সপ্তম মাসে ৭ যমজ শিশুর জন্ম, তাদের মধ্যে ৭ ছেলে ও ৭ মেয়ে

সপ্তম মাসে ৭ যমজ শিশুর জন্ম, তাদের মধ্যে ৭ ছেলে ও ৭ মেয়ে

দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানের দ্য আহমেদ আল-কাদি প্রাইভেট হাসপাতালে সাত যমজ শিশুর জন্ম হয়েছে। তাদের মধ্যে সাত ছেলে ও সাত মেয়ে জন্ম নিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে চলতি বছরের জুলাই মাসে, যা আবার বছরের সপ্তম মাস।

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম আসমাল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানান, জন্ম নেওয়া শিশুদের মধ্যে তিন জোড়া মেয়ে ও তিন জোড়া ছেলে। আর একটি যমজে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্ম নেয়।

জোড়া সন্তান জন্ম দেওয়া এক মা নাজিয়া বক্স বলেন, এটি দারুণ এক অভিজ্ঞতা। যমজ বাচ্চা আমাদের পরিপূর্ণতার সংজ্ঞা। আমি ডাক্তার-নার্সসহ এই হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের সবাইকে তাদের চমৎকার সেবার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

যমজ সন্তান জন্ম দেওয়া আরেক মা অতিনা লাওয়েলা জানান, এটি ছিল তার প্রথম গর্ভধারণ। তিনি দুই ছেলে শিশু সন্তান জন্ম দেন। তাদের নাম রাখেন স্টিভেন ও রেজিস। তারা দুজন সুস্থ আছে। ছেলেদের জন্ম দিয়ে ধন্য বলে জানান তিনি।

কাকতালীয়ভাবে জোড়া শিশুর জন্মের ঘটনায় আহমদ আল-কাদি হাসপাতালের কর্মীরা বলেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি মোকাবিলা করে আমরা জয়ী হয়েছি। শিশুদের নিরাপদ রাখতে পেরেছি।

হেলেনগিওই সাবা জুলাই মাসে হাসপাতালে যমজ শিশু জন্ম দেন। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে দুর্দান্ত এক অভিজ্ঞতা হয়েছে। এ জন্য শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. কাসিমকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা প্রায় ১০ দিন হাসপাতালে ছিলাম। সবকিছু ভালো ছিল। আমাদের ছেলেদের জন্য ঈশ্বরকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি ডা. ডেভিড এনগোথো ও হাসপাতালের কর্মীদের তাদের পেশাদারিত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান। তার স্বামীর সহযোগিতার কথা স্মরণ করেন তিনি। শিশুরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ১৮ দিন আগে প্রসব হয়েছিল।

আয়সেগুল কায়গুসুজ জুলাই মাসে যমজ শিশু জন্ম দিয়েছিলেন। তিনি জানান, তার যমজ সন্তান জন্ম দেওয়া একটি অলৌকিক ঘটনা।

মা হওয়া ঈশ্বরের এমন একটি উপহার যা যেকোনো নারীর কাছে অকল্পনীয়। যাদের জীবনে সন্তান নেই। তারা জানে একটি সন্তান জন্ম দেওয়া কতটা সুখময় অনুভূতি। এটা সত্যিই একটি অসাধারণ উপহার যা আমি হৃদয়ের খুব কাছে রেখেছি।

আয়সেগুল কায়গুসুজ বলেন, মা হওয়া মানে ক্লান্ত হওয়া। আমার শরীর, আমার সময়, আমার অর্থ, আমার ঘুম ও আমার মানসিক স্বাস্থ্যকে আমার বাচ্চাদের বড় করার জন্য উৎসর্গ করা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটি মূল্যবান হবে। আমি হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের তাদের প্রচেষ্টার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাতে চাই।

উমিনাথি ও ইমিনাথি এমবাথাও জুলাই মাসে একই হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করে। তাদের মা ইয়ান্দিসওয়া ম্যাকিংওয়েন বলেছেন, তারা ঈশ্বরের আশীর্বাদপ্রাপ্ত। তাদের নামের অর্থ ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন।

তিনি বলেন, এএকে হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের কর্মীরা বেশ সহায়তা করেছেন। তারা বন্ধুত্বপূর্ণ ছিলেন। আমি প্রথমে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। এখন আমি আমার বাচ্চাদের সঙ্গে বাড়ি যেতে পেরে খুশি ও আত্মবিশ্বাসী।

এএকে হাসপাতালে প্রসূতি ওয়ার্ডের ইউনিট ম্যানেজার সিস্টার কাঁথা নাইডু বলেন, এই জাদুকরী সময়ের অংশ হতে পেরে আমি ও তার টিম অত্যন্ত গর্বিত।

তিনি বলেন, বছরের সপ্তম মাসে সাতটি যমজ বাচ্চা জন্ম নেয়, যাদের মধ্যে সাত ছেলে ও সাত মেয়ে। চমৎকার ও জাদুকরী এমন স্মৃতির অংশ হতে পেরে আমরা দারুণ খুশি।

ডারবানের দ্য আহমেদ আল-কাদি প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপক ইব্রাহিম আসমাল বলেন, একটি শিশুর জন্ম দারুণ সময়। তারা আশা, আনন্দ, সুখ ও ইতিবাচক সব ইঙ্গিত নিয়ে আসে। আমরা এই গৌরবময় সময়ের অংশ হতে পেরে আনন্দিত। যারা আমাদের এই বিশেষ সেবা নিয়ে গর্বিত করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। যমজ শিশুদের ভবিষ্যৎ যাত্রা সুন্দর ও সুখী হোক।

আপনি আরও পড়তে পারেন