কোরবানির ঈদের আগে মসলার বাজারে স্বস্তি

কোরবানির ঈদের আগে মসলার বাজারে স্বস্তি

প্রতি বছর কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে অস্থির হয় মসলার বাজার। তবে এবার অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে। আগামী ২১ জুলাই দেশব্যাপী ঈদ উল আজহা উদযাপন করা হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, এ বছর ১ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৭৬৫টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে ৪৫ লাখ ৪৭ হাজার গরু-মহিষ, ৭৩ লাখ ৬৫ হাজার ছাগল-ভেড়া এবং অন্য ৪ হাজার ৭৬৫টি পশু রয়েছে।

ভোজন রসিক বাঙালিদের ঈদ এলেই খাবারের সঙ্গে নানান রকমের পদ যুক্ত হয়। যা তৈরি করতে হরেক রকমের মসলার ব্যবহার হয় থাকে। বিশেষ করে, কোরবানির ঈদে প্রত্যেক বাসার গৃহিণীদের কাছে বিভিন্ন ধরনের মসলার চাহিদাটাই থাকে সবচেয়ে বেশি। ক্রেতাদের চাহিদাকে পুঁজি করে ধর্মীয় এই উৎসবকে কেন্দ্র করে নানা পদের মসলার দাম বাড়িয়ে দেন পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবারের কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ইতোমধ্যেই মসলার চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। তবে অন্যান্যবারের মতো এবার স্বস্তি থাকবে মসলার বাজারে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেও কোনো সমস্যা নেই। কারণ চাহিদার তুলনায় মসলার পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। হিসাব করলে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বাজারের মসলার দাম কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। সোমাবার (১২ জুলাই) রাজধানীর মিরপুর-১ নম্বরের মসলার বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা এসব তথ্য জানা যায়।

dhakapost

সরেজমিনে দেখা গেছে, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে দোকানে দোকানে শোভা পাচ্ছে রকমারি আইটেমের মসলা। আইটেমভেদে অনেক মসলা বস্তায় করে, আবার ভিন্ন ভিন্ন পাত্রে রেখে প্রদর্শন করা হচ্ছে। মূলত ক্রেতাদের দৃষ্টি কাড়তে এতসব আয়োজন করেছেন ব্যবসায়ীরা।

মিরপুর-১ নম্বর পাইকারি মসলার বাজারে আসা জাফর হোসেন নামে এক ক্রেতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবারের কোরবানির ঈদ তো চলেই এলো। এজন্য করোনা পরিস্থিতি মাথায় রেখে আগেভাগেই মসলা জাতীয় যা যা প্রয়োজন সেগুলো নিতে বাজারে এসেছি। গত কোরবানির ঈদের আগে যেমন মসলার দাম বেড়েছিল, এবার কিন্তু তা হয়নি। মানে এখন পর্যন্ত কোনো মসলার দাম বাড়েনি। আমার কাছে সবকিছুর দাম স্বাভাবিকই মনে হয়েছে। শুধু লবঙ্গের দাম একটু বেড়েছে। এছাড়া অন্যান্য মসলাগুলোর দাম বাড়েনি।

মিরপুর-১ নম্বর বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী রায়হান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অন্যান্যবারের চেয়ে বাজারে মসলার দাম অবশ্যই কম। বাজারে মসলা পর্যাপ্ত মজুদ আছে। আপাতত কোনো মসলার দামই বাড়েনি। তবে দুটি আইটেমের দাম কিছুটা বেড়েছে। এটাকেও সেভাবে দাম বৃদ্ধি বলা যায় না। কারণ অন্যান্যবার সব মসলার দামই কমবেশি বাড়ে, সে তুলনায় এবার সেটি হয়নি।

ব্যবসায়ী রায়হান বলেন, বর্তমান বাজারে দারুচিনির কেজি ৩৮০ টাকা, এটার দাম বাড়েনি। এলাচের কেজি ২ হাজার ৪০০ টাকা। আগে এই এলাচের দাম ছিল ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা কেজি। সেই হিসেবে গতবারের তুলনায় এবার এলাচের দাম অনেক কমেছে। জিরার কেজি বর্তমানে ৩২০ টাকা, গতবার ছিল ৩৬০। দাম কমেছে গোলমরিচের। বাজারে গোলমরিচ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজিতে। কিচমিচ বিক্রি হচ্ছে ২৮০ টাকা কেজিতে। জয়ফলের দামও বাড়েনি।

বাজারে ১০ থেকে ১৫ টাকা প্রতিপিস জয়ফল বিক্রি করা হচ্ছে। তবে লবঙ্গের দাম হালকা বেড়েছে। কয়েকদিন আগে লবঙ্গ ছিল ৯০০ টাকা কেজি। বর্তমানে এ মসলাটি প্রতি কেজি হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আলু বোখারার দাম বেড়ে হয়েছে ৪৮০ টাকা কেজি। যা আগে বিক্রি করা হতো ৩০০ টাকা কেজিতে।

তিনি বলেন, অন্যদিকে সব ধরনের বাদামের দাম কমেছে। কাট বাদাম বর্তমান বাজারে ৫৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে। আগে ছিল ৬০০ টাকা কেজি। কাজুবাদামেও কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬৪০ টাকায়। পেস্তা বাদাম আগে বিক্রি করা হয়েছে এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা। বর্তমান বাজারে পেস্তা বাদাম এক হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন