স্বামীর পরকীয়ার জেরে ছেলেকে নিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা

স্বামীর পরকীয়ার জেরে ছেলেকে নিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা

নওগাঁর মহাদেবপুরে স্বামীর পরকীয়ার জেরকে কেন্দ্র করে প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে স্ত্রী একসঙ্গে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটায় ছেলে সুজন কুমার মন্ডল (২৭) এবং বিকেল তিনটায় মা শেফালী রাণী মন্ডল (৪৮) নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। শেফালী রাণী মন্ডল ও তার ছেলে সুজন কুমার মন্ডল মহাদেবপুর উপজেলার হাসপাতাল মোড় এলাকার বীরেন কুমার মন্ডলের স্ত্রী ও ছেলে। বিকেলে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে। বীরেন মন্ডল জানান, দুপুর ১২টায় তার স্ত্রী তাকে ফোন করে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে বলেন। অন্যথায় তিনি বিষ পান করবেন বলে হুমকি দেন। বাসায় ফিরে তার…

বিস্তারিত

নওগাঁর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার নানা সমস্যায় জর্জড়িত

ফারমান আলী,নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর উপজেলার সান্তাহার-ঢাকা রোড নামক স্থানে অবস্থিত আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার। হ্যাচারীসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৯ সালে ৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এই খামার। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর থেকেই খামারে বাচ্চা পালনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হয়। এ খামার থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির হাঁসের বাচ্চার মাধ্যমে অনেকেরই বেকারত্ব দূর হয়েছে। কেউ কেউ আবার হাঁস পালন করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরীতে ভূমিকা রাখছেন। নওগাঁর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের মাধ্যমে দেশের প্রায় ১৮টি জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির হাঁসের চাহিদা পুরণ করা হলেও নানা সমস্যায় জর্জড়িত সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে এই খামারের কার্যক্রম। জানাগেছে, দেশের সকল আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের মধ্যে এটি সর্ববৃহৎ ও শ্রেষ্ট হাঁস প্রজনন খামার। বর্তমানে এ খামার থেকে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের নওগাঁ, কুষ্টিয়া, জয়পুরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, দিনাজপুর, নাটোর, রাজশাহী, সুনামগঞ্জ ও লালমনিরহাটসহ ১৮টি জেলায় এই খামারের উৎপাদিত হাঁসের বাচ্চা সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এ সমস্ত এলাকায় হাঁসের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক খাবার থাকায় হাঁস পালন অত্যন্ত লাভজনক। তাই এ খামার থেকে প্রতি বছর রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের প্রায় ১৫’শ জন হত দরিদ্র মানুষ হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করে তা পালন করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছেন। এ খামার থেকে ইন্ডিয়ার রানার, খাকি ক্যাম্পবেল, জেন্ডিং ও বেইজিং জাতের হাঁসের বাচ্চা ফুটানো ও সরবরাহ করা হয়। এ জাতের হাঁস বছরে প্রায় ২৮০ থেকে ৩’শ টি ডিম দিয়ে থাকে যা আমাদের দেশিও জাতের হাঁসের চেয়ে অনেক বেশি। স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে মাত্র ৬ মাসের মধ্যেই মুনাফা পাচ্ছেন হাঁস পালনকারিরা। ইতিমধ্যে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলার ১১’শ জন খামারী ৪দিন মেয়াদী হাঁস পালন ও তুষ পদ্ধতিতে বাচ্চা ফুটানোর উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁস পালন করে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। এছাড়া অনেক শিক্ষিত বেকাররা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁস পালন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এ ছাড়াও প্রতি বছর ২৫০জন খামারীকে স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় এই খামার থেকে। তবে সমাস্যাও রয়েছে অনেক। খামার সূত্রে জানাগেছে, বর্তমানে খামারের ৮টি ব্রিডার সেড ও ২টি ব্রডিং শেডের পানি নিষ্কাশনের জন্য কোন ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পাশের কৃষকের জমিতে শেডের বর্জ পানি যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষকরা। কৃষকদের সাথে প্রায় ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছেন খামারের কর্মচারীরা। খামারের ভিতর সকল রাস্তা অত্যন্ত নিচু ও পাকা