বরিশালে চলছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় দিপাবলী উৎসব

বরিশালে চলছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় দিপাবলী উৎসব

বরিশালে চলছে ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় শশ্মান দিপাবলী উৎসব। শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) থেকে শুরু হয়ে শনিবার রাত ১০টায় শেষ হবে এ উৎসব। তবে এবার করোনার প্রকোপ ঠেকাতে ভারত উপমহাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় শশ্মান দিপাবলী উৎসব সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজন করা হয়েছে।

মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি কামনায় মোমবাতির আলোয় আলোকোজ্জ্বল হয়েছে পুরো শশ্মান এলাকা। এ সময় স্বজনহারারা তাদের প্রিয়জনের আত্মার শান্তি কামনায় প্রার্থনা করেন।

 

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি কুডু পূর্বপশ্চিমকে জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস কালি পূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা আর্চনা করলে মৃত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি মৃত প্রিয়জনের উদ্দেশ্যে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করেন নানা ধরণের খাবার। আজ থেকে শুরু হওয়া শশ্মান দিপাবলী উৎসব শনিবার রাত ১০টায় শেষ হবে। দীপাবলী উৎসবকে ঘিরে নগরীর কাউনিয়ায় মহাশশ্মান এলাকায় নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সভাপতি আরো জানান, ৫ একর ৯৬ শতাংশ মহাশ্মশানের পুরনো শ্মশানের অধিকাংশ সমাধি ধ্বংস হয়ে গেলেও এখনো সেখানে ব্রাক্ষ্মণদের ২/৩টি এবং রূপসী বাংলার কবি জীবনান্দ দাসের পিতা সত্যানন্দা দাস ও পিতামহ সর্বানন্দা দাস, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালি চন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সমাধি রয়েছে। নতুন পুরনো মিলিয়ে মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ এবং ৮শ’ মঠ রয়েছে যাদের স্বজন এই দেশে নেই।

স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি প্রজ্জলন করা হয়। ১৯২৭ সাল থেকে ওই স্থানে শ্মশান দিপাবলী উৎসব পালিত হয়ে আসছে। উপমহাদেশের মধ্যে এ মহাশ্মশানকে ঘিরে সবচেয়ে বড় শ্মশান দিপাবলী হয় বলে সনাতন ধর্মাবলম্বিদের দাবি। তবে এ বছর করোনার কারনে প্রথমবারের মত এ উৎসবে ভাটা পড়ছে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) খাইরুল আলম বলেন, নিরাপত্তার জন্য স্থাপন করা হয়েছে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও দিপাবলী উৎসব নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে সব বাহিনীর সমন্বয়ে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকধারী পুলিশ, গোয়েন্দা সংস্থা এবং র‌্যাব উৎসবকালীন সময়ে সার্বক্ষণিক মহাশ্মশানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন