বড় শিল্পে করোনার প্রণোদনা তহবিলের ঋণ বিতরণ প্রায় শেষ হলেও অর্ধেকই বাকি এসএমইখাতে। ব্যাংকের চাহিদামত জামানত আর কাগজপত্রের জটিলতায় ঋণ পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ এসএমই উদ্যোক্তাদের। এ অবস্থায় ঋণ বিতরণের সময় মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, যোগ্য উদ্যোক্তারা ঋণ না পাওয়ার অভিযোগ করলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কাঠের তৈরি রুটিমেকারে বাজিমাত এসএমইখাতের এক প্রতিষ্ঠানের। অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে গত চার বছরে ২৫ হাজার রুটি মেকার বিক্রির পাশাপাশি আসবাব কারখানাও গড়ে তুলেছেন এক উদ্যোক্তা। যেখানে কর্মসংস্থানও হয়েছে অনেকের। কয়েকটি ব্যাংকের সাথে বছরে কোটি টাকার লেনদেন থাকলেও ঋণ পাওয়ায় জটিলতা কাটেনি বলে জানান এসএমই উদ্যোক্তা জাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ব্যাংকের কিছু ডকুমেন্টেশনের ব্যাপার রয়েছে। ফাইনালি তারা চায় জামানত। আমার স্ত্রীও উদ্যোক্তা। সে নারী হিসেবেও ঋণ পায়নি।
করোনা মহামারিতে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনার ঋণ পাননি চামড়াজাত পণ্য ও পোশাক নিয়ে কাজ করা নারী উদ্যোক্তা তানহা আক্তার। তিনি বলেন, করোনার সময়ে আমি ব্যাংক ঋণের জন্য আবেদন করা করেছি। তিন-চার মাস হয়ে গেছে তাদের থেকে কোন সাড়া পাইনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, এসএমইখাতে ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঋণ ছাড়ে দফায় দফায় সময় বাড়ানোর পরও ডিসেম্বর শেষে বিতরণ হয়েছে মাত্র ৫৪ শতাংশ। যেখানে বৃহৎ শিল্পে বিতরণের হার প্রায় ৯৩ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, যদি নতুন কোন উদ্যোক্তা তার সবকিছু ঠিক থাকার পরও ব্যাংক থেকে ঋণ না পায়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছ অভিযোগ আসলে খতিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়া হবে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের প্রতিষ্ঠানে ঋণ দেয়ার প্রক্রিয়া সহজ করার দাবি জানান এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান। তিনি বলেন, এসএমই খাতে ঋণ রিটার্নের হার ৯৮ শতাংশ। এর থেকে বোঝা যায় তাদেরকে ঋণ দেওয়া রিস্কমুক্ত। এর ফলেও তারা ঋণ পাচ্ছে না।
উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পেতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরিতে সহায়তা দিতে হেল্প ডেস্ক গঠন করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।