ করতে সরকার আমাকে অনুমতি দিয়েছে।’

সাজু বলেন, ‘সরকার শিক্ষা ভাতা ৬ মাসে দেয় ৩০০ টাকা, আমি দেই ৯০০ টাকা। কম দিচ্ছি নাকি? সরকারের সঙ্গে যুদ্ধ করা লাগলেও আমি করব, তবুও জনসেবা করব। কোথাও কেউ আমার কোনো কর্মীর কাজের প্রতিবাদ করলে তোমরা আমাকে অবগত করবা, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের তুলে আনব। অন্যথায় ক্ষমতা ছাড়ব।’

সাজুর ওই বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। এরপর জেলা প্রশাসক তাকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দেন।

আপনি আরও পড়তে পারেন