ভারত : ‘শেষ’ বিশ্বকাপে সফল হবেন অধিনায়ক কোহলি?

ভারত : ‘শেষ’ বিশ্বকাপে সফল হবেন অধিনায়ক কোহলি?

১৪ বছর আগে এই অক্টোবরের কোনো এক সময়েই ভারত বসেছিল টি-টোয়েন্টির মসনদে। অন্ধকার যুগ পেরিয়ে তেরঙ্গাদের আলোর দিশাও দিয়েছিল এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপই। তবে এরপর থেকে এ টুর্নামেন্ট যেন হয়ে আছে দলটির হতাশার এক মঞ্চই। একবার ফাইনাল খেললেও শিরোপা যে ধরা দেয়নি আর!

ভারত ২০০৭ বিশ্বকাপের পর যেসব দল নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে সেটাই বরং আশ্চর্যের বিষয়। সেরা সময়ের বিরাট কোহলি, অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি, যুবরাজ সিং, বীরেন্দর শেবাগদের নিয়ে পারেনি; হয়নি শিখর ধাওয়ান, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিনদের নিয়ে নতুন ভারতেরও। এ বিশ্বকাপে আবার হারানো শিরোপা পুনরুদ্ধারের মিশনে নামছে দলটি, যে মঞ্চ আবার অধিনায়ক কোহলির শেষও। আগেই জানিয়ে দিয়েছেন, এ বিশ্বকাপ শেষেই দলটির টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেবেন। অধিনায়ক কোহলি কি পারবেন নিজ অধিনায়কত্বে প্রথম ও শেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বমঞ্চে ভারতকে হারানো গৌরব ফিরিয়ে দিতে?

এ বিশ্বকাপ আবার দলটার জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতার সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নামছে দল, অথচ টস করতে নামবেন না ধোনি, এমন যে কখনো দেখেনি ভারত! সেই ভারতের সঙ্গে অবশ্য আছেন ধোনি, এবার বদলে গেছে তার পরিচয়, সাবেক অধিনায়ক ধোনি এখন দলটির ‘মেন্টর’। টস করতে নামবেন কোহলি, ডাগআউট থেকে ইনিংসের শুরুতে-মাঝপথে টোটকা দেবেন ধোনি, এমন কিছু যেন ভারতীয় সাফল্যের রেসিপিই!

বিশ্বকাপের আগে ফর্ম
সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজটা হেরেছে ভারত। তবে সেটাকে ‘ভারত’ বোলার চেয়ে তাদের দ্বিতীয় সারির দল বলে দিলেই যেন মানায় ভালো, সেই দল থেকে যে বিশ্বকাপে আসবেন একজন, কিংবা বড়জোর দু’জন!

এর আগে অবশ্য ইংল্যান্ডকে হারিয়েছেন কোহলিরা। সেটাকে আলোচনায় আনা যেতে পারে বরং। হোক নিজেদের মাটিতে, ধারে ভারে অনেক শক্তিশালী ইংলিশদের হারানো যে চাট্টিখানি কথা নয়!

এরপর আইপিএলের সুবাদে দলটা সংযুক্ত আরব আমিরাতে কাটিয়েছে বহুদিন। দলের সদস্যরা সেই ভেন্যুগুলোতেই দারুণ পারফর্ম করে এসেছেন টি-টোয়েন্টির বিশ্বমঞ্চে, যা দলের জন্য বেশ বড় একটা সুবিধাই বয়ে আনবে।

শক্তি ও দুর্বলতা
ভারতীয় দলে আছেন বেশ কিছু টি-টোয়েন্টির জন্য মানানসই বেশ কিছু পারফর্মার, যা দলটির শক্তি হিসেবেই বিবেচ্য। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুলরা বিশ্বের যে কোনো টি-টোয়েন্টি দলে অনায়াসে ঢুকে যেতে পারেন। স্পিন আক্রমণে বৈচিত্র্যও বড় একটা সুবিধা বয়ে আনবে দলটির জন্য। সঙ্গে যোগ করুন মোহাম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরাহ, ভুবনেশ্বর কুমারদের মতো অভিজ্ঞ পেসারদের। এই দল ফেভারিট না হয়ে যায় কোথায়!

তবে শক্তির পাশাপাশি দলের দুর্বলতাও বুঝি ব্যাটিং লাইনআপই। প্রতিভাবান হলেও মিডল অর্ডার যে এখনো দলটাকে কাঙ্ক্ষিত ভরসাটা দিতে পারেনি! সূর্যকুমার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়া, ঋষভ পান্ত, রবীন্দ্র জাদেজারা সবাই নিজেদের দিনে প্রতিপক্ষকে দুমড়ে মুচড়ে দিতে পারবেন বটে, কিন্তু নির্দিষ্ট একটা ভূমিকায় দলে একটা বড় সময় ধরে খেলে বিশ্বকাপে যাচ্ছেন না কেউ, ফলে এ একটা জায়গায় দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে ভারতের।

সম্ভাব্য পরিণতি
ভারত কাগজে কলমে টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা হিসেবেই যাচ্ছে বিশ্বকাপে। সে হিসেবে সুপার টুয়েলভ থেকে শীর্ষ দল হয়েই সেমিতে পা রাখার কথা দলটির। তবে নকআউট এই ভারতের জন্য একটা জটিল বিষয় হয়ে দাঁড়ায় হরহামেশাই। তবু স্কোয়াডের শক্তিসামর্থ্য বিবেচনায় শিরোপা জিততে না পারলেও অন্তত ফাইনাল খেলাই উচিত দলটির।

আপনি আরও পড়তে পারেন