৫২ শ্রমিকের মৃত্যু : সেজান জুস মালিকের শাস্তি দাবি

৫২ শ্রমিকের মৃত্যু : সেজান জুস মালিকের শাস্তি দাবি

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সেজান জুস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ জন শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় কারখানা মালিক ও কলকারখানা পরিদর্শককে গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। তারা নিহত শ্রমিকের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদান, আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনেরও দাবিও জানিয়েছে।

শনিবার (১০ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এসব দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রানা প্লাজা, তাজরীন, টাম্পাকোর পর আবারও মালিকের অতি মুনাফার লোভ ও রাষ্ট্রের অবহেলার নির্মম শিকার হলেন ৫২ জন শ্রমিক। সরকারি ২৭টি প্রতিষ্ঠান থেকে অনুমোদন সাপেক্ষে কারখানা করার আইন থাকলেও ৬তলা কারখানা ভবন নির্মাণে কোনো বিল্ডিং কোড মানা হয়নি, অগ্নি নির্বাপনের জন্য ফায়ার সেফটির ব্যবস্থা ছিল না, জরুরি বহিঃনির্গমণের জন্য ভবনে যেখানে ৪টি সিঁড়ি থাকার কথা সেখানে ছিল মাত্র ২টি। গেট খোলা থাকার কথা থাকলেও তা তালা বন্ধ ছিল। নিয়ম ভেঙে কারখানা ভবনেই কেমিক্যালসহ দাহ্য পদার্থ গুদামজাত করা ছিল। ৪ তলার গেট খোলা থাকলে হয়ত অধিকাংশ শ্রমিক বাঁচতে পারত।

তারা বলেন, শিশুশ্রম নিষিদ্ধ থাকার পরও আইনের লংঘন করে কারখানাটিতে ১২ বছর থেকে ১৭ বছর পর্যন্ত শিশু-কিশোর শ্রমিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এত সব অনিয়ম দেখার দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান কল-কারখানা পরিদর্শন অফিসের। অথচ তারা কারখানা পরিদর্শন করেনি। ফলে এটি একটি রাষ্ট্রীয় অবহেলাজনিত কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড।

তারা আরও বলেন, অবিলম্বে সেজান জুসের শ্রমিক হত্যার দায়ে কারখানা মালিক এম এ হাশেম, সংশ্লিষ্ট কারখানা পরিদর্শকসহ দায়ীদের গ্রেফতার, বিচার এবং নিহত সকল শ্রমিককে আইএলও কনভেনশন ১২১ অনুযায়ী আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ও আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার দাবি জানাই। অন্যথায় বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশব্যাপী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।

সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা কমরেড মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া প্রমুখ।

আপনি আরও পড়তে পারেন