শেখ কামালের সঙ্গে কেউ একটু মিশলেই ভুলতে পারতো না: সালমান এফ রহমান

শেখ কামালের সঙ্গে কেউ একটু মিশলেই ভুলতে পারতো না: সালমান এফ রহমান

শেখ কামালের ৭২তম জন্মদিন উপলক্ষে তারই সৃষ্ট আবাহনী লিমিটেড ভার্চুয়ালি বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা এবং আবাহনী লিমিটেডের চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান এ অনুষ্ঠানে এসে প্রয়াত বন্ধুর নানাদিক নিয়ে আলোকপাত করেছেন।

আবাহনী প্রতিষ্ঠার নেপথ্য কারণ হিসেবে সালমান এফ রহমান জানালেন, ‘আবাহনী তথা ক্রীড়াঙ্গনে শেখ কামালের অনেক ভূমিকা ছিল। আমার মনে আছে, আবাহনী প্রতিষ্ঠা করার আগে ওর (শেখ কামাল) সঙ্গে অনেক কথা বলেছি। তখন মোহামেডান ছাড়া আর ভালো মানের দল ছিল না। ফুটবলকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে হলে প্রতিযোগিতা দরকার। প্রতিযোগিতার জন্য সেই সময় মোহামেডানের মানের কোনও দল আমাদের নেই। সেই কারণে আবাহনীর যাত্রা শুরু।’

শেখ কামাল বেঁচে থাকলে এখন দেশের ক্রীড়াঙ্গন অনেক এগিয়ে যেতে পারতো। সালমান এফ রহমান বলেছেন, ‘যদি সে বেঁচে থাকতো ফুটবলেও অনেক এগিয়ে যেতে পারতাম। ক্রিকেটে বাংলাদেশ আগেই নাম করতো। তার স্বপ্ন ছিল আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নাম করতে পারবো আমরা। সেটা অন্তত আমরা অর্জন করতে পেরেছি। আমি বিশ্বাস করি, কামাল বেঁচে থাকলে যেভাবে এগিয়ে গেছি, তা দেখে খুশি হতো। শুধু ফুটবল ক্রিকেট বা হকি নয়, অন্য খেলাতেও আগ্রহ ছিল। নিজেও খেলতো। কামাল আসলে একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তিত্ব, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী।’

কামালের অন্যদিক নিয়ে বলতে গিয়ে আবাহনী লিমিটেডের চেয়ারম্যান বলেছেন, ‘সে সিনিয়রদের সম্মান করতো। শ্রদ্ধা করতো। সমবয়সীদের সঙ্গে হইচই করতো। জুনিয়রদের আদর। এই গুণটা তার ছিল। কেউ যদি যদি ১০ মিনিট তার সংস্পর্শে আসতো, তাহলে ওই ব্যক্তি চিরদিনই কামালকে মনে রাখবে। তার সঙ্গে দেখা করা কিংবা মেশার পর আপনি তাকে ভুলতে পারতেন না। প্রভাব থেকে যেতো। যারাই সরাসরি কাজ করেছে, তারা কেউ সমালোচনা করতে পারবে না। প্রশংসা করবে।’

শেখ কামাল ক্রীড়াঙ্গন, সংস্কৃতি ও রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত থাকতেন। অন্যকিছু তাকে টানতো না। সালমান এফ রহমান উদাহরণ টেনে বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর যে পজিশন, উনি জাতির পিতা। বঙ্গবন্ধুর কথাতেই সবাই চলতো। চিন্তা করা যায়, ওই সময় বঙ্গবন্ধুর ছেলে হিসেবে ও কত ক্ষমতাবান হতে পারে। কত ব্যবসায়ী গেছে ওর কাছে। তাকে পার্টনারশিপের অফার করেছে। কিন্তু কোনও ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়নি কামাল। এমনকি ফোনও করেনি। জাপান যাওয়ার সময় বন্ধু হিসেবে তাকে বলেছি কী আনবো? ও শুধু বলেছে, স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীর জন্য ইলেকট্রিক অর্গান আনতে।’

করোনাভাইরাসের প্রভাব কমলে আগামী শীত মৌসুমে আবাহনী ক্লাবে কমপ্লেক্স নির্মাণের কাজ শুরু হবে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন সালমান এফ রহমান, ‘কামাল যা শুরু করে দিয়েছে। মাঝে পিছিয়ে গিয়েছিলাম। জননেত্রী শেখ হাসিনা আসার পর আবারও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। সমর্থন করে যাচ্ছেন। আজকে ক্রিকেটেও এগিয়ে যাচ্ছি। অন্য জায়গাতেও এগিয়ে যাবো। আবাহনী কমপ্লেক্স নির্মাণের সবকিছু রেডি ছিল। করোনার কারণে হয়নি। কোভিড কমে গেলে শীতকালে নির্মাণকাজ শুরু হবে।’

শেখ কামাল নিহত হওয়ার পর আবাহনী ক্লাব যাদের কারণে টিকে আছে, তাদের অন্যতম কাজী শাহেদ আহমেদ। সালমান এফ রহমান এই বর্ষীয়ান কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেছেন, ‘এখানে মুস্তফা কামাল আছে। ক্রিকেট যেই জায়গায় আছে, এর পেছনে তার অবদান আছে। হারুন ভাইসহ অনেকেই আছেন। কর্নেল শাহেদকে (কাজী শাহেদ আহমেদ) মনে করছি। যিনি আমাদের অনেক খারাপ সময়ে টিকিয়ে রেখেছেন। উনি আজকে এই অনুষ্ঠানে থাকতে পারছেন না। তার ছেলে নাবিল (কাজী নাবিল আহমেদ) আছে। তাকেও ধন্যবাদ দিতে চাই। সবার সহযোগিতায় আবাহনী এই পর্যায়ে আছে।’

অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও হারুনুর রশীদ এবং সমর্থক গোষ্ঠীর সভাপতি জিল্লুর রহমানও বক্তব্য দেন।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন