৪ দফা দাবীতে শরীয়তপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি পালন

৪ দফা দাবীতে শরীয়তপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি পালন

Brand Bazaar

আসাদ গাজী শরীয়তপুর প্রতিনিধিঃ

পদমর্যাদা ও বেতন স্কেল উন্নীতকরণসহ চার দফা দাবিতে নতুন বছরের প্রথম দিনেই দেশজুড়ে কর্মবিরতি পালন করছেন স্বাস্থ্য সহকারীরা। স্বাস্থ্য সহকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন এর আয়োজনে গত শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে চারদফা দাবি মেনে নিতে অনুরোধ করা হয় অন্যথায় নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে সারা দেশে ইপিআইসহ (টিকাদান) সব কার্যক্রম বন্ধ করে কর্মবিরতি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।

৪ দফা দাবীতে শরীয়তপুরে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি পালন

সারাদেশেরন্যায় শরীয়তপুর জেলার প্রতিটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভবনের সামনে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন এর ব্যানারে স্বাস্থ্য সহকারীদের কর্মবিরতি চলছে। তারা বলছেন আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে বললেও আমরা এর বাস্তবায়ন দেখতে পাইনি। বছরের পর বছর নানা আশার আলো দেখিয়ে আমাদের থামিয়ে রাখা হয়েছে। আমরা কর্মবিরতি পালনে অটল থাকবো, যতক্ষন পর্যন্ত আমাদের চারদফা দাবী মেনে নেওয়া হবেনা অথবা যথাযথ সিদ্ধান্ত গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত। হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের চার দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- স্বাস্থ্য সহকারীদের বর্তমান পদকে দ্বিতীয় শ্রেণির টেকনিক্যাল পোস্টে উন্নীত করা। এতে বর্তমান বেতন স্কেল ১৬ থেকে ১৪-তে উন্নীত করতে হবে। জনসংখ্যা অনুপাতে প্রতি ছয় হাজারে একজন স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগ দিতে হবে। স্বাস্থ্য সহকারীদের মূল বেতনের ৩০ শতাংশ ঝুঁকিভাতা দিতে হবে এবং নিয়োগের ক্ষেত্রে পোষ্য কোটা প্রণয়ন করতে হবে। জেলা সিভিল সার্জন এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি ব্যস্ত থাকায় স্বাস্থ্য সহকারিদেে কর্মবিরতি সম্পর্কে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নি। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে একান্ন জন স্বাস্থ্যকর্মীর উপস্থিতিতে কর্মবিরতি পালনকালে হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের শরীয়তপুর জেলা কমুটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক শাহাদাত হোসেন শিবলু বলেন, ১৯৯৮ সালের ৬ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেতৃ শেখ হাসিনা অাজকের দাবীগুলোর ঘোষনা দিয়েছিলেন কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি, অামরা প্রধানমন্ত্রীর সেই ঘোষনার বাস্তবায় দেখতে চাই কতৃপক্ষের কাছে, অামরা বারবার কতৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়েছি তারা বাস্তবায়ন করেননি, তাই কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অটল অবস্থান নিয়েছি। সংগঠনের জেলা কমিটির সম্মানিত সদস্য মোঃ জাহানুল্লাহ বলেন, আমাদের দাবী মেনে নেওয়ার বিষয়ে উচ্চপর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে এমন জানিয়েছেন নড়িয়া উপজেলা টিএস স্যার, এবং কর্মবিরতিতে থাকা সকলকে কর্মস্থলে ফিরে যেতে নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু আমরা কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশনা এবং আমাদের ৪দফা দাবী আদায়ের আগে কর্মবিরতি চলমান থাকবে। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের (টি এস) ডাঃ মুনীর আহম্মেদ খান বলেন, স্বাস্থ্য সহকারিদের আমি কর্মবিরতি হতে কর্মস্থলে যেতে বলেছি এটা অামার দৃবায়িত্ব কিন্তু স্বাস্থ্য সহকারিগন আমাকে জানান তারা কর্মবিরতিই পালন করবেন। আমি ইতিমধ্যে জেলা সিভিল সার্জন শরীয়তপুর কে অবগত করেছি , স্যারের(জেলা সিভিলসার্জন কর্মকর্তা) নির্দেশেই সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরকে জানিয়েছি যেনো তারা এসে বোঝানোর চেষ্টা করেন। নড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান কে জানিয়েছি তিনি ঢাকায় আছেন কাল ফিরবেন। আপনি এমপি মহোদয় কে জানিয়েছেন কি? তিনি বলেন, তাকে ফোন দিলে রিসিভ করেন না, হয়তো ব্যাস্ত থাকেন, তাই দেইনি, এখন আপনাদের সামনে দিচ্ছি। তিনি একবার ফোন দিয়েছেন কিন্তু এমপি মহোদয় রিসিভ করেন না সেটা আমাদের দেখান। সরকারি চাকুরীজিবিদের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ডাকার বাইরে কি অন্য কোন ব্যবস্থাপনা কতৃপক্ষের নেই? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আসলে সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে হয়তো জনপ্রতিনিধিরাই ভালো বোঝাতে পারবেন তাই বলা অার কি? আর এছাড়াতো আমাদের হাতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের অপশন রয়েছে। জনসাধারন বলছেন, এভাবে টিকাদান কর্মসূচি যদি বন্ধ থাকে তাহলে শিশু স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি নয় কি? হয় এদের দাবি মেনে নেয়া হোক, না হলে এদের কর্মবিরতি বন্ধ করা উচিৎ। যা খুশি তা করতে পারে কিন্তু শিশু স্বাস্থ্য সেবা যেনো বিঘ্নিত না হয় সে দিকটায় খেয়াল রাখা উচিৎ।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment