জমি না পেয়ে জমিক্রেতাকে পেটালো এএসপি

নরসিংদীর পলাশে নিজের পছন্দের জমি কিনতে না পেরে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে মোরশেদ আহম্মেদ (৪০) নামে এক ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদপুর জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) জ্যোতির্ময় সাহা অপুর বিরুদ্ধে।

শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার পলাশ বাজারে এএসপির নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

আহত মোরশেদের মাথায় ৭টি সেলাই দেয়া হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক। মোরশেদ পলাশ বাজারের একজন কাপড় ব্যবসায়ী।

চিকিৎসাধীন মোরশেদ বলেন, ১৫ দিন আগে পলাশের সাবেক চেয়ারম্যান ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগমের কাছ থেকে পলাশ বাজার এলাকায় সাড়ে ৬ শতাংশ জমা ৪২ লাখ টাকায় কেনার জন্য কথাবার্তা ঠিক করে। পরে ওই সম্পত্তি কেনার জন্য দুই ধাপে ২০ লাখ টাকা বায়নাও করে। আগামি এক মাসের ভেতরে পুরো টাকা পরিশোধ করে ওই সম্পত্তি তার নামে দলিল করার কথা।

কিন্তু তিনি জানতেন না যে, এই সম্পত্তির ওপর আগে থেকেই এএসপি জ্যোতির্ময় সাহার নজর ছিলো। তিনি এই সম্পত্তি কিনতে চান এমন কোনো কথা আগে কখনও স্থানীয়দের বা প্রতিবেশিদের কাছে বলেননি। দুপুরে দোকানে লোক পাঠিয়ে এএসপি জ্যোতির্ময় সাহার কথা বলে, তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়।

সেখানে যাওয়ার পর প্রথমেই এএসপি জ্যোতির্ময় সাহা তাকে বাপ-মা তুলে গালাগালি শুরু করেন। একপর্যায়ে তার গালে থাপ্পড় মারার সঙ্গে সঙ্গে উনার রুমে থাকা জাকির ও শাহিন নামে দু’জন কাঠের লাঠি দিয়ে তাকে এলোপাথাড়ি পেটানো শুরু করে।

পেটানোর সময় এএসপি জ্যোতির্ময় সাহা বলতে থাকে, ‘তোর এত বড় সাহস? আমি যে সম্পত্তি কেনার জন্য ঘুরতেছি- তুই সে সম্পত্তি বায়না করার সাহস পাইলি কই? তোর এত টাকা আসলো কোথায় থেকে, কোথায় পেলি সেই সাহস। তাদের মারধরের একপর্যায়ে মোরশেদ অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

মোরশেদের মামা মোহাম্মদ টিটু মোল্লা বলেন, মোরশেদকে এএসপি জ্যোতির্ময় সাহার বাড়িতে আটকে রেখে মারধর করছে এমন খবর পেয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে অজ্ঞান অবস্থায় এএসপির বাড়ি থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করা হয়েছে। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নরসিংদীর এসপিকেও অবগত করেছি।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য এএসপি জ্যোতির্ময় সাহা অপুর ব্যক্তিগত মোবাইলে কল দিলে অপুর খালাত ভাই পরিচয় দিয়ে রনি ফোন রিসিভ করে জানান, উনি ঘুমাচ্ছেন। উনার সঙ্গে কথা বলতে হলে পরে বলতে হবে।

এ ব্যাপারে পলাশ থানার ওসি শেখ মো. নাসির উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে থানা পুলিশকে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন