ময়মনসিংহে গরু চুরির অভিযোগে এক নারীকে থানায় আটকে যৌন নির্যাতন ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে হালুয়াঘাট থানার ওসি ও ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালত পুলিশ সুপারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, মামলা করার পর থেকে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ভুক্তভোগী পরিবার।
নির্যাতিতা গৃহবধূ জানান, গত ১১ আগষ্ট গরু চুরির অভিযোগে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম মিয়া তাকে থানায় ধরে নিয়ে যায়। সেখানে তার কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ারেস উদ্দিন সুমন ও থানার ওসি।
টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে থানায় ৩ দিন আটকে রেখে তার ওপর চালানো হয় অকথ্য নির্যাতন।
‘আমাকে চেয়ারম্যান এবং ওসি মিলে জোর জবরদস্তি করে, মেরে গাড়িতে তোলে। হালুয়াঘাট থানায় তার রুমে নিয়ে ইচ্ছামতো আমাকে পিটিয়েছে। আমার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চায়। তিন দিন তার রুমে রেখে উলঙ্গ করে পিটিয়েছে।’ কাঁদতে কাঁদতে নির্যাতনের কথা বর্ণনা করছিলেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
পরবর্তী সময়ে ওই গৃহবধূকে ৫টি গরু চুরির মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গত ৪ ডিসেম্বর জামিনে মুক্তি পান তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি রাস্তায় রাস্তা পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমি রুমন চেয়ারম্যান আর ওই ওসির বিচার চাই। আর কিছুই চাই না। আমি জায়গায় জায়গায় পালিয়ে থাকি। আমাকে একেবারে মেলে ফেলবে।’
জেলখানা থেকে বের হয়ে গত ২১ ডিসেম্বর আদালতে ওসি কামরুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান ওয়ারেসউদ্দিনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন নির্যাতিতা।
এদিকে, নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘এটা চুরির ঘটনাকে অন্যখাতে প্রবাহিত করার একটা অপচেষ্টা মাত্র। এই ধরনের ঘটনার আদতে কোনো সত্যতা নাই। গুরুসহ তাকে আনা হয়। পরবর্তীতে ওই গরুর মালিকেরা মামলা দেয়।’
এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।
নির্যাতিতা গৃহবধূ কাপড় সেলাই করে করে সংসার চালান। ঘটনার পর থেকে তিন সন্তান নিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তিনি।