দেশেই তৈরি হলো বিশ্বমানের ভেন্টিলেটর

করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি। করোনায় গুরুতর আক্রান্তদের চিকিৎসায় শেষ ভরসা ভেন্টিলেটর। করোনা রোগীদের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা উপকরণ ভেন্টিলেটরের একটি বিশ্বমানের মডেল বাংলাদেশেই তৈরি হয়েছে; এখন অপেক্ষা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের।

সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বিশ্বের খ্যাতনামা মেডিকেল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মেডট্রনিকের ‘পিবি ৫৬০’ মডেলের স্পেফিকেশনে ‘ডব্লিউপিবি ৫৬০ ভেন্টিলেটর’ তৈরি করেছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন।

মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ওয়ালটনের তৈরি এই ভেন্টিলেট তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরে বলেন, তিনটি মডেলের ফাংশনাল প্রোটোটাইপ শিগগির ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে প্রেরণ করা হবে।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পাওয়ার পর পরীক্ষামূলক ও বাণিজ্যিক উৎপাদনে যেতে পারবে ওয়ালটন।

করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে ভেন্টিলেটরের চাহিদা বেড়ে যাওয়া সারাবিশ্বেই এ নিয়ে তৈরি হয় সংকট উল্লেখ করে জুনাইদ আহমেদ পলক জানান, আয়ারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান মেডট্রোনিক সঙ্গে পিবি৫৬০ মডেলের ভেন্টিলেটরের নকশা অনুযায়ী ফাংশনাল প্রোটোটাইপের তিনটি ভেন্টিলেটরের মধ্যে একটি যৌথভাবে তৈরি করেছে ওয়ালটন। যৌথভাবে তৈরি এ ভেন্টিলেটরের নাম দেওয়া হয়েছে ডব্লিউপিবি ৫৬০।

তিনি আরও জানান, অন্য দুটি ওয়ালটনের নিজস্ব উদ্ভাবন। আর ওয়ালটনের নিজস্ব উদ্ভাবনে তৈরিকৃত ভেন্টিলেটরের নাম ‘ওয়ালটন কোভিড বিল্ড ভেন্টিলেটর ২০২০ বা ডব্লিউসিভি-২০ এবং অন্যটি ডব্লিউএবি-২০’।

করোনাভাইরাসের মহামারী দীর্ঘ হলে দেশে তৈরি মানসম্মত ভেন্টিলেটরে চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হওয়ার আশা প্রকাশ করে পলক বলেন, এটুআই ইনোভেশন ল্যাব থেকে ১৮টি ভেন্টিলেটর তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর মান যাচাই বাছাই করা হচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে ওয়ালটনের প্রধান প্রকৌশলী গোলাম মোর্শেদ বলেন, আয়ারল্যান্ডের মেডট্রনিক কোম্পানি ভেন্টিলেটরটির যন্ত্রাংশের জোগান দিচ্ছে। তারা বিভিন্ন দেশের ৫টি কোম্পানির সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে উৎপাদনে যাওয়ার ব্যাপারে একমত হয়। ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত এ ভেন্টিলেটরের সংযোজন হবে ওয়ালটনের কারখানায়।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন। আইসিটি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, এলআইসিটি প্রকল্পের আইটি-আইটিইএস পলিসি অ্যাডভাইজার সামি আহমেদ, ওয়ালটনেরপরিচালক লিয়াকত আলী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, করেনাভাইরাসে গুরুতর আক্রান্ত রোগী শ্বাসযন্ত্রের জটিলতা বেড়ে যায়।এসময় ফুসফুসের সংক্রমণ বেড়ে গেলে সঙ্কটাপন্ন ব্যক্তিকে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র বা ভেন্টিলেটর সেবা দেওয়া জরুরি হয়ে পড়ে। করোনা মহামারিতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বিশ্বের অন্যদেশগুলোর মতোই আমাদের দেশের হাসপাতালগুলোতেও ভেন্টিলেটর সংকট বিদ্যমান।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন