সাকিবের নিষেধাজ্ঞার পেছনে পাপনের দায় কতটুকু?

সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার পেছনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের দায় কতটুকু? সমর্থকদেরকে এমন প্রশ্ন করলে, বেশিরভাগই জবাব দেবেন, দায়টা বিসিবি বসের। আইসিসির চিঠি কিংবা গণমাধ্যমের ব্যাখ্যা, কোনোভাবেই পাল্টাতে পারেনি তাদের ধারণা। যদিও, এবার সাকিব নিজেই মুখ খুলেছেন। জানিয়েছেন, বিশ্বকাপেরও আগে থেকেই তিনি জানতেন, শাস্তি পেতে যাচ্ছেন। এমনকি বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কিনা, সে বিষয়েও অনিশ্চিত ছিলেন সাকিব।

গেল বছর ২২ অক্টোবর ক্রিকেটারদের আন্দোলন শুরু হওয়ার পর, গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বলেন, ম্যাচ ফিক্সিং কে করেছে তা বের হয়ে আসবে। আপনারা অপেক্ষা করেন, সব জানা যাবে।

সাকিব আল হাসানের নিষেধাজ্ঞার দিন কয়েক আগে বিসিবি সভাপতির এমন মন্তব্যের রেশ ধরে ফুঁসে ওঠেন সাকিব ভক্তরা। তার নিষেধাজ্ঞার জন্য দায়ী করেন বিসিবি বসকে। আইসিসি’র নিষেধাজ্ঞাপত্রের ব্যখ্যা কিংবা গণমাধ্যমের খবরে বিশ্বাস করেন না কেউই। তাদের দৃঢ় বিশ্বাস, বিসিবি সভাপতির চাওয়াতেই ১ বছরের নির্বাসনে যেতে বাধ্য হন টাইগার অলরাউন্ডার। এই এক বছরেও পাল্টায়নি তাদের বদ্ধমূল ধারণা।

এক ক্রিকেট ভক্ত জানান, সাকিবের বিষয়টা চাইলে বিসিবি সভাপতি অন্যভাবেও সামলাতে পারতেন। কিন্তু তখন তার ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ।

আরেক সমর্থক বলেন, বিসিবি সভাপতি হিসেবে তার যে দায়িত্ব ছিল সেটি তিনি তখন পালন করতে পারেননি।

মূলত নিষেধাজ্ঞার ক’দিন আগে ক্রিকেটারদের আন্দোলনকে ঘিরে ধোঁয়াশার শুরু। ২৯ অক্টোবর সাকিবের নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা আসে। আর তার সপ্তাহখানেক আগে তার নেতৃত্বে শুরু হয় আন্দোলন। দুইয়ে দুইয়ে চার মিলিয়ে সমর্থকরা মনে করেন, ক্রিকেটারদেরকে দমাতেই সাকিবের বিষয়ে এমন সিদ্ধান্ত!

বিষয়টি নিয়ে এই এক বছরে মুখ খুলেননি কেউই। নিষেধাজ্ঞা শেষে দেশে ফেরার আগে এবার সাংবাদিক এবং সমর্থকদের নানা প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন সাকিব। সেখানেই খুলে বলেছেন সব।

এক প্রশ্নের উত্তরে সাকিব বলেন, তদন্ত শুরু হয় নভেম্বর-ডিসেম্বরের দিকে। আমি হয়তো বিশ্বকাপ নাও খেলতে পারতাম। আমি জানতাম এমন কিছু একটা হতে যাচ্ছে। অনেকদিন ধরেই তদন্ত চলছিল।

তার মানে, জুন-জুলাইয়ের ওয়ানডে বিশ্বকাপের অনেক আগে থেকেই সাকিব জানতেন, তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। শাস্তিও পেতে যাচ্ছেন তিনি! আর তিনি যে ভুল করেছেন সেটিও অবলীলায় স্বীকার করে নিয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।

সাকিব বলেন, নিষিদ্ধ হওয়ার পর অবশ্যই আমার আফসোস হয়েছে। আমি রিগ্রেট ফিল করেছি। এজন্য অনুতপ্তও হয়েছি। এমন মিসটেক করা আমার কোনভাবেই উচিত হয়নি।

আন্দোলন এবং নিষেধাজ্ঞার ঘটনায় সাকিব আল হাসান এবং বিসিবি সভাপতির মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল এটুকু সত্য। তবে একপাক্ষিকভাবে পাপনকে যেভাবে দোষারোপ করেছে একাংশ সমর্থক, সেটিরও কি কোন যৌক্তিকতা আসলে ছিল?

আপনি আরও পড়তে পারেন