তীব্র শীতকেও হার মানিয়েছেন, বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

তীব্র শীতকেও হার মানিয়েছেন, বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা

রিপন কান্তি গুণ, নেত্রকোনা প্রতিনিধি ;

হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করেই ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন নেত্রকোনা অঞ্চলের কৃষকরা। আমন ফসল ঘরে তোলার পর প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করেই ইরি-বোরো চাষের নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন তারা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, ইরি-বোরো চাষের গুরুত্বপূর্ণ সময় পৌষ-মাঘ। এ দুই মাস বোরো জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে হয়। চারা রোপণে এসময়ের শৈত্য প্রবাহ ও কুয়াশা চাষীদের দমাতে পারে নাই। তাই সারাদেশের মত নেত্রকোনার কৃষকরাও ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবিরাম কাজকরে চলেছেন। তবে ডিজেল, সারসহ সবকিছুর দাম বাড়তি হওয়ায় খরচ জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।

তারা আরও জানান, ধান কাটার আগে প্রতিবছরই হুমকির মুখে পড়তে হয়। গত বছর আগাম পাহাড়ি ঢলে আধাপাকা ধান কাটায় ক্ষতিগ্রস্ত হন এসব এলাকার কৃষকরা। এ বছর আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার আশা করছেন কৃষকরা। তাই তীব্র শীত উপেক্ষা করেই মাঠে কাজ করছেন তারা।

বারহাট্টার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক লিটন সরকার বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আমাদের বীজতলার কোনো ক্ষতি হয়নি। কালবৈশাখীর কবল থেকে নিরাপদে ধান ঘরে তোলার জন্য আমি এবার আগাম বীজতলা তৈরি করেছিলাম। তাই রোপণও শুরু করেছি অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটা আগে।

মোহনগঞ্জ উপজেলার গাগলাজুর, লেপসিয়া ও শ্যামপুরের কৃষক হুমায়ুন মিয়া, ইদ্রিস আলীসহ অনেকেই জানান, কৃষি উপকরণসহ সবকিছুর দাম বাড়তি থাকায় হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। তাদের এলাকার পানি দ্রুত নেমে যাওয়ায় জমিগুলোতে সেচ দিতে হচ্ছে মেশিনে। ফলে খরচের খাতা বেশ বড় হচ্ছে। এগুলো কৃষকের ক্রয়ক্ষমতায় রাখতে তারা সরকারের প্রতি দাবি জানান।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেলা জুড়ে চলছে ধানের চারা রোপণের মহোৎসব। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরামর্শে আগাম বন্যার হাত থেকে বাঁচতে স্বল্প জীবৎকালের জাত রোপণ করছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়,  এ বছর নেত্রকোনা জেলায় ১ লাখ ৮৪ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। যার মধ্যে হাওড়াঞ্চলেই রয়েছে ৪০ হাজার ৯৮০ হেক্টর। আর হাওড়ের খালিয়াজুরীতে আছে ২০ হাজার হেক্টর। যা গত বছরের তুলনায় বেশি।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. নুরুজ্জামান বলেন, এ পর্যন্ত জেলার ৬০ ভাগ জমি আবাদ হয়ে গেছে। এবার বীজতলা সময়মতো সম্পন্ন হয়েছে। চলছে রোপণের কাজ। কৃষকদের স্বল্প জীবৎকালীন জাত রোপণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন