কক্সবাজারে খাবার নিয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে তরুণরা

জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে টানা কয়েকদিন ধরে ভারী বর্ষণে কক্সবাজারে সৃষ্ট বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। দুর্গত এলাকায় বসবাসরত মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের অভাব।

এ সংকটে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রমের পাশাপাশি এগিয়ে এসেছে স্থানীয় তরুণ নেতৃত্বের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। তবে যার যার অবস্থান থেকে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

রামুর উপজেলার চাকমারকুল ইউনিয়নে বন্যাদুর্গত শতাধিক পরিবারের মধ্যে রান্না করা শুকনো খাবার বিতরণ করেছে ইয়ুথনেট কক্সবাজার টিম। ইয়াসিদ এবং ডিভা অর্গানাইজেশনের সার্বিক সহায়তায় ১ আগস্ট শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষ সবার কাছে তুলে দেন  রান্না করা খাবার। খাবার সহায়তা পেয়ে বন্যা কবলিত এলাকার পরিবারগুলো সন্তুষ্ট।

এ বিষয়ে ইয়ুথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিসের কক্সবাজার জেলার সমন্বয়কারী জিমরান মো. সায়েক বলেন, সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক নদী ভাঙন আর প্রবল বন্যায় গৃহহীন, সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। চরম আকারে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। বিশুদ্ধ পানির অভাবে দেখা দিচ্ছে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগ। তাই ইয়াসিড এবং ডিভা অর্গানাইজেশন বন্যাকবলিত মানুষদের জন্য এই যৌথ উদ্যোগের সঙ্গে আমরা শামিল হয়েছি।

ইয়াসিড’র প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক কায়ছার হামিদ জানান, বিগত গত ৪ দিন ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে রান্না করা খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। ভয়াবহ বন্যায় খাবার সংকটে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে রান্না করা ও শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

কক্সবাজারে ভারী বর্ষণে মাটির ঘরসহ পাহাড় ধসে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাহাড় ধসে পাঁচ রোহিঙ্গাসহ মারা গেছেন ১২ জন। পানিতে ভেসে গিয়ে প্রাণ গেছে এক রোহিঙ্গা শিশুসহ আট জনের।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, জেলার ৭১টি ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভার মধ্যে ৫১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৫২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৭৬ হাজার ৫০০ পরিবারের আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন। প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা বলে ধারণা করা হচ্ছে। পানি শুকিয়ে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা সম্ভব হবে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা কাজ করছি। বন্যাকবলিত এসব মানুষের জন্য ৩০০ টন চাল ও নগদ ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানিসহ যেকোনো জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বন্যায় এবং পাহাড় ধসে নিহতদের পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। সরকারের পাশাপাশি যার যার অবস্থান থেকে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে হবে।

 

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন