আত্রাইয়ে একই স্থানে দুই বিদ্যালয় : বেকায়দায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

আত্রাইয়ে একই স্থানে দুই বিদ্যালয় : বেকায়দায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রাম দর্শনগ্রাম। যে গ্রামে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি বললেই চলে। বর্তমানে এই গ্রামে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকা সত্বেও ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থের জন্য এক শ্রেনীর লোক একই স্থানে আরেকটি বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই স্থানে দুটি বিদ্যালয় হওয়ার ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
আত্রাইয়ে একই স্থানে দুই বিদ্যালয় : বেকায়দায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাস্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই গ্রামের বাসিন্দারা তাদের সন্তানের শিক্ষা গ্রহণের কথা চিন্তা করে গ্রামের উত্তরদিকে (পাইকপাড়া) “দর্শনগ্রাম বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” নামের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৯৭২ সালে স্থাপন করে। শুরুতেই বিদ্যালয়টি ছিলো মাটির তৈরি আর উপরে ছিলো টাউলীর ছাউনির এল আকৃতির। প্রতিষ্ঠালগ্নে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষাদানের জন্য ৬জন শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করা হয়। এক সময় বিদ্যালয়টিতে ২০০-২৫০জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন পাঠ গ্রহণ করতো। ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম সক্রিয় থাকলেও ৮৭ সালের শেষের দিকে প্রচন্ড ঘূর্নিঝড়ে বিদ্যালয়টি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। পরে স্থানীয়ভাবে বিদ্যালয়টি মেরামত করে পুনরায় চালু করা হয়। দীর্ঘদিনের শিক্ষক সমস্যা ও কিছু অসাধু লোকের কারণে স্কুলটির রেজিষ্ট্রশন করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে সেই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সরকার হতে ইতিপূর্বে কিছু ঢেউটিন, ব্লাকবোর্ড এবং কিছু বই অনুদান হিসাবে পাওয়া গেছে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় বর্তমানে বিদ্যালয়টির অচল অবস্থায় পরিণত হয়েছে। এদিকে এই সুযোগে একই গ্রামের বাসিন্দা শেখ মো: সাইফুল ইসলাম সকল তথ্য গোপন করে পূর্বের বিদ্যালয়টির নাম ও স্থান পরিবর্তন করে তার পিতার নামে “দর্শনগ্রাম কুদ্দুস শেখ বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়” নামে আরেকটি বিদ্যালয় স্থাপন করেছেন। এতে গ্রামবাসীদের মাঝে ব্যাপক বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
দর্শনগ্রামের আব্দুল আলীম, ওমর ফারুক, কেএস রঞ্জ আহমেদসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, সাইফুলের বিদ্যালয়টির কোন কার্যক্রম নেই। তবুও সে মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে অবৈধভাবে শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করছেন। সাইফুল এই বিদ্যালয়টিকে অসৎ উপায়ে অর্থ আয়ের ব্যবস্যা হিসাবে ব্যবহার করছেন।
দর্শনগ্রাম বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুল আলিম জানান, আমি কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে এখনো পাঠদান কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আমি আমার বিদ্যালয়ের সার্বিক সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট একাধিক বার লিখিত আবেদন করেছি। আশা রাখি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ অতিদ্রুত আমার বিদ্যালয়ের দিকে সুদৃষ্টি প্রদান করবেন। কিন্তু রাতের-আঁধারে হঠাৎ করেই উদয় হওয়া আরেকটি বিদ্যালয় গ্রামবাসীর মাঝে চরম বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছে। কর্তৃপক্ষকে অচিরেই সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে নতুন বিদ্যালয়টির নিয়ম বর্হিভূত অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা খুবই জরুরী।
এ ব্যাপারে দর্শনগ্রাম কুদ্দুস শেখ বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা শেখ মো: সাইফুল ইসলাম জানান, আমি নিয়মতান্ত্রিকভাবেই বিদ্যালয় স্থাপন করেছি। তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রোখসানা আনিছা বলেন, সমাপনি পরীক্ষার ব্যস্ততায় ওইদিকে নজর দেয়া যায়নি। অল্প দিনের মধ্যেই তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment