হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্যাটেলাইট ছবিগুলো প্রমাণ করছে যে, এই ধ্বংসযজ্ঞ এমন সময়েও চালানো হয়েছে, যখন রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার। ২৩ নভেম্বর ওই সমঝোতা হয়।
কিন্তু ২৫ নভেম্বর রাখাইনের মংডুর কাছে মিয়াও মি চ্যাঙ গ্রামে আগুন আর ঘরবাড়ি ধ্বংসের ছবি তুলেছে স্যাটেলাইট। পরের এক সপ্তাহের মধ্যে চারটি গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।
সংস্থাটির এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্রাড অ্যাডামস বলছেন, ‘সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরের সময়েও রাখাইন গ্রামে বার্মার সেনাবাহিনীর ধ্বংসযজ্ঞ চালানো থেকে এটাই প্রমাণ হয়, রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার এই প্রতিশ্রুতি স্রেফ একটি প্রচারণা। রোহিঙ্গা গ্রামগুলো ধ্বংসের যেসব অভিযোগ বার্মার সেনাবাহিনী অস্বীকার করে আসছে, সেটাই প্রমাণ করে দিচ্ছে এসব স্যাটেলাইট ছবি।’
মিয়ানমারের মংডু, বুথিডাং আর রাথিডাং শহরে আশেপাশের ১০০০ গ্রামের ওপর স্যাটেলাইটের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পেয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। এ বছর আগস্ট মাসের শেষের দিকে রাখাইনে সামরিক অভিযান শুরুর পর এসব গ্রামে ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়।
সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ৩৫৪টি গ্রামের মধ্যে অন্তত ১১৮টি গ্রামে হামলা হয়েছে ৫ সেপ্টেম্বরের পর, যখন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের অফিস থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, রাখাইনে অভিযানের সমাপ্তি হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, আগস্ট থেকে রাখাইনে শুরু করা এই অভিযানের সময় বার্মার সেনাবাহিনী হত্যা, ধর্ষণ, গ্রেপ্তার আর ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড চালিয়েছে। জাতিগত নির্মূলের এই অভিযান মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গেই সমতুল্য বলে সংস্থাটি দেখতে পেয়েছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে বেসরকারি দাতব্য প্রতিষ্ঠান মেডিসিন্স স্যান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) বলেছে, মিয়ানমারে আগস্টে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর এক মাসে অন্তত ৯ হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্তত ৬ হাজার ৭’শ মৃত্যুর কারণ সহিংসতা, যার মধ্যে পাঁচ অথবা তার চেয়ে কম বয়সের শিশু ছিল ৭৩০ জন।