রাণীনগরে ২বছরেও আটক হয়নি যৌতুক মামলার প্রধান আসামী; হতাশ বাদীনির পরিবার

রাণীনগরে ২বছরেও আটক হয়নি যৌতুক মামলার প্রধান আসামী; হতাশ বাদীনির পরিবার

বিকাশ চন্দ্র প্রাং, নিজস্ব প্রতিনিধি:

 

নওগাঁর রাণীনগরে দীর্ঘ ২বছর যাবত যৌতুক মামলার প্রধান আসামী আটক না হওয়ায় চরম হতাশার মধ্যে দিনানিপাত করতে হচ্ছে বাদীনির পরিবারকে। আসামী দূরে থেকে মামলা তুলে নিতে নানা ধরনের হুমকি-ধামকী প্রদান অব্যাহত রাখছে বলে ভুক্তভোগীর অভিযোগ। এতে করে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বাদিনীর পুরো পরিবার। অপরদিকে পুলিশ বলছে আসামী ঢাকায় থাকে বলে তাকে আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।

আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী উপজেলার মালশন গ্রামের দিনমজুর খোরশেদ আলমের মেয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ শুখি আক্তার খুশি জানান, ২০১৪সালে এক লক্ষ আশি হাজার টাকা দেনমোহর ধার্য্য করে উপজেলার কাটরাশইন গ্রামের আব্দুর করিমের ছেলে শরিফ হোসেনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় মেয়ের সুখের জন্য দিনমজুর বাবা জামাইকে এক ভরি স্বর্ণালংকার, বিশ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও নগদ পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করে। পরবর্তি সময়ে খুশি জানতে পারেন যে শরিফ আরেকটি বিয়ে করেছিলো কিন্তু যৌতুকের পুরো টাকা না পাওয়ায় তাকে তালাক দিয়ে খুশিকে বিয়ে করে। সংসারের সুখের কথা ভেবে তিনি কোন প্রতিবাদ না করে সংসার চলমান রাখার পর তাদের ঘরে এক সন্তান আসে। পরবর্তি সময়ে শরিফ খুশিকে বাবার বাড়ি থেকে যৌতুক হিসেবে এক লক্ষ টাকা আনতে বলে। তার দিনমজুর পিতার পক্ষে সেই টাকা দিতে অক্ষম হলে শরিফ তার উপর শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। পরবর্তিতে বিষয়টি পরিবারকে জানালে উভয় পরিবারের সদস্যরা বসে কোন প্রকারের যৌতুক দিতে হবে না মর্মে পুনরায় সংসার শুরু হলে তার কিছু দিন পরেই পুনরায় শরিফ এক লক্ষ টাকা না দিলে সংসার করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয়। এরপর শরিফ অন্যায় ভাবে তাকে তালাক নামা পাঠিয়ে দেয়। পরবির্ততে এই অন্যায়ের সুষ্ঠ বিচারের আশায় থানায় গেলে পুলিশ মামলা নিতে অস্বীকার করলে ২০২০সালে আদালতে মামলা দায়ের করে খুশি। পরবির্ততে আদালত থানা পুলিশকে তদন্ত সাপেক্ষে আসামী শরিফকে আটক করার আদেশ দেওয়ার দীর্ঘদিন পার হলেও এখন পর্যন্ত শরিফকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। অথচ শরিফ প্রতিনিয়তই মামলা তুলে নিতে বাদিনীকে ফোনে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকী প্রদান করে আসছে। বর্তমানে এক সন্তান নিয়ে দিনমজুর বাবার বাড়িতে অনেক কষ্টে দিনানিপাত করতে হচ্ছে খুশিকে।

খুশির বাবা দিনমজুর খোরশেদ আলম বলেন, যৌতুক দিতে পারিনি বলে শরিফ আমার মেয়ে ও এক বছরের নাতিকে কষ্ট দিচ্ছে। এই বিষয়গুলো শরিফের পরিবারের লোকজনকে জানালেও কোন প্রতিকার করেনি। বর্তমানে মেয়েকে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। আমি দ্রæত শরিফকে আটক করার মাধ্যমে তার অন্যায় কাজের উপযুক্ত শাস্তি চাই।

আসামী শরিফ মুঠোফোনে জানান, দেনমোহর পরিশোধ না করেই খুশিকে তালাক দেওয়ার পর আরেকটি বিয়ে করেছি। সে এখন আর আমার স্ত্রী নয়। তাই তার সন্তানসহ তাকে খোরপোষ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। সে যেভাবে পারে আমার কাছ থেকে তার যা দরকার আদায় করে নিক।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, আসামী ঢাকায় থাকার কারণে এখন পর্যন্ত তাকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাকে আটক করার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

 

আপনি আরও পড়তে পারেন