অনেক জল্পনা-কল্পনা শেষে গত ৬ আগাস্ট ঘোষণা করা হয় বিএনপির পুর্নাঙ্গ কমিটি। এতে দল চাঙ্গা হবে, এমনটাই মনে করেছিলেন দলের ভেতরে এবং বাইরের অনেকে। এখন দেখা যাচ্ছে, পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে দল চাঙ্গা না হয়নি, উল্টো অনেকটাই বেকায়দায় পড়েছে দলটি।
পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর অনেক নেতাই ব্যক্তিগত কারণ বা অভিমানে পদত্যাগ করেছেন। আবার অনেক নেতা পদত্যাগ বা দল থেকে আস্তে আস্তে সরে যাবেন বলেও গুঞ্জন চলছে। এ অবস্থায় দলে নতুন কমিটির ব্যাপারে উচ্ছ্বাসও নেই।
গত ৬ আগস্ট পুর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন নতুন কমিটিতে ভাইস-চেয়ারম্যান পদ পাওয়া মোসাদ্দেক আলী ফালু। একই দিন পদত্যাগ করেন দলের সহ-প্রচার সম্পাদক পদ পাওয়া কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম।
পদত্যাগ করার বিষয়ে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম জানান, তিনি সহ-দফতর সম্পাদক থাকলেও তাকে ওই পদের চেয়ে নিচের পদ সহ-প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে। তাও আবার তিন নম্বর সহ-প্রচার সম্পাদক। আর এক নম্বর সহ-প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে তার কনিষ্ঠ, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীমকে।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পর ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জিয়া পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছেন সংগঠনটির সহকারী মহাসচিব অধ্যক্ষ বাহারউদ্দিন বাহার। অন্যদিকে পদত্যাগ করেছেন নরসিংদী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক দ্বীন মোহাম্মদ দীপু। কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ না পাওয়ার ক্ষোভে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কাঙ্ক্ষিত পদ না পাওয়ায় দলের ভাইস-চেয়াম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানও দল থেকে পদত্যাগ করবেন বলে গুঞ্জন রটেছে। দলের সিনিয়র নেতা শাহ মোয়াজ্জেম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদসহ দলের বেশ কয়েকজন নেতা কাঙ্গিত পদ না পাওয়ায় হতাশ। তবে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এসব বিষয়কে মাথায় রেখে গত বৃহস্পতিবার দলের স্থায়ী কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বৈঠকে পদ নিয়ে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে তা কতটুকু কার্যকর হয় সেটাই দেখার বিষয়।
এদিকে এ অবস্থায় বেগম খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের যে আহবান জানিয়েছিলেন তাও অনেকটা থমকে আছে। সরকারি দল আওয়ামী লীগ আগেই জানিয়ে দিয়েছে, ঐক্য হয়ে গেছে, এ ঐক্যে তারা নেই। এরপর সরকারি দল ছাড়া অনান্য দল নিয়ে ঐক্য হবে বলে গনমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সে লক্ষ্যে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সাথে চা চক্রে বৈঠক করেছেন বেগম খালেদা জিয়া। তবে বৈঠকে খালেদা জিয়াকে উল্টো শর্ত দিয়ে এসেছেন কাদের সিদ্দিকী। বিএনপির পক্ষ থেকে কাদের সিদ্দিকীকে কি বলা হয়েছিল তা জানা যায়নি।
এদিকে কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক শেষে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীসহ বেশ কয়েকটি দলের প্রধানদের সাথে বৈঠক করার কথা ছিল খালেদার। তবে এসব বৈঠক এখনও হয়ে উঠেনি। সবমিলিয়ে কঠিন অবস্থা পার করছে বিএনপি।