আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থী নিয়ে যত কৌতূহল – চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি)

আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থী নিয়ে যত কৌতূহল - চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি)

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি) আসনের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা। দলীয় মনোনয়ন পেতে চালাচ্ছেন ব্যাপক তৎপরতা। পোস্টার ও ব্যানার লাগিয়ে ভোটারদের কাছে নিজের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে নবাগতরা নিয়মিত এলাকায় আসছেন। প্রতি শুক্র ও শনিবার তাদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এদিকে, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব-বিরোধও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে দল দুটি থেকে কে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন, তা নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও রয়েছে কৌতূহল।

 আওয়ামী লীগ-বিএনপির প্রার্থী নিয়ে যত কৌতূহল -  চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি)

ভোটের হিসাবে এ আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অবস্থান প্রায় কাছাকাছি। বরাবরের মতো এবারও নির্বাচনী লড়াই সীমাবদ্ধ থাকবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি প্রার্থীর মধ্যে।

এ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম ১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। এলাকায় তার সুনাম রয়েছে। ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজও চলছে তার এলাকায়। আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, গত ২০ বছরের প্রতিটি নির্বাচনেই তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন। নির্বাচিত হয়ে মানুষের সঙ্গে থেকেছেন। এলাকার উন্নয়ন করেছেন। এসব কারণে মানুষ তাকে পছন্দ ও গ্রহণযোগ্য মনে করে।

মনোনয়নপ্রত্যাশী যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ও নারী আসনের এমপি অ্যাডভোকেট নুরজাহান বেগম মুক্তা বলেন, ১৯৯৬ সাল থেকেই তিনি দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের মামলা চালিয়েছেন। এসব বিবেচনায় নিলে তিনি আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাবেন বলে মনে করছেন। প্রয়াত এমপি আবু জাফর মঈন উদ্দিনের মেয়ে নুরজাহান বেগম মুক্তা উঠান বৈঠক, সভা-সমাবেশ করছেন।

জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন জানান, তার বাবা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। তিনি নিজেও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও তার সঙ্গে রয়েছেন। এ কারণে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির সহসম্পাদক, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য প্রকৌশলী সফিকুর রহমান বলেন, তিনি গত কয়েকটি নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তবে হাল ছাড়েননি। আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যাপক ফজলুল হক, হাজীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুর রশিদ মজুমদার, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. কাজী মোস্তফা সরোয়ার এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালাউদ্দিনও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন।

এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী দলের জেলা সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী মমিনুল হক। এর আগে একবার নির্বাচন করলেও তিনি জয় পাননি। নির্বাচনে কারচুপি করে তার বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এ ছাড়া সাবেক এমপি এম এ মতিনও দলের মনোনয়ন চাইবেন।

প্রকৌশলী মমিনুল হক জানান, তিনি সব সময়ই দলের নেতাকর্মীদের পাশে থেকেছেন। তা ছাড়া তিনি নবম সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করায় আগামী নির্বাচনেও দলীয় প্রার্থিতার বেলায় তার প্রাধান্য থাকবে। দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীও তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চাইছেন। বিএনপি নির্বাচনে গেলে এ আসনে তার বিকল্প কেউ নেই। আবার উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের জন্য এ আসনেও বিএনপির বিকল্প নেই।

প্রকৌশলী মমিনুল হক জানান, এম এ মতিনের অনেক বয়স হয়ে গেছে। তার জনসমর্থনও তেমন একটা নেই। তিনি একাধিকবার নির্বাচিতও হয়েছেন। এখন তার উচিত অবসরে যাওয়া। তাকে নিয়ে ভাবনার কিছু নেই বলেও জানান প্রকৌশলী মমিনুল হক।

তবে স্থানীয় বিএনপির একটি অংশ এরই মধ্যে এম এ মতিনের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারকাজ শুরু করেছে। তা ছাড়া তিনি নিজেও আগামী নির্বাচনে দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানান। ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ও ২০০১ সালে নির্বাচিত এই এমপি বলেন, তিনি দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কাছে আবারও মনোনয়ন চাইবেন। আর নির্বাচন হলে তিনি অবশ্যই মনোনয়ন পাবেন। তার দাবি, তার কোনো বদনাম নেই।

তাঁতী দলের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু বলেন, তিনি একাধিকবার দলের মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তবে আগামী নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা করছেন।

এ ছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সৌদি আরবের রিয়াদ শাখার সভাপতি কামরুজ্জামান কাজল, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক খোরশেদ আলম খুশু ও জেলা নেতা মুক্তিযোদ্ধা হারুনুর রশিদ মুন্সী, খেলাফত আন্দোলনের মাওলানা মনির হুসাইন ও ইসলামিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান আল্লামা সৈয়দ বাহাদুর শাহের নাম শোনা যাচ্ছে।

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment