সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে জলমহাল নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে

মোঃ হুমায়ূন কবীর ফরীদি, জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি # জগন্নাথপুরে একটি জলমহাল নিয়ে স্থানীয় গ্রামবাসী ও নিরীহ মৎস্যজীবি জেলেদের একটি চক্র হয়রানী করার ঘটনায় স্থানীয় সর্বস্তরের জনতার মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলাধীন জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ও নবীগঞ্জ উপজেলার অর্ন্তগত কুশিয়ারা নদীর অংশ বিবিয়ানা, কাঞ্চা, গুলমা ও মরা কালনী উন্মূক্ত জলমহালটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় নদীর তীরবর্তী বড়ফেছি, দিঘলবাক, কুমারকাদা সহ কয়েকটি গ্রামের দরিদ্র মৎস্যজীবি পরিবারের লোকজন নদী থেকে মাছ আহরণ করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। হঠাৎ করে এ জলমহালের দিকে কু-দৃষ্টি পড়ে একটি মহলের। ওই মহলটি বিভিন্ন কৌশলে গত ২ বছর উক্ত জলমহালটি টুকেন ফ্রি প্রথায় ইজারা নিয়ে আহরন করায় স্থানীয় মৎস্যজীবি জেলেরা বঞ্চিত হন। এ বছর আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উক্ত জলমহালটি আবার উন্মূক্ত করে শান্তিপূর্ণভাবে মাছ আহরন করছেন স্থানীয় বঞ্চিত সেই দরিদ্র ও নিরীহ পরিবারের
মৎস্যজীবি জেলেরা। তাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় বিভিন্ন গ্রামের সর্বস্তরের জনতা। এদিকে, উক্ত জলমহালটি সরকার উন্মূক্ত করায় বেপরোয়া হয়ে উঠে টুকেন চক্র। বর্তমানে বিভিন্নভাবে জলমহাল থেকে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহকারী দরিদ্র জেলে ও তাদের সাথে এলাকার গন্যমান্য লোকদের জড়িয়ে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। এরই অংশ হিসেবে গত ৭ ডিসেম্বর জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট উক্ত জলমহালে মৎস্য আহরন বন্ধ করার আবেদন করেন উপজেলার পাইলগাঁও ইউনিয়নের গোতগাঁও গ্রামের আলী আহমদ নামের টুকেন চক্রের সদস্য। এ আবেদন করেও তিনি ক্ষান্ত হননি। জগন্নাথপুর থানায় তিনি পৃথক আরেকটি অভিযোগ করেন। এতে জেলেদের সাথে এলাকার শিক্ষানুরাগী ও শালিসি ব্যক্তি মুজিবুর রহমান সহ স্থানীয় কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তিদের নাম জড়ানো হয়। এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়। এ ঘটনায় সরজমিনে স্থানীয় দরিদ্র পরিবারের জেলে কুকিল সরকার, নিরঞ্জন সরকার, বারিন্ড সরকার ও অদৈত্য সরকার বলেন, সরকার উক্ত জলমহালটি উন্মূক্ত করায় আমরা গরীব জেলেরা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছি। এতে বাদ সাধে টুকেন চক্র। তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানী করছে। এছাড়া এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি সাবেক ইউপি সদস্য শাহ খায়রুল ইসলাম, সাইদুল মিয়া, নুরুল ইসলাম, কদ্দুছ মিয়া, আবদুস সালাম, আখলাক খান, জুয়েল আহমদ, আবদুল হাফিজ, মাসুক মিয়া, লিটন মিয়া, সেলিম মিয়া সহ বড়ফেছি, দিঘলবাক, কুমারকাদাসহ বিভিন্ন গ্রামের উপস্থিত শতাধিক লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সরকার উক্ত জলমহালটি উন্মূক্ত করে দিয়ে স্থানীয় গরীব জেলেদের বেঁচে থাকার সুযোগ করে দিয়েছে। অথচ একটি টুকেন চক্র তাদেরকে বারবার হয়রানী করছে। সেই সাথে তারা এলাকার গন্যমান্য লোকজনকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করে শান্ত জনপথকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। এছাড়া উক্ত জলমহালের দাবিদার হচ্ছে স্থানীয় আশারকান্দি ও দিঘলবাক ইউনিয়নের জেলেরা। কিন্তু নদী থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুর থেকে আসা পাইলগাঁও ইউনিয়নে গোতগাঁও গ্রামের ব্যক্তি টুকেন চক্রের সদস্য আলী আহমদ গং হয়রানী করা নিয়ে এলাকায় নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া সরজমিনে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অর্ধ শতাধিক লোকজনের সাথে কথা হলেও অভিযোগকারী আলী আহমদকে পাওয়া যায়নি। তবে তার অনুসারি এক ব্যক্তিকে দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যায়।

Seen by Houmayun Kobir Foridi at 2:04pm

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment