শাওন-টয়া: প্রস্তাব দেওয়ার পরদিনই বিয়ে

ছোট পর্দায় জুটি পোক্ত হওয়ার আগেই বাস্তব জীবনের জুটি পাকাপাকি করেছেন অভিনেত্রী মুমতাহিনা টয়া ও অভিনেতা সৈয়দ জামান শাওন। গেল ২৯ ফেব্রুয়ারি খানিকটা আচমকা মেঘে বিজলীর মতোই দুই হাত এক করতে বিয়ে করেন তারা। 

শাওন ও টয়ার পরিচয়ের সময়টা লম্বা হলে, প্রেমের ব্যাপ্তি স্বল্প আর বিয়ের সময়টায় হুটহাট করেই। জানুয়ারি মাসেই শাওনের জন্মদিন পালন করতেই চমকের আয়োজন করেন টয়া। কিন্তু সেই চমকেই সবার সামনে নতুন চমকের ঘোষণা দেন শাওন। জাকজমকভাবে বিয়ের আয়োজন না হলেও কাছের মানুষদের নিয়ে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন শাওন-টয়া। বিয়ের পর নতুন জীবনের অভিজ্ঞতা, হানিমুনের পরিকল্পনা ছাড়াও নানা বিষয় নিয়ে এ নব-দম্পতি সময় সংবাদের মুখোমুখি হয়েছেন। সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরেছেন মহিব আল হাসান

সময় সংবাদ: নতুন জীবনের শুরু, কেমন অভিজ্ঞতা?

শাওন: মনে হচ্ছে একটা রেসের মধ্যে আছি। খুব দ্রুত সময় চলে যাচ্ছে। আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে একের পর এক দাওয়াত। সবাই আমাদের এখানে এসেও অভিনন্দন জানাচ্ছেন। সবকিছু মিলিয়ে নতুন জীবনে এই কয়েকটা দিনে বেশ ভালোই অভিজ্ঞতা বলতে পারি।

টয়া: হঠাৎ করেই বিয়ের কথাটি শুনেই মোটেও অপ্রস্তুত ছিলাম না। ভালোবাসার মানুষকে পরিবারের পছন্দে জীবনসঙ্গী করতে পেরে আনন্দিত। আর পরিবার থেকে সাধুবাদ জানানোর কারণেই বিয়ের পাটটা চুকিয়েই ফেলি।

সময় সংবাদ: বিয়ের প্রস্তাব প্রথম কে কিভাবে  দিয়েছিলেন?

শাওন: ঘটনাটা বেশ মজার। আমার জন্মদিনে টয়া সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করে টয়া। সেখানেই আমি টয়াকে চমক দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করি। কারণ এর আগে টানা তিন-চারদিন আমাদের তুমূল ঝগড়া হয়। মূলত রাগ ভাঙাতেই বিয়ের এই সিদ্ধান্ত নেই। আমি প্ল্যান করি- টয়া যেখান থেকে কেক অর্ডার করে সেখানে বলে কেকের ভেতরে রিং রেখে দেবো। পরে আমাদের ফ্রেন্ড সানজানাকে বলে ম্যানেজ করি। একটা পর্যায়ে কেক কাটার পর টয়া ভাবছে পার্টি প্রায় শেষ। এমন সময় রিংটা নিয়ে প্রপোজ (প্রস্তাব) করি।

সময় সংবাদ: আপনার আয়োজনে আপনাকেই সারপ্রাইজ।

টয়া: আমি আয়োজন করলাম সারপ্রাইজ পার্টি, কিন্তু দেখলাম ও (শাওন) সব জানতো। সেই আয়োজনে সে উল্টা প্রপোজ করে আমাকে সারপ্রাইজ করলো আমাকে। প্রথম পাঁচ মিনিট আমি কিছু বুঝতেই পারিনি কি হচ্ছে আমার সঙ্গে।

সময় সংবাদ:  এত তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিলেন কিভাবে?

টয়া: প্রথমে ভাবছি শাওন আমার সঙ্গে মজা করেছে। পরে বুঝলাম এতো মানুষের মাঝে যেখানে ওর পরিবারের লোকজন আছে এখানে নি ডাউন হয়ে তো দুষ্টামি করতে পারে না।

সময় সংবাদ: সম্মতি কি সাথে সাথেই দিয়েছিলেন?

টয়া: পার্টিতেই শাওনকে ইয়েস বলেছিলাম। আমাদের আগে থেকে সিদ্ধান্ত ছিল। তাই দুই পরিবারের সম্মতির মাধ্যমে আমাদের বিয়ের পাটটা তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যায়।

শাওন: ২৯ ফেব্রুয়ারি, বিয়ের জন্য এই তারিখটাও হুট করে ঠিক করা। জন্মদিনে যে প্রপোজ করা হয় সেটা ছিল আন-অফিশিয়ালি অ্যানগেজমেন্ট। এরপর থেকে পুরো ব্যাপারটা দুই পরিবারের মনিটরিংয়ের বিষয় হয়ে দাঁড়াল। তারা মিলে আবার আংটি পরানোর ব্যবস্থা করে এবং বিয়ের তারিখ ঠিক করে।

সময় সংবাদ: আপানাদের দুজনার ভালো লাগা শুরু কবে থেকে?

টয়া: আমাদের একটি কাজ করতে গিয়ে পরিচয় হয়। এরপর থেকে হ্যাঙ্গ-আউট করা শুরু করি। আমার বন্ধুদের সঙ্গে এবং তার বন্ধুদের সঙ্গে আমি মিশতে শুরু করি। একসঙ্গে ঘুরতে যায়। এভাবেই আমাদের একে অপরের সঙ্গে ভালো শুরু হয়েছে। আর যা ঘটার সেটা ছয় মাসেই ঘটেছে। কিন্তু দু’জন যখন কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ি তখন বুঝতে পারি আমারা একজন অন্যজনকে মিস করছি। তখন বুঝতে পারি আমরা আসলে বন্ধু না। এর চেয়েও বেশি কিছু ভাবছি। সেই জায়গা থেকে একদিন শাওন এসে বললো- দেখো টয়া, আমি আসলে দুই এক বছর প্রেম করবো তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে বিয়ে করবো, এসবের মধ্যে যেতে চাই না। একদম সরাসরি বলছি- আমি তোমাকে বিয়ে করবো। তুমি কি আমার সঙ্গে থাকবে? তখন আমিও সায় দিলাম। বললাম, আমার পরিবারও চাচ্ছে-এখন বিয়ে করি। যতদূর দেখেছি, দারুণ মনের মানুষ শাওন।

সময় সংবাদ: স্বামী হিসেবে শাওন কেমন?

টয়া: মাত্র তো কিছুদিন হলো। এরপরও যদি বলি, ভীষণ কেয়ারিং। প্রতিটা প্রতিটা মেয়ে চায় তার বাবার মতো কেউ তার লাইফে আসুক। আমার বাবা আমাকে যেভাবে টেক-কেয়ার করেছে। শাওনের মাঝে আমি সেই ব্যাপারটি দেখেছি।

সময় সংবাদ: বউ হিসেবে কেমন টয়া?

শাওন: মাইক্রোফোনটা আমার হাতে দেন আগে! না হলে আবার হিতে বিপরীত শুরু হবে (হাসি)। প্রাথমিকভাবে সত্যি কথা হচ্ছে টয়ার খুব ইগো। ও আমাকে খুব ভালোবাসে। ওর একজন মানুষকে আপন করে নেয়ার ক্ষমতা প্রবল। মাঝে মাঝে ছেলে মানুষী করে, কখনো ম্যাচিউরড বিহ্যাব করে। সবচেয়ে বড় কথা যেটা- মানুষটা আমাকে খুব ভালোবাসে, খুব কেয়ার করে।

সময় সংবাদ: হানিমুনে কবে কোথায় যাচ্ছেন?

শাওন ও টয়া: আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ঈদের পর আমরা হানিমুনে যাব। আমাদের ইচ্ছা আছে আমরা ভুটানে যাব।

 

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন