সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ১২৯ রান

সিরিজ জিততে বাংলাদেশের দরকার ১২৯ রান

শুরুতে দেখে মনে হলো উইকেটের চরিত্রে পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক টম লাথাম। আজ (রোববার) সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি যে উইকেটে হচ্ছে, সেই পাঁচ নম্বর উইকেটেই সিরিজের শুরুর ম্যাচে গত বুধবার আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৬০ রানে গুঁটিয়ে গিয়েছিল সফরকারীরা। ব্যাট হাতে এ ম্যাচের শুরুটা ভালো করেছিল সফরকারীরা। শেষটাও খারাপ হলো না তাদের।

রোববার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতে নির্ধারিত ২০ ওভার ব্যাট করে ৫ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড তাদের স্কোরবোর্ডে জমা করতে পারে ১২৮ রান। এই ম্যাচ জয়ের সঙ্গে সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ১২৯ রান।

অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেই মন্থর উইকেটের ফায়দা কাজে লাগাতে অফ স্পিনার শেখ মেহেদী হাসানের হাতে নতুন বল তুলে দেওয়া হচ্ছে। যে নিয়মের ব্যতয় ঘটেনি রোববারও। তবে এদিন তার শুরুর ওভার দেখে মনে হলো ‘হাই স্কোরিং’ ম্যাচ হতে চলেছে মিরপুরে। মেহেদীর করা প্রথম ওভারে সহজেই টাইমিং পেয়েছেন নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন ও রাচিন রবীন্দ্র।

করোনাভাইরাস থেকে সেরে উঠে আজই প্রথমবার মাঠে নামেন অ্যালেন। মেহেদীর প্রথম ওভারে দুটি চার মারেন তিনি। ওই ওভার থেকে আসে ১১ রান। দ্বিতীয় ওভারে নাসুম আহমেদ খরচ করেন ৫ রান। দুই ওভারে কোনও সাফল্য না আসায় ‘প্রথা’ ভেঙে ইনিংসের তৃতীয় ওভারে পেসার মুস্তাফিজুর রহমানকে নিয়ে আসেন নিজের ১০০তম টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।

অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে সময় নেননি কাটার মাস্টারের খ্যাতি পাওয়া এই পেসার। নিখুঁত এক স্লোয়ারে বোকা বানান অ্যালেনকে। মাহমুদউল্লাহর হাতে ক্যাচ দিয়ে এই ওপেনার সাজঘরে ফেরেন ১৫ রান করে। দ্বিতীয় উইকেটের জুটি জমিয়ে তুলেছিলেন রাচিন ও উইল ইয়াং। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তুলছিলেন তারা। এই জুটি স্বাগতিক শিবিরে ভীতি ছড়ানোর আগে এবার মাহমুদউল্লাহ বোলিং নিয়ে এলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে।

অ্যাটাকে এসে সফল সাইফউদ্দিনের ইনিংসের সপ্তম ওভারে জোড়া আঘাতে ফেরান ইয়াং ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে। দুজনেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন বটে, তবে লাভ হয়নি তাতে। ইয়াং ২০ বলে সমান ২০ রান করে ফেরেন, রানের খাতা খুলতে পারেননি গ্র্যান্ডহোম। ৭ ওভার শেষে ৪৬ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে ব্ল্যাকক্যাপসরা।

এর আগে ইনিংসের ষষ্ঠ ওভার নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের সেই ওভার ৫ বলে শেষ করে দিয়েছেন আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ।

ইনিংসের একপ্রান্ত আগলে খেলছিলেন ওপেনার রাচিন। তাকে দশম ওভারে সাজঘরের পথ ধরালেন মাহমদুউল্লাহ নিজেই। রাচিন ফিরলেন ইয়াংয়ের মতো ২০ বল থেকে ২০ রান করে। পরের ওভারেই মেহেদীর বলে লাথাম ৫ রান করে আউট হলে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন একপ্রকার ফিকে হয়ে যায় কিউইদের। ষষ্ঠ উইকেটে হ্যানরি নিকোলস আর টিম ব্লান্ডেল হাল না ছেড়ে লড়লেন বাংলাদেশি বোলারদের বিপক্ষে।

নিকোলস-ব্লান্ডেল জুটি থেকে আসে ৬৬ রান। যেখানে নিকোলস ২৯ বলে অপরাজিত ৩৬ ও ব্লান্ডেল ৩০ বলে ৩০ রানের দুর্দান্ত দুটি ইনিংস উপহার দেন। এতে নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড তাদের স্কোর বোর্ডে জমা করতে পারে ১২৮ রান। এই ম্যাচ জয়ের সঙ্গে সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ১২৯ রান।

সিরিজের আগে দুই ম্যাচে বল হাতে সমান ২টি করে উইকেট নেন স্পিনার সাকিব আল হাসান। তবে এ ম্যাচে আর ২ উইকেট পেলে দুর্দান্ত কিছু মাইলফলক স্পর্শ করতেন তিনি। তবে কোনও উইকেটের দেখা পাননি বাঁহাতি স্পিনার। যদিও সে সুযোগ শেষ হয়ে যায়নি সাকিবের। আজ ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে কোনও উইকেটের দেখা না পেলেও বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বোলিংয়ে বৈচিত্র আনতে দেখা যায় সাকিবকে। নিজের কব্জি ব্যবহার করে কয়েকটি বল লেগ স্পিন করেন তিনি।

বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন সাইফউদ্দিন। এছাড়া মাহমুদউল্লাহ, মুস্তাফিজ, মেহেদী প্রত্যেকে নেন ১টি করে উইকেট।

আপনি আরও পড়তে পারেন