চিলমারীতে পানির অভাবে আমন চাষে বিপাকে কৃষক তবুও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশাবাদি

মমিনুল ইসলাম বাবু (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: ২৯.০৮.১৮

কুড়িগ্রামের চিলমারীতে বৃষ্টি না থাকায় চরম পানি সঙ্কটে রোপা আমন চাষিরা। ফলে রোপা আমন চাষে বিপাকে পড়েছেন তারা। ‘আষাঢ়ে বাদল নামে পানি থৈ থৈ’ কবির এই কবিতার চরণ এখন যেন মিথ্যে হয়ে যাচ্ছে। আষাঢ়-শ্রাবণ চলে গেছে। চলছে তাল পাকা ভাদ্র মাস। দেখা নেই বৃষ্টির। কোনো খাল-বিল কিংবা নদী-নালা এখন পানিতে থৈ থৈ করে না। ভরা বর্ষায়ও প্রবল খরায় চাষাবাদ ব্যাহত হয়েছে। এ যেনো চৈত্রের তাপদাহে ইরি-বোরোর খরা মৌসুম। নিরূপায় হয়ে শ্যালো মেশিন কিংবা গভীর ও অগভীর নলকুপের মাধ্যমেই জমিতে পানি ভরে চাষাবাদ করছে কৃষক। এমনকি যেসব জমিতে সেচের মাধ্যমে পানি ভরানোর ব্যবস্থা নেই সেসব জমিতে ডোবা, খাল, পুকুর কিংবা নদী থেকে পানি ছেকে পানি ভরছে কৃষকরা। এতে যেমন কৃষকদের দ্বিগুণ কষ্ট হচ্ছে তেমনই খরচও পড়ছে দ্বিগুণ। অধিকাংশ কৃষকই এভাবে জমি চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। এমনকি অনেকেই জমি খালিও রেখেছেন। এমন দৃশ্যও চোখে পড়েছে অনেক এলাকায়। তবুও হতাশ নন স্থানীয় কৃষি বিভাগ। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ খালেদুর রহমান বলেন, বন্যার আশঙ্কা থাকায় এবার চিলমারীর কৃষক আমন চারা রোপন করা থেকে বিরত ছিলেন। পাশাপাশি কাঙ্খিত বৃষ্টিপাত না থাকায় আমন চারা রোপনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। অনাবৃষ্টির কারণে আমরা কৃষকদেরকে সেচ দিয়ে আমনের চারা রোপনের পরামর্শ দিচ্ছি। এখন বন্যার আশঙ্কা কমে যাওয়ায় কৃষকরা মাঠে নেমে পড়েন। তিনি আরো জানান, এবছর উপজেলায় আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৯‘শ ৮৫ হেক্টর। ইতোমধ্যে ৫হাজার ৬‘শ ৩০ হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপন করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে চিলমারী উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। রমনা ইউনিয়নের পাত্রখাতা গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক (৪২), কাজিমুদ্দিন (৪৮), খরখরিয়ার আবুহার আলী (৪৬), থানাহাট ইউনিয়নের মাচাবান্দা গ্রামের ইউনুছ আলী (৪৮) জানান, তারা খাল থেকে পানি ছেকে হালচাষ করেছেন। সেচের ব্যবস্থা না থাকায় কেউ কেউ বিকল্প হিসেবে বাধ্য হয়ে নিজেই বালতি দিয়ে পানি ছেকে জমিতে দিচ্ছেন। ভরা আষাঢ়-শ্রাবণ বর্ষাকাল হলেও কোনো বৃষ্টি নেই। এখন ভাদ্র মাসে মাঝে মাঝে ছিপছাপ বৃষ্টি হলেও এসব বৃষ্টিতে কোনো কাজ হচ্ছে না। অনেকে এলাকায় সেচ পাম্প ও শ্যালো মেশিনে পানি দিয়ে আমনের চারা রোপন করছেন কৃষকরা। 

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment