শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের

জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের আহ্বান মেনে অবিলম্বে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি জানিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমানের সই করা এক বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩১ জানুয়ারি) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, দেশের সবকিছুই চলছে। এমনকি বাণিজ্য মেলা ও বিপিএল খেলার আয়োজনও চলছে। কিন্তু সরকার আবার দুই সপ্তাহের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। যেন করোনা সংক্রমণ শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এখনও পর্যন্ত এই বন্ধ কতদিন চলবে এবং কীভাবে, কবে আবার খোলা হবে, এই ছুটি বাড়বে কি না সে বিষয়ে সরকারের কোনো দৃশ্যমান পরিকল্পনা নেই। ২০২০ সাল থেকে করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ ১৮ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এতে শিক্ষা ব্যবস্থার অপূরণীয় ক্ষতি সাধিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা সংকটের মুখে পড়েছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, স্কুল চালু করতে আর অপেক্ষা করা যায় না বলে মনে করে ইউনিসেফ ও ইউনেস্কো। জাতিসংঘের এ দুটি সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, বন্ধের ক্ষেত্রে স্কুলগুলো সবার শেষে এবং খোলার ক্ষেত্রে সবার আগে থাকা উচিত। ইউনিসেফ দেশে দেশে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, সর্বশক্তি দিয়ে হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকতে হবে। তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী সকলকে ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার মত দিয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, স্কুলে যেতে না পারার কারণে শিশু এবং তরুণ জনগোষ্ঠী যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তা হয়তো কখনোই পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। শেখার ক্ষতি, মানসিক সংকট, সহিংসতা ও নির্যাতনের সম্মুখীন হওয়া থেকে শুরু করে স্কুলভিত্তিক খাবার ও টিকা না পাওয়া, সামাজিক দক্ষতার বিকাশ কমে যাওয়া– শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তাদের শিক্ষাগত অর্জন এবং সামাজিক সম্পৃক্ততায় এর প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত দুই বছরে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রবণতা। শুধু ২০২১ সালেই আত্মহত্যা করেছে ১০১ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী। অনিশ্চয়তার ফলে বাড়ছে হতাশা।

তারা আরও বলেন, অনলাইন শিক্ষার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু গত দেড় বছরের বন্ধে ৯৪ শতাংশ গ্রামীণ শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষার আওতার বাইরে ছিল। শাসকদের পক্ষ থেকে এগুলো নিয়ে কোনো গবেষণা বা পরীক্ষানিরীক্ষা না চালিয়ে এবং কোনো দায়িত্ব না নিয়ে দফায় দফায় শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দেওয়া গোটা শিক্ষাব্যবস্থাকে ধসিয়ে দেবে।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আহ্বান জানান এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষাখাতের সাথে যুক্ত সকলকে টিকার আওতায় আনার পরিকল্পনা হাজির করার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামারির জেরে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে স্কুল। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলের ৪০ কোটির বেশি শিশু। এমন পরিস্থিতিতে গত ডিসেম্বরে স্কুলগুলো পুরোপুরি খুলে দেওয়ার আহ্বান জানায় জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ।

 

 

আপনি আরও পড়তে পারেন