দুই বছরেই ড্রাগন-মাল্টায় লাভ দেখছেন শিক্ষক সাদেকুল

দুই বছরেই ড্রাগন-মাল্টায় লাভ দেখছেন শিক্ষক সাদেকুল

জসীম উদ্দীন ইতি  ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ

স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পরিত্যক্ত জমিতে করেছেন ফলের বাগান। বাগানে শোভা পাচ্ছে ড্রাগন ও মাল্টা। পাশাপাশি ৬০
শতক জমিতে চাষ করেছেন পেঁপে ও দেশি আদা। তিনি হলেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের গড়েয়া বাজারের
পাশে স্থানীয় গড়েয়া ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক আবু জাফর সাদেকুল ইসলাম। বাগান করে তিনি যেমন সফল, তেমনি তাকে
দেখে এলাকার মানুষদের মধ্যে বাগান করার আগ্রহ বেড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, নিজের জমিতে লাগানো ফলের পরিচর্যায় ব্যস্ত এই শিক্ষক। যদিও বাগানটি দেখাশোনার জন্য
একজনকে রাখা হয়েছে। তারপর তিনি নিজেও বাগানের পরিচর্যা করেন। এলাকাবাসীসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেকইে তার
বাগান দেখতে আসছেন।

জানা গেছে, তিন বছর আগে অনলাইন থেকে ড্রাগন চাষের বিষয়টি জানতে পারেন শিক্ষক আবু জাফর সাদেকুল। পরবর্তীতে তিনি তার
পরিত্যক্ত জমিটি ব্যবহার করার চিন্তা করেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে শুরু করেন ফলের বাগান। যদিও ড্রাগন চাষ তার কাছে
একেবারেই নতুন ছিল। পাশাপাশি একই জমিতে মাল্টার চাষও করেন। অল্প দিনেই বেড়ে উঠে তার বাগানটি।

শুরুর দিকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো খরচ হয়। যদিও সেই সময় নিজের প্রতি তেমন ভরসা ছিল না। তবে মনে ছিল সফলতার স্বপ্ন।
আজ যেন তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। বাগান করার দুই বছরের মধ্যেই খরচের টাকা উঠে লাভ আসতে শুরু করেছে।  স্থানীয়
বাসিন্দা জুয়েল ইসলাম বলেন, শিক্ষক সাদেকুল ফলের বাগান করে আমাদের তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। শুনেছি তিনি অনলাইনে দেখে ড্রাগন
ফলের চাষ শুরু করে। এরপর তিনি একই জমিতে মাল্টাসহ বেশ কিছু ফলের চাষ করেছেন।

আজ তার এই সফলতা দেখে আমি আনন্দিত। তিনি
তার বাগানের ফলমূল এলাকাবাসীকে খেতে দেন। তার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়েছি। কিভাবে আমার বাসায় একটি বাগান করলে আমিও একজন
সফল চাষি হতে পারব। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম আমাদের এলাকায় ফলের বাগান
করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।

তার কাছ থেকে আমরাও অনেক কিছু শিখছি। ড্রাগন ফল চাষ করে এতটা লাভবান হওয়া যায় তা
জানা ছিল না। শিক্ষক আবু জাফর সাদেকুল ইসলাম বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে ড্রাগন ফল চাষের বিষয়টি আমি জানতে
পারি। এরপর এটা নিয়ে স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করি।

তাদের সহযোগিতায় নিজের পরিত্যক্ত জমিটি
পরিষ্কার করে সেখানে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করি। পাশাপাশি একই জমিতে মাল্টাও করি। দুই বছরের মাথায় ফল বিক্রি
করে খরচের টাকা উঠে লাভ করতে শুরু করি। এরপর একই বাগানে পেঁপে ও দেশি আদাসহ বিভিন্ন ফল চাষ করি। গত বছর
এক লাখের বেশি টাকার ফল বিক্রি করেছি। তিনি আরও বলেন, বাগানের মাধ্যমে সমাজের বেকারত্ব অনেকটাই কমে আসবে।
সেইসঙ্গে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেন যে কেউ। যদি কেউ তার বাসার ছাদে কিংবা বাসার পাশে এমন বাগান করে
তাহলে পুষ্টি চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও সফল হবেন।

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, আমরা প্রকল্পের আওতায় আগ্রহীদের
প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। মাল্টা বা লেবু জাতীয় ফলে যেহেতু অল্প খরচে চাষিরা বেশি লাভবান হয়, তাই এ ফল সম্প্রসারণের
মাধ্যমে আমাদের কৃষির উন্নয়ন হবে বলে আমি মনে করি।

আপনি আরও পড়তে পারেন