শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাপ্তাহিক ছুটি দুদিন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং সরকারি অধীনস্থ অফিস চলবে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত।   

আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাপ্তাহিক বন্ধের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলেও জানান তিনি।

গত মাসের সাত তারিখ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে সারা দেশে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টার, শপিং মল, দোকানপাট, অফিস ও বাসাবাড়িতে আলোকসজ্জা না করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

জুলাই মাসের ১৯ তারিখ থেকে সারা দেশে এলাকা ভিত্তিক এক ঘণ্টা করে লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। যদিও বেশিরভাগ এলাকাতেই লোডশেডিং তার চেয়ে বেশি হচ্ছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, বেসরকারি অফিসের বিষয়ে কোন নির্দেশনা নেই। এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্দেশনা দিয়ে দেওয়া হয়েছে, সব সরকারি অফিসগুলোতে কোথাও কোনো পর্দা টাঙানো থাকবে না। এগুলো তুলে লাইট যত সম্ভব কম লাগলে যতটুকু চলবে এবং এয়ারকুলারও যথাসম্ভব কম ব্যবহার করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর প্রস্তাবও অনুমোদন করা হয়েছে, উনিও নির্দেশনা দিয়ে দিচ্ছেন, সপ্তাহে দুদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে।

কোন কোন দিন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা উনারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়) ঘোষণা করবে। এটা ফাইনাল হয়ে গেছে, উনারা আদেশ জারি করবে। এসব সিদ্ধান্তের কারণে দুইটা সুবিধা হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি জানান, একটা হলো বিদ্যুৎ সাশ্রয় হবে, আরেকটা হলো ট্রাফিক জ্যামটাও কমবে।

এসব সিদ্ধান্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের উদ্দেশ্যে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদ্যুৎ সাশ্রয় তো হবেই। দেখা যাক, পরবর্তী অবস্থা উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত চলুক। সাথে সাথে ট্রাফিক জ্যামটাও একটা ডিস্ট্রিবিউট হয়ে যাবে।

জুলাই মাস থেকেই জ্বালানি সাশ্রয়ে সরকারি অফিসের সময় কমিয়ে আনার বিষয়ে গুঞ্জন ছিল। ২১ জুলাই এ বিষয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, যদি দেখি বিদ্যুৎ ব্যবহার কম করে পুরো সময় অফিস করতে পারছি, তাহলে অফিসের সময় কমানোর দরকার নেই। আমরা পর্যালোচনার মধ্যে আছি কোনটা করলে ভালো হয়। এটি নির্ভর করছে পরিস্থিতির ওপর। অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে সেটা করা হবে। তবে এখন আমাদের ২৫ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে চলছে।

সরকার সব কর্মকাণ্ডকে স্বাভাবিক গতিতে রেখেই সব কাজ চালিয়ে নিতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাই প্রয়োজন না হলে সব কাজ স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।

করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের ১৬ মার্চের পর ৫৪৪ দিন বন্ধ ছিল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। করোনার দাপট কিছুটা কমে এলে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর শ্রেণিকক্ষে ফেরার সুযোগ পায় শিক্ষার্থীরা।

এরপর মোটামুটি স্বাভাবিক ধারায় ফিরতে শুরু করেছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে আবার বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে দুদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত এলো।

আপনি আরও পড়তে পারেন