সাতক্ষীরায় এবার ব্যাপক সরিষার চাষ হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে সরিষার ফুল থেকে মধু আহরণ। রফতানির সঙ্গে সঙ্গে এ বছর সংরক্ষণের জন্য চলছে মধু প্রক্রিয়াজাতকরণ। সে জন্য বিদেশি চাহিদা বিবেচনা করে মধু রফতানিতে সরকারি উদ্যোগ ও স্বল্প সুদে ঋণ দাবি উৎপাদনকারীদের। মৌমাছির পরাগায়নে সরিষা উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মধু উৎপাদন করে চাষিরা লাভবান হবেন বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
যত দূর চোখ যায় পুরো মাঠ যেন ঢেকে আছে হলুদের গালিচায়। সরিষার রূপ আর গন্ধে মাতোয়ারা চারপাশ। আর তারই বুকজুড়ে মৌমাছির অবিরাম খেলা। এর মধ্যেই সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ক্ষেতের চারপাশে পোষা মৌমাছির হাজার হাজার বাক্স নিয়ে হাজির মৌয়ালরা।
সাতক্ষীরা জেলায় সদর, কলারোয়া ও দেবহাটাসহ ৭টি উপজেলায় সরিষার চাষ হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফসলের কোনো রোগবালাই দেখা যায়নি এখনো। এতে দ্বিগুণ ফলনের আশা সরিষা ও মৌ চাষিদের।
সুন্দরবন সংলগ্ন জেলা সাতক্ষীরায় দেশের অর্ধেক মধু উৎপাদন হয়। এবার সাতক্ষীরায় মধু প্রসেসিং করতে বসানো হয়েছে মৌ প্লান্ট। প্রসেসিং করা মধুর বিদেশে ব্যাপক চাহিদা থাকায় সরকারকে রফতানির ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন মধু ব্যবসায়ীরা।
মধু উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকারিভাবে স্বল্প সুদে ঋণ সুবিধা পেলে বেড়ে যাবে মধু ও সরিষা উৎপাদন।
সরিষার ক্ষেতের পাশে মৌমাছির বাক্স রেখে মধু সংগ্রহ করলে পরাগায়নের ফলে সরিষার উৎপাদন ১৫-২৫ ভাগ বৃদ্ধি পায় বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক নূরুল ইসলাম বলেন, এ বছর ২ হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার মৌ-বাক্স সেট করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রায় আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টন মধু উৎপাদন হবে।
জেলায় এবার সাড়ে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে, যা থেকে সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। আর এই সরিষার ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ হবে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টন।