আগামী দুই বছর দেশের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হবে। পাশাপাশি অ্যাসল্ট (হামলা) আসবে বলে আশঙ্কা করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় এসব কথা জানান তিনি। ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে লবিষ্ট ষড়যন্ত্র এবং বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের করণীয়’ শীর্ষক সভাটির আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন। এতে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেক।
ড. মোমেন বলেন, আগামী দুই বছর অনেক ষড়যন্ত্র হবে। বানোয়াট-মিথ্যা অ্যাসল্ট আসবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পার্লামেন্টের সদস্যের চিঠি লেখানোর মতো আরও অনেক চিঠি লেখানো হতে পারে।
মোমেন অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রের নেতাদের কাছে ১৮টি চিঠি দিয়েছে। এসব চিঠিতে অসত্য প্রচারণা চালানো হয়েছে। বিএনপি লবিস্ট নিয়োগ করে যুক্তরাষ্ট্রকে বলেছে, বাংলাদেশে যেন কোনো সহায়তা দেওয়া না হয়।
তিনি বলেন, ভাসানচর নিয়েও দলটি অপপ্রচার চালিয়েছে। ভাসানচর গেলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। সেখানে আমিরিকার নিরাপত্তা কীভাবে বিঘ্নিত হয়েছে, তার সদুত্তর দিতে হবে দলটিকে।
বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিদেশে অনেকেই লবিস্ট নিয়োগ করে। ব্যবসা ও রাজনৈতিক কারণে লবিস্ট নিয়োগ করা হয়। অন্য কোনো দেশের বিরোধীদল দেশের বিরুদ্ধে লবিস্ট নিয়োগ করে না। কিন্তু বিএনপি লবিস্ট নিয়োগে ৪ দশমিক ১৩ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। আমরা জানতে চাই, বিএনপি-জামায়াত লবিস্ট নিয়োগের হিসাব-নিকাশ দেখিয়েছে কি না। দলটি নির্বাচন কমিশনে সম্পদের হিসাবে লবিস্টের খরচ দাখিল করেছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। এতে দলটির নিবন্ধন বাতিল করা যায় কি না দেখতে হবে। এই টাকা বৈধভাবে গেছে কিনা, তারও ফয়সালা হওয়া দরকার।
ড. মোমেন বলেন, বিএনপি কত নিচে নামতে পারে তার একটি উদাহরণ দিতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারকে তারা কিডন্যাপ করতে চেয়েছিল। তবে, তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়। বিএনপি নোংরা পথ পরিহার করে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করুক।
দেশের জন্য লবিস্ট হয়ে কাজ করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লবিস্ট আমাদের দূতাবাস। তারা আমাদের এক নম্বর লবিস্ট। তবে দেশের জন্য নিজের পয়সায় অনেকেই লবিস্টের কাজ করেন। আমিও দেশের জন্য লবিস্টের কাজ করেছি।
এ সময় র্যাব প্রসঙ্গে মোমেন বলেন, র্যাবের কারণেই সন্ত্রাস কমেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় তারা কাজ করছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। তবে, র্যাবের বিরুদ্ধেই এখন ষড়যন্ত্র চলছে। র্যাব না থাকলে একটি দলের সুবিধা হয়। তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারবে। বাংলাদেশকে অশান্তির জনপদে পরিণত করতে পারবে।
ঢাকার সঙ্গে ওয়াশিংটনের গভীর সম্পর্ক জানিয়ে মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের গভীর সম্পর্ক। তারা এখানে অনেক বিনিয়োগ করেছে। এতে আমাদের উন্নয়ন হয়েছে। তবে এই বিনিয়োগ যেন না করে, সেজন্য লবিং হয়েছে। যারা এসব করেছে, তারা বাংলাদেশের মানুষের মঙ্গল চায় না। এ নিয়ে দেশবাসীর প্রশ্ন করা উচিত।