না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে পানি জমে এবং প্রচুর আগাছা জন্মায় যা খামারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিন খামারের সকল শেডের রান ও দেওয়াল সংস্কার এবং নেটসমূহ রং না করায় তা নষ্টের পথে। খামারের সেডের নেট অনেক স্থানেই ছিড়ে গেছে। ছেড়া নেট দিয়ে বেঁজি অথবা শিয়াল ঢুকে প্রায় হাঁস ধরে নিয়ে যায়। খামারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বসবাসের জন্য দীর্ঘদিন পূর্বে তৈরি করা ভবনগুলো নতুন করে সংস্কার না করায় সেগুলো আজ প্রায় বসবাসের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। নাটোর থেকে আসা খামারি সিরাজুল ইসলাম এ খামার থেকে স্বল্প মূল্যে উন্নত জাতের হাঁসের বাচ্চা নিয়ে পালন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তিনি বলেন, আমি ১দিনের বাঁচ্চা কিনে নিয়ে বড় করে বিক্রি করি। খাঁকি ক্যাম্বেল হাঁসের চাহিদা সব সময় থাকে তাই হাঁস বিক্রি করতে কোন সমস্যা হয় না। মাস শেষে সব খরচ বাদ দিয়ে বর্তমানে ১৪-১৫ হাজার টাকা লাভ হয়। রানীনগরের খামারি ইয়াদুল ইসলাম জানান, তিনি ১৬বছর ধরে হাঁসের খামার করে আসছেন। আগে তিনি হাড়ি-পাতিলের ব্যবসা করতেন এতে ঠিকমত তার সংসার চলতনা। হাঁসের খামার করার পর তার পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তবে সময় মত চাহিদা অনুযায়ী হাঁসের বাচ্চা পান না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, যেখানে আমার পাঁচ’শ বাচ্চা প্রয়োজন সেখানে ৪-৫দিন ঘুরানোর পর ২’শ বা ৩’শ বাচ্চা দেয়া হয়। যেখানে সরকারী রেট অনুযায়ী প্রতিপিচ বাচ্চা ২০টাকা নেওয়ার কথা সেখানে আমাদের কাছ থেকে ২৫টাকা করে ধরা হয়। অফিস সহকারী কামাল হোসেন জানান, বর্তমানে খামারের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও রাস্তার কারনে খুব অসুবিধা হচ্ছে। বর্ষাকালে রাস্তায় পানি জমে থাকে হাটা চলা মুস্কিল হয়ে যায়। ড্রেন না থাকার কারনে বাচ্চা ফুটানোর সময় ময়লা পানি কৃষকের জমিতে গিয়ে পড়ে কৃষকরা এসে ঝামেলা সৃষ্টি করে। খামারের ব্যবস্থাপক আব্দুল হামিদ বলেন, খামারটি বর্তমানে নানা সমস্যায় জর্জড়িত। খামারে নিয়মিত কর্মকর্তা ও কর্মচারি মিলিয়ে ১৬জন থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ১৪ জন রয়েছে। খামারের সব কিছু নতুন ভাবে সংস্কার করা প্রয়োজন। সেডের নেট ও রাস্তা সংস্কার করা অতি জরুরী। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি খামারীদের চাহিদা মেটানোর জন্য। বর্তমানে ৪০০০ হাঁস নিয়মিত পালন করা হচ্ছে। বছরে ১লক্ষ ৩০হাজার বাচ্চা ফুটানো হয়। গত অর্থ বছরে এই খামার থেকে ১৯ লক্ষ টাকার হাঁসের বাচ্চা ও ডিম বিক্রি করতে পেরেছি। চলতি অর্থ বছরে ৪০ লাখ টাকার হাঁসের বাচ্চা ও ডিম বিক্রি করতে পারব বলে আশা করছি। তবে বর্তমান সমস্যাগুলো সমাধান করে আরো উন্নয়ন করা হলে জাতীয় অর্থনীতিতে এই খামার বড় ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ উত্তম কুমার দাস বলেন, নওগাঁ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারটি ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্টিত হলেও পরবর্তীতে এই খামারের তেমন উন্নয়ন হয়নি। আমি নওগাঁয় যোগদান করার পর থেকে চেষ্টা করছি খামারের জনবল সংকট সহ অন্যান্য সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য। ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের বাসস্থানের কিছু মেরামতের কাজ হয়েছে। মন্ত্রাণালয়ে খামারটির উন্নয়নের জন্য প্রকল্প জমা দেওয়া আছে। প্রকল্পটি পাশ হলে অন্যান্য সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি জানান।

ফারমান আলী,নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর উপজেলার সান্তাহার-ঢাকা রোড নামক স্থানে অবস্থিত আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার। হ্যাচারীসহ আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামার স্থাপন শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৯ সালে ৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয় এই খামার। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বর থেকেই খামারে বাচ্চা পালনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শুরু হয়। এ খামার থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রজাতির হাঁসের বাচ্চার মাধ্যমে অনেকেরই বেকারত্ব দূর হয়েছে। কেউ কেউ আবার হাঁস পালন করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থান তৈরীতে ভূমিকা রাখছেন।  নওগাঁর আঞ্চলিক হাঁস প্রজনন খামারের মাধ্যমে দেশের প্রায় ১৮টি জেলায় বিভিন্ন প্রজাতির হাঁসের চাহিদা পুরণ করা হলেও…

বিস্তারিত