‘মরব, তবুও রাজপথ ছাড়ব না’

‘মরব, তবুও রাজপথ ছাড়ব না’

‘আমাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন অনেক হয়েছে, অনেক আশ্বাস আমরা পেয়েছি। কিন্তু এবারের আন্দোলন হচ্ছে আমাদের চূড়ান্ত আন্দোলন। অধিকার আদায়ের জন্য আমরা মরতে প্রস্তুত আছি। এই শীত উপেক্ষা করে আমরা এই প্রেসক্লাবে অবস্থান করছি। প্রয়োজনে আমরা এখানেই আমরণ অনশনে থাকব।’ -এভাবেই কথাগুলো ঢাকাটাইমসকে বলছিলেন বগুড়া শিবগঞ্জ রায়নগর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুরুন্নাহার। তিনি নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন।
‘মরব, তবুও রাজপথ ছাড়ব না’শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চতুর্থ দিনের মতো নন এমপিও শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচি চলছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

আন্দোলনরত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহামুদুন্নবী ডলার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দাবি আদায়ে আমরা অনড়। চার দিন ধরে আন্দোলন করছি। আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর থেকে আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যাব।’ আগামী ১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই বিতরণেও তারা অংশ নেবেন না বলে জানান।

নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের উদ্যোগে সারাদেশ থেকে শিক্ষক-কর্মচারীরা এসে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে ২৬ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। শুক্রবারও তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত আছে।

খুলনা তেরখাদা সোনারতরী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাগরিকা মজুমদার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের বেতন নেই, বিনাবেতনে আর কত দিন? শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা কি বিনাবেতনে চাকরি করেন। তাদের ছেলেমেয়েদের যারা পড়াশোনা করান তাদের কি বেতন দিতে হয় না? আমাদের কেন এই নিদারুণ কষ্টে রাখা হয়েছে। আমরা কেন এই রকম মানবেতর জীবন যাপন করব?’

শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের এ আন্দোলনে অংশ নিতে এসেছেন কিশোর কুমার সমাদ্দার। তিনি এসেছেন পিরোজপুর ভান্ডারিয়া শিয়ালকাঠী টেকনিক্যাল কলেজ থেকে। ঢাকাটাইমসকে কিশোর কুমার বলেন, ‘আমরা অন্য চাকরি ছেড়ে দিয়ে কলেজে শিক্ষকতা করতে এলাম, সেখানে বেতন পাই না। আমাদের আর্থ-সামাজিক মর্যাদা নেই। আমাদের অধিকার আদায়ে আগেও আন্দোলন হয়েছে, কিন্তু আশ্বাসের ভিত্তিতে চলে গিয়েছি। এবার আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

কিশোর কুমার বলেন, ‘আমাদের যদি মেরেও ফেলা হয় তবুও আমরা আন্দোলন ছেড়ে যাব না। আমাদের অধিকার আদায় করেই রাজপথ ছাড়ব। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা ছাড়বো না, আমরণ অনশনে যাব। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণের যে কর্মসূচি শুরু হচ্ছে তাতেও আমরা অংশ নেব না।’

নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ বিনয় ভূষণ রায় ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত ও শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাস্তবায়নের জন্য নীতিমালা তৈরির অনুরোধ করেছি। একটা নীতিমালা করতে কয় বছর লাগতে পারে? কিন্তু শিক্ষামন্ত্রণালয় ১০ বছরেও তা করেনি।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment