মানিকগঞ্জে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

মানিকগঞ্জে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা,

২৩ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় উসামা এক নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার মধ্যরাতে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের বাবা আব্দুস সালাম জানান,গত বুধবার শহরের এ্যাপোলো ক্লিনিকে উসামা জন্ম গ্রহন করেন। এর পর থেকে প্রচন্ড কান্নাকাটি করে।

মানিকগঞ্জে ডাক্তার ও নার্সের অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যু

কান্না করতে করতে শ্বাসকষ্ঠের সমস্যা হয়। শীতের সময় হওয়ায় শ্বাসকষ্টের সাথে সাথে ঠান্ডার সমস্যাও দেখা দেয়। এসব কারনে শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টায় মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা.জুলহাস উদ্দিন নবজাতককে পরীক্ষা করার পর তাকে স্যালাইন ও অক্সিজেন দেওয়ার কথা বলেন। পরে হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ২৬ নম্বর বেডে ভর্তি করা হয়। দায়িত্বরত অজিফা আক্তার ও তাহমিনা ইয়াসমিন নামের দুই নার্স রাতে ওই নবজাতকের চিকিৎসা দিতে আসেন। স্যালাইন দেওয়ার সময় নার্স অজিফা ও তাহমিনা অক্সিজেন দেওয়ার জন্য তার কাছে টাকা চায়। দুই নার্সকে ১শত টাকা দেয় হয়। এসময় তারা আরো টাকা দাবি করেন। চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়াতে নার্সরা অক্সিজেন না দিয়ে শুধু স্যালাইন দিয়ে চলে যায়। রাতে শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় সাথে সাথে ১২টার দিকে নবজাতকের শরীর ঠান্ডা হয়ে যায়। ডাক্তার ও নার্সদের কাছে বার বার যাওয়ার পরও তারা আসেন না।

Brand Bazaar এসময় নার্সরা চা-চানাচুর খাওয়ার জন্য টাকা দাবি করেন। টাকা নাই বলার পর নার্সরা খারাপ ব্যবহার করেন। অক্সিজেন দেওয়া তো দুরের কথা শিশুটি আর দেখতে আসেন নাই ডাক্তার ও নার্সরা। রাত ১টার দিকে চিকিৎসার অবহেলা শিশুটি মারা যায়। নিহত নবজাতকের বড় খালা রতœা আক্তার বলেন, ভর্তির সময় ডাক্তার বলেছিলেন স্যালাইন ও অক্সিজেন দিতে হবে। কিন্তু টাকার জন্য আমার ভাগিনাকে (বোনের ছেলে) অক্সিজেন দিলো। অথচ ভাগ্নিনার পাশের বেডে থাকা শিশুকে অক্সিজেন দিলো। সামান্য টাকার জন্য ভাগিনাকে মেরে ফেললো নার্সরা। তিনি চিকিৎসা অবহেলায় শিশুটির মৃত্যুর জন্য দায়িদের বিচার দাবি করেন। নার্স তাহমিনা ইয়াসমিন বলেন, রোগীর স্বজনদের কাছে কোনো টাকা চাওয়া হয়নি। শিশু ওর্যাড়ে মোট ২৬ জন শিশু ভর্তি ছিল। এদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু শ্বাসকষ্টের জন্য অক্সিজেন প্রয়োজন। ওয়ার্ডে মোট ৫টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ছিলো। যে সব শিশু অক্সিজেন প্রয়োজন ছিল তাদের অক্সিজেন দেওয়া হয়েছে। ওই শিশুটির অবস্থা খারাপ ছিল না। এছাড়া তার অভিভাবকরা একবারও বলেনি শিশুটির অক্সিজেন প্রয়োজন। নার্সের অবহেলায় শিশুটির মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ সত্য নয় বলে তিনি দাবি করেন। মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) লুৎফর রহমান বলেন, ডাক্তারের অবহেলায় শিশুর মৃত্য হয় নি। নার্সদের অবহেলায় ওই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে বলে শিশুটির পরিবার অভিযোগ তুলেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment