পিরিয়ডের সময় সহবাস করলে কি বাচ্চা হয়?

পিরিয়ডের সময় সহবাস করলে কি বাচ্চা হয়?

মাসিকের সময় সহবাস করা যাবে কি?

মাসিকের সময় সহবাস করা যাবে কি না এই বিষয় নিয়ে আমাদের সমাজে কুসংস্কার, গুজব কিংবা জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই।

মাসিক (Menstrual cycle) ও সহবাস (sex) দুটো সম্পুর্ন আলাদা বিষয় হলেও একে অন্যের সাথে সম্পর্ক আলাদা নয়। একজন দম্পতির গুরুত্বপূর্ন ও সন্তান জন্ম নেওয়ার প্রয়োজনীয় ধাপ হল এই সহবাস বা যৌন মিলন করা।

 

https://www.youtube.com/watch?v=5Y1lkwINmv0

 

কিন্তু একজন নারীর ক্ষেত্রে কিছু বৈশিষ্টগত কারনে যৌন মিলনের কিছু প্রশ্নের সৃষ্টি হয়, কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। হ্যা আমি মাসিকের দিকেই ইঙ্গিত করছি।

মেয়েদের মাসিক একটি খুবই স্বাভাবিক দৈহিক প্রক্রিয়া। তো মাসের এই নির্দিষ্ট কিছু সময়ে নারীরা ঋতু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সময় পার করে থাকেন। তো বহুল প্রশ্নটি হল এই মাসিক চলাকালিন সময় কি যৌন কার্য বা সেক্স করা সম্ভব কি?

এক কথায় সহজ উত্তর হচ্ছে, ‘হ্যা’ সম্ভব। সম্ভব বলতে খুব ভালো ভাবেই সম্ভব। কিন্তু এর কিছু ইতিবাচক, নেতিবাচক ও সাবধানতার বিষয় রয়েছে যা আমি নিচে আলোচনা করব।

https://www.youtube.com/watch?v=K2LfOIiA35w

মাসিকের সময় সহবাস করার ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিকসমূহ

উপকারিতা

 

অপকারিতা

টিপস

পেইন রিলিফের কাজ করে

অনাকাঙ্ক্ষিত রক্ত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

মাসিকের সময় যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে দুইজনের সম্মতিতে

ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক

যৌন বাহিত রোগের সম্ভাবনা

মাসিকের সময় ব্যাথা এড়াতে সহবাস থেকে বিরত থাকা উত্তম

পিরিয়ডের সময় হ্রাস করে

 

গাঢ় রঙের তোয়ালে ব্যবহার করা

 

 

পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় নিকটে রাখা

 

 

কন্ডম ব্যাবহার করা

 

 

ভিন্ন আসনে সহবাস করা

মাসিক কি (Menstrual Cycle)?

আমি পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে মাসিক (Menstrual Cycle) বা ঋতুস্রাব একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া যেখানে মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ে নারীর যোনি পথ দিয়ে রক্ত প্রবাহিত হয়ে থাকে।

১০ থেকে ১৪ বছর হতে ৪০ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত এই ঋতুস্রাব চলমান থাকতে পারে। ৩-৭ দিন অবধি এই ঋতুকাল স্থায়ি হয়।

https://agamirsomoy.com/gree-gs24mu410-non-inverter-ac/234137

 

প্রাথমিক পর্যায়ে রক্ত প্রবাহ বেশি হতে দেখা যায় এবং শেষ দিনের সময় এই প্রবাহ ক্ষীণ হতে থাকে। এটি সম্পূর্ন হরমোন বিষয়ক একটি ঘটনা।

 

মাসিকের সময় সহবাস করা ঠিক হবে কি না

আপনি আপনার ভালোবাসার মানুষটিকে অনেক ভালোবাসেন। খুব ভালো কথা। ভালোবাসারই একটি দিক সহবাস বা যৌনতা। কিন্তু আমাদের মাঝে সহসাই একটি চিন্তা কাজ করে পিরিওডকালে সেক্স করার ব্যাপারে।

https://agamirsomoy.com/haier-inverter-ac-vs-gree-inverter-ac/234360

এ ক্ষেত্রে আমাদের অজ্ঞতা ও নানা রকম ট্যাবুর কারনে নানা নেতিবাচক প্রভাব তো আগে থেকেই কাজ করত নারীদের।

সে জন্য খুব স্বাভাবিক ভাবে এই পিরিয়ডকালীন সময় সেক্স করা যাবে না এমনটা ভাবাই স্বাভাবিক। কিন্তু বৈজ্ঞানিক ভাবে জানা গিয়েছে পিরিওডকালে সেক্স করায় কোন বাধা নেই। আপনি নির্ধিধায় তা করতে পারেন।

 

মাসিকের সময় মিলন করার ৩টি উপকারিতা

মাসিকের সময় সেক্সে করা- অনেক ক্ষেত্রে আপনার পার্টনারের জন্য উপকারীও বটে। কেননা ঋতুকালিন সময়টি একজন নারীর জন্য বেশ অস্বস্তিকর এবং কষ্টকর একটা মূহুর্ত হয়ে থাকে। কেন উপকারী হয়ে থাকে তা নিম্নে আলোচনা করছি।

১। পেইন রিলিফের কাজ করে

আমরা জানি কম বেশি সব নারীর এ সময় পেটে ও জরায়ুতে ব্যাথা অনুভূত হয়। মন মানসিকতা খারাপ হয়ে যায়। এই সময় সহবাস টনিকের মত কাজ করতে পারে। মনের স্ট্রেস ও রিল্যাক্স অনুভব হতে পারে।

২। ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক

ঋতুকালিন সময়ে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে নি এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। কিন্তু যৌনকার্যের দরুন শরীরের বিশেষ হরমন নিঃসরন হয়ে থাকে। এর ফলে আপনার ভালো ঘুম আশা করতে পারেন।

৩। পিরিয়ডের সময় হ্রাস করে

সেক্সের সময় যে রতিঃকালিন প্রক্রিয়া তাতে পেশির সঞ্চালন হয়। আর এই সঞ্চালনের কারনে রজঃস্রাবের গতি বেড়ে পিরিওডের সময় হ্রাস করতে সহায়তা করে।

https://agamirsomoy.com/haier-inverter-ac-vs-gree-inverter-ac/234360

মাসিকের সময় সেক্স করার ২টি অপকারিতা

এই গেল কিছু উপকারি দিক। এখন পিরিওডকালিন সেক্স এবং অন্যান্য সময়ের সেক্সের অবশ্যই কিছু পার্থক্য আছে, আছে কিছু ভাববার মত বিষয়। নৈমিত্তিক যৌন কর্ম থেকে কিছুটা আলাদা। চলুন সেসব বিষয় গুলো আমরা জেনে নেই।

১। অনাকাঙ্ক্ষিত রক্ত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা

সবচেয়ে লক্ষনীয় ও চিন্তার বিষয়ঃ ‘রক্ত’। এই পিরিওডকালিন নিঃসৃত তরলটি সর্বত্র বিরাজ করবে। আপনার উপর, আপনার পার্টনারের উপর, এবং যে স্থানে কার্য সমাধা হবে সেখানে।

এটি অবশ্য নির্ভর করে নারীর স্রাবের পরিমানের উপর। যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলে সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকে।

২। যৌন বাহিত রোগের সম্ভাবনা

কিছু যৌন রোগ ছড়ানোর খুব সহজ হয়ে থাকে এই পিরিওডকালিন সেক্সের সময়। যেমন STI, HIV সহ এই জাতীয় যৌন রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা অনেকগুন থাকে।

কেননা এগুলো রক্তজাতীয় তরলের মধ্যে সংক্রমন ঘটায়। এর মানে এর বহুল সম্ভাবনা কাজ করে। সেক্ষেত্রে কন্ডম ব্যাবহারে আপনি কিছুটা নির্ভার হতে পারেন সংক্রমনের বিষয়ে।

 

 

মাসিকের সময় সহবাস করার ৬টি টিপস

এবার আসব কিছু টিপসের দিকে। আপনার ভালোবাসার মানুষের সাথে মিলনকে কিভাবে উপভোগ্য করতে পারেন এবং ঝামেলাবিহীন সুষ্ঠুভাবে সেই জন্য কিছু পরামর্শ নিচে উল্লেখ করছি।

১। মাসিকের সময় যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে দুইজনের সম্মতিতে

অবশ্যই অবশ্যই দুই জনের মধ্যে আলোচনা করে নিতে হবে। পিরিওডকালে ভুক্তভোগী নারীর সেক্সের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে কি না, অথবা আপনার নিজে স্বাচ্ছন্দবোধ করবেন কি না, কিংবা কোনরুপ শারীরিক অসুবিধার কথা বিবেচনা করা প্রয়োজন।

২। মাসিকের সময় ব্যাথা এড়াতে সহবাস থেকে বিরত থাকা উত্তম

অনেক নারীর পিরিওডকালে অসম্ভব ব্যাথা অনুভূত হয়। বিশেষত জরায়ুর মত স্পর্শকাতর অংশটিতে। সেক্ষেত্রে যৌনকার্য করার ফলে ব্যাথা বেড়ে যেতে পারে। উপভোগের চেয়ে সেটি কষ্টে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সেক্ষেত্রে সহবাস না করাই ভালো।

৩। গাঢ় রঙের তোয়ালে ব্যবহার করা

সেক্স কালিন সময় বিছানায় গাড় রঙের তোয়ালে বিছিয়ে নিতে পারেন। কেননা তরল ও রক্তে যেন বিছানায় ছড়িয়ে যেতে না পারে। পরে পরিষ্কারের জনও উপকারি।

৪। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় নিকটে রাখা

সহবাসের পর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়ার জন্য পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় নিকটে রাখুন। এতে সেক্স করার পরে আপনার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে সুবিধা হবে।

৫। কন্ডম ব্যাবহার করা

মাসিক বা পিরিয়ডের সময় অবশ্যই কন্ডম ব্যবহার করুন। বিশেষ করে লেটেক্স জাতীয় হলে খুবই ভালো হয়।

৬। ভিন্ন আসনে সহবাস করা

মাসিকের সময় আপনি চাইলে ভিন্ন আসনে সেক্স করতে পারেন। এতে একদিকে যেমন আপনি সেক্স করার ক্ষেত্রে নতুনত্ব খুঁজে পাবেন; একই রকমভাবে আপনার সঙ্গীর জন্যেও সুবিধা হবে।

 

মাসিকের সময় সহবাস করলে কি বাচ্চা হয়!

মাসিকের সময় সহবাস করলে কি বাচ্চা হয়!

মাসিকের সময় সহবাস করলে কি গর্ভবতী হয়! –  এটি একটি এক লক্ষ টাকার প্রশ্ন। অনেকে আবার প্রশ্নটি এভাবেও করে থাকেন যে মাসিক কালের সহবাসে কি গর্ভধারনের সম্ভাবনা আছে কি না?

 

 

এক কথায় উত্তর হলো মাসিকের সময় গর্ভধারনের সম্ভাবনা কম। কেন?

 

 

কারন মাসিকের প্রক্রিয়াটিই এমন যে এখন গর্ভধারনের সম্ভবানা কম থাকে। তারপরও এখানে ‘কিন্তু’ থেকে যায়।

কারন গর্ভধারনের বিষয়টি শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং দম্পতি যদি কনসিভ করতে না চায় সেক্ষেত্রে নিরোধ ব্যবহার করা উত্তম।

কেননা পুরুষের স্পার্ম ৩-৪ দিন জীবিত থাকে, কোন কোন সময় তা ৭ দিনেও গড়াতে পারে। সুতরাং গর্ভধারনের একটি ঝুঁকি থেকেই যায় ঋতুস্রাব শেষ হবার পর।

 

পরিশেষে, একটি বিষয় পরিস্কার হওয়া গেল যেন মাসিক কালের সহবাস করা যাবে। এর সাথে কোন সমস্যাই নেই। যদিও আমাদের মাঝে প্রচলিত রয়েছে এ সময় সহবাস করা যাবে না। এটি অন্যান্য মাসিকজাতীয় ভ্রান্ত ও কুসংস্কার।

তবে হ্যা, যেহেতু এটি নারীর স্বাভাবিক শারীরিক ক্রিয়া। সেক্ষেত্রে অবশ্যই শারীরিক, মানসিক অবস্থা খেয়াল করে সহবাসের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আমি তা উপরেই আলোচনা করেছি। এছাড়া সহবাসের কোন ক্ষতি নেই।

বরং আপনার ভালোবাসার দরুন আপনার ভালোবাসার মানুষটির অস্বস্তিকর সময়ে মুক্ত করতে পারে শারীরিক ব্যাথা, স্ট্রেস সহ নানা জটিলতা।

আপনি আরও পড়তে পারেন