কেমন আছে পদ্মা সেতুর পুনর্বাসনের বাসিন্দারা। (পর্ব-২)

কেমন আছে পদ্মা সেতুর পুনর্বাসনের বাসিন্দারা। (পর্ব-২)

 

মোঃ মানিক মিয়া, স্টাফ রিপোর্টার (মুন্সীগঞ্জ)||

কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রে স্কুল, বাজার, মসজিদ, হাসপাতাল একটি অন্যটি থেকে দূরে অবস্থান করলেও যশলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে এগুলো একসাথেই রয়েছে। তবে এই কেন্দ্রে কুমারভোগ পুনর্বাসন কেন্দ্রের তুলনায় গরিব ও অভাবী মানুষের সংখ্যা বেশি। নাইট গার্ড নেই, নেই রাস্তায় কোনো আলোর ব্যবস্থা। তবুও পরিপাটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাজার থাকায় এখানকার বাসিন্দারা অনেকটা খুশি।

কেমন আছে পদ্মা সেতুর পুনর্বাসনের বাসিন্দারা। (পর্ব-২)

এ বছর এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্যকেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পর থেকে প্রায় ৫ হাজার মানুষ এই কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন – এমনটাই জানিয়েছেন উক্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. নাজিবুল হক। এই কেন্দ্রে লোকবল রয়েছে ৭ জন। পদগুলো হচ্ছে ১ জন করে মেডিকেল অফিসার, উপসহকারী মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র স্টাফ নার্স, ফার্মাসিস্ট, কম্পিউটার অপারেটর, ওয়ার্ড বয়, আয়া, মালি ও নাইট গার্ড। তিনি আরও জানান, এখানে প্রতিদিন কেন্দ্রের ভেতরের ও বাইরের ৪০/৫০ জন রোগী চিকিৎসা নিতে আসেন। কান্দিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আবুল হোসেন এখানকার পরিবেশ ও চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই কেন্দ্রের প্রাথমিক বিদ্যালয়টিতে প্রবেশ করলেই মনটা ভালো হয়ে যায় এর নান্দনিক নির্মাণশৈলী দেখে। চারদিক খোলামেলা ও মুক্ত বাতাসের ছড়াছড়ি। এত ভালো ভালো কিছু থাকা সত্ত্বেও মন খারাপ করা কিছু বিষয় রয়েছে এই যশলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে। এখানে গরিব ও অভাবী মানুষের আধিক্য বেশি। পুরনো বসতবাড়ি সংলগ্ন মাওয়ায় কর্মসংস্থান বেশি ছিল। আর এখানে কাজ নেই বললেই চলে। ফলে পুরুষদের এখান থেকে ৬/৭ কিলোমিটার দূরত্বে শিমুলিয়া ঘাটে কাজের সন্ধানে যেতে হয়। যেসব নারী বিভিন্ন বাসাবাড়িতে কাজ করে আয়রোজগার করতেন, তারা পড়েছেন মহা বিপাকে। রিকশা কিংবা অটোরিকশায় ভাড়া গুনে ৩/৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে কাজে যাতায়াত করা তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। ঢাকা অথবা অন্য কোথাও যেতে একমাত্র যশলদিয়া-কান্দিপাড়া-মাওয়া রাস্তা ছাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের বাসিন্দাদের আর কোনো উপায় নেই। কিন্ত এই রাস্তাটির অবস্থা খুবই করূণ।

Brand Bazaar

রাস্তাটির কোথাও কাঁচা, কোথাও পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় পরিণত হয়েছে। এখন এই রাস্তাটির সংস্কার অত্যন্ত জরুরী এবং সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেন কেন্দ্রের তরুণ বাসিন্দা মো. জুনায়েদ। যশলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের ম্যানেজিং কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান জানান, এখানে ৩৭৫ টি পরিবার জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে, লোকসংখ্যা প্রায় ২ হাজার। তিনি বললেন, মাদক বিশেষ করে ইয়াবা এখানকার পরিবেশ নষ্ট করে ফেলছে। কোনো কিছুতেই ইয়াবা কেনাবেচা বন্ধ করা যাচ্ছে না। দিনকে দিন ইয়াবা বিক্রেতা ও সেবনকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এখনই এর প্রতিকার করা না গেলে ভবিষ্যতে এর ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে কেন্দ্রের বাসিন্দাদের।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